এই ভাবে কাটা হয়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র
নদীবাঁধ মেরামত করতে গিয়ে নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। সেচ দফতরের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ হওড়ার উদয়নারায়ণপুরে। নির্বিচারে গাছ কাটার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেচ দফতর। গ্রামবাসীরাই অনেক গাছ কেটে নিয়েছেন বলে সেচ দফতর দাবি করেছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
বনসৃজন প্রকল্পে বছর কুড়ি আগে খিলা পঞ্চায়েতে পালিয়াড়া গ্রামের কাছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পালিয়াড়া গ্রামের কাছে প্রায় ৩ কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ মেরামত করছে সেচ দফতর। বাঁধের গোড়ায় ইটের গার্ডওয়াল দেওয়া হয়েছে। তার উপরে মাটি ফেলা হচ্ছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধের অংশ মেরামত করা হচ্ছে। সেই কাজটি করতে গিয়ে গাছ কাটা হচ্ছে। কাজ শুরু হয় মাস দুই আগে। তখন থেকেই গাছ কাটা শুরু হয় বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাঁধের দু’দিকে কয়েকশো গাছ কাটা হয়েছে। বাকি যে গাছগুলি আছে সেগুলির ডালপালা জেসিবি দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। অনেক গাছের ছাল চেঁছে ফেলা হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ছাল চেঁছে ফেলায় গাছটি কয়েকদিন পরেই মারা যাবে। তখন গাছটিকে মৃত দেখিয়ে বিক্রি করা করে দেওয়া হবে।
সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, কিছু গাছ না কেটে উপায় ছিল না। বাঁধের গায়ে গাছ থাকার জন্য কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছিল। এলাকার প্রবীণ মানুষেরা অবশ্য জানিয়েছেন, বাঁধের মাথায় যে গাছগুলি আছে সেগুলি সমস্যা তৈরি করতে পারে। কিন্তু ১০-১৫ ফুট নীচে বাঁধের গায়ে যে সব গাছ থাকে সেগুলির জন্য সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ, ওই গাছগুলি বাঁধকে শক্ত করে। সেই বাঁধের গায়ের গাছগুলিও কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ।
গাছ কাটার ক্ষেত্রে বন দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি? হাওড়া জেলা বনাধিকারিক নীলাঞ্জিতা গুহ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এই ধরনের কোনও প্রস্তাব সেচ দফতরের কাছ থেকে এসেছিল কি না খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ যদিও সেচ দফতর সূত্রের খবর, কোনও অনুমতি না নিয়েই গাছ কাটা হয়েছে। একই সঙ্গে সরাসরি গাছ কাটার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন সেচ দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, বাঁধের কথা কথা ভেবে গ্রামবাসীরাই গাছ কাটার কাজে এগিয়ে এসেছেন।
গ্রামবাসীদের পাল্টা দাবি, সেচ দফতরের আড়ালে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বই গাছ কেটে বিক্রি করছেন। তাঁদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছেন না। যাঁর বিরুদ্ধে মূলত অভিযোগ, সেই উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বিবেকানন্দ কর্মকার বলেন, ‘‘গার্ডওয়াল দেওয়ার জন্য কিছু গাছ কাটা হয়েছে। তবে গাছ কে কেটেছে তা বলতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy