রাজহাটির অঙ্কুর গোষ্ঠীর মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র
বন্যা প্রবণ খানাকুলের রাজহাটিতে দুর্গাপুজো অনেক সময় অনিশ্চিত হয়ে হঠে। তাই তাদের বছরের যাবতীয় আড়ম্বর জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করেই হয়ে থাকে। সেই আড়ম্বরের ধারা আজও বজায় রয়েছে।
কলেবরে এলাকায় ক্রমশ বাড়ছে পুজোর সংখ্যাও। দুর্গাপুজোকে টপকে জগদ্ধাত্রী পুজোর বাজেটের বহরও বাড়ছে। প্রায় দু’কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যেই ১২টি ক্লাবের পুজো হচ্ছে। এ ছাড়াও আছে একটি প্রাচীন পুজো। সব মিলিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজো এই গ্রামের বছরের মূল উৎসবে পরিণত হয়েছে। রাজহাটিতে মণ্ডপ সজ্জা এবং আলোর কারুকার্য দেখার জন্য খানাকুল থানা এলাকার মানুষ তো বটেই, আরামবাগ, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, হাওড়ার আমতা, জয়পুর থেকেও বহু মানুষ আসেন।
রাজহাটি গ্রামের প্রায় ৩০০ বছরের পারিয়াল বাড়ির পুজো এবং ৫৩ বছরে পা দেওয়া আমরা সবাই ক্লাবের পুজো যেমন রয়েছে, তেমনি গত ১৫ বছরে যে সব পুজোর সৃষ্টি হয়েছে তা হল— রয়াল বুলেটগোষ্ঠী, দিশারি গোষ্ঠী, নান্দনিক গোষ্ঠী, অঙ্কুর গোষ্ঠী, কল্পতরু গোষ্ঠী, সৃষ্টি গোষ্ঠী, উদয়ন গোষ্ঠী, অভিনন্দন গোষ্ঠী, দিগন্ত গোষ্ঠী (২০১৪ সালে শুরু) এবং গত বছর শুরু হওয়া করুণাময়ী গোষ্ঠী ও পথ চলার সাথী গোষ্ঠীর পুজো। পুজোগুলির বাজেট ৫ লক্ষ টাকা থেকে ৭ লক্ষ টাকার মধ্যে।
প্রতিটি পুজো কমিটি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আয়োজনে খামতি রাখেনি। কেউ করেছে যুদ্ধ জাহাজ, হোমিওপ্যাথি ওষুধের শিশি দিয়ে মণ্ডপ। কেউ বা করেছে স্বর্ণমন্দির, বাঘের হাঁ করা মণ্ডপ। সঙ্গে রয়েছে চটকদার আলোকসজ্জা। এ ছাড়াও রয়েছে সচেতনতামূলক থিম।
রাজহাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজোর এই প্রসার কেন? পুজো কমিটিগুলির পক্ষে দিশারির সম্পাদক তথা রামনগর অবিনাশ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত আঢ্য বলেন, ‘‘বন্যাপ্রবণ খানাকুলে দুর্গাপুজো উপভোগ সম্ভব হয় না। অধিকাংশ জায়গায় শুধুমাত্র ঘটপুজো করে দুর্গাপুজো সারতে হয়। তাই জগদ্ধাত্রী পুজোকে বছরের সেরা উৎসব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছি আমরা। সেটাই ক্রমশ বাড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy