Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

লকডাউন নামেই, মানুষ আগলহীন

উত্তরপাড়ায় করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরাল হচ্ছে। শনিবার হিন্দমোটরে করোনা আক্রান্ত এক মহিলা মারা গিয়েছেন।

গণ্ডি টপকেই যাতায়াত।—ছবি পিটিআই।

গণ্ডি টপকেই যাতায়াত।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০২:১৭
Share: Save:

আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, তত কমছে সচেতনতা! নতুন করে ঘোষিত কোনও কোনও গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় মানুষের আনাগোনা দেখলে এমন মনে হতে বাধ্য। ফলত, লকডাউনের উদ্দেশ্য কতটা ফলপ্রসূ হচ্ছে, সেই প্রশ্ন রয়ে গেল রবিবারেও।

উত্তরপাড়ায় করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরাল হচ্ছে। শনিবার হিন্দমোটরে করোনা আক্রান্ত এক মহিলা মারা গিয়েছেন। তা সত্বেও শহরের এক শ্রেণির মানুষের চেতনা ফেরেনি বলে অভিযোগ। উত্তরপাড়া-কোতরং পুর-এলাকায় গণ্ডিবদ্ধ জায়গা চারটি। রবিবার সকালে এই সব জায়গার খণ্ডচিত্র দেখলে তা অবশ্য বোঝার উপায়

ছিল না। অনেকেই যেমন খুশি ভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন। তবে লকডাউনের এই দফায় পুলিশ জনতাকে বাড়ি ঢোকাতে বিশেষ জোরাজুরির রাস্তায় হাঁটছে না। ফলে চন্দননগর কমিশনারেট থেকে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের আওতাধীন এলাকায় লকডাউনের জায়গাগুলিতে কার্যত অসচেতনতার একই ছবি দেখা গিয়েছে রবিবার সারাদিন।

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড গণ্ডিবদ্ধ এলাকার অন্তর্গত। অথচ রবিবারেও গঙ্গা লাগোয়া এই চত্বরে নিয়মভাঙার ছবি চোখে পড়েছে। প্রশাসন এবং পুরসভার তরফে মাইক প্রচার সত্বেও এক শ্রেণির মানুষের অবাধ আনাগোনা ছিল এই এলাকা জুড়ে। অভিযোগ, পুলিশ-প্রশাসন এখানে প্রচার করেই দায় সারছেন। নিয়ম ভেঙে যাঁরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। পার্শ্ববর্তী উর্দিবাজার এলাকার এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করতে পুরসভার কর্মীরা হাজির হচ্ছেন। তা সত্বেও কেউ কেউ বাজার করতে বেরিয়ে পড়ছেন। এই সমস্ত অবিবেচক লোকের বিরুদ্ধে প্রশাসন যদি কড়া ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে বিপদ বাড়বে। শহর জুড়ে সংক্রমণ ছড়াবে।’’

বৈদ্যবাটী পুরসভার যে এলাকা গণ্ডিবদ্ধ এলাকার তালিকায় ঢুকেছে, সেখানকার অনেক বাসিন্দাই নিম্নবিত্ত। ছোটখাট কাজ করে তাঁরা সংসার চালান। শনিবারের মতোই এ দিনও পেটের তাগিদে তাঁরা কাজে বেরিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। গত দু’দিন এই এলাকায় আনাজ-মাছের

ভ্যান না পৌঁছনোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাসিন্দারা। এ দিন সকালে রামমোহন সরণিতে ভ্যানে করে কাঁচা আনাজ বিক্রি হয়েছে সেখানে। রামমোহন সরণির বাসিন্দা ত্রিদীপ সরকার বলেন, ‘‘আনাজ পৌঁছনোয় একটা সমস্যা মিটেছে।’’ পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এপি আঢ্য লেনের গণ্ডিবদ্ধ জায়গার বাসিন্দাদের অবশ্য থলে হাতে বাজারে যেতে দেখা গিয়েছে।

প্রশাসন সূত্রের খবর, জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাটে একই বাড়ির তিন জনের করোনা ধরা পড়ায় প্রশাসনের তরফে এ দিন বাড়িটি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। হুগলি (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মানুষ সহযোগিতা করছেন না। শুধু পুলিশ সর্তক হওয়ার কথা বলে কী করবে? রাজবলহাটে সংশ্লিষ্ট

বাড়িটি ঘেরা হয়েছে। পুরো পাড়া ঘিরলে মানুষ বিরক্ত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে পারতেন। যেমনটা হয়েছে সিঙ্গুরের মির্জাপুর-বাঁকিপুর পঞ্চায়েতের জগৎপুরে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Containment Zone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE