Advertisement
E-Paper

টাকা না-দেওয়ায় হামলা, আতঙ্ক

মাখলার ওই নির্মীয়মাণ প্রকল্পটিতে দুষ্কৃতীরা ঢুকেছিল দামি সাদা গাড়ি চড়ে। প্রকল্পের এক কর্তা জানান, দুষ্কৃতীরা মোটা টাকা চায়। রাজি না-হওয়ায় মারধর করে। প্রকল্পে ভাঙচুর চালায়। তখন পুলিশের একটি মোটরবাইক ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:০৩

তোলাবাজি রুখতে বারবার কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের নানা প্রান্তে তোলাবাজদের উৎপাত বন্ধ হয়নি। তোলাবাজদের দাপটে কাঁপছেন উত্তরপাড়ার প্রোমোটাররা।

উত্তরপাড়া শহরে নামে-বেনামে প্রোমোটারদের থেকে তোলাবাজির অভিযোগ নতুন নয়। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা চলে কিছুটা আড়ালে। মোটা টাকা চেয়ে ফোন যান প্রোমোটারদের কাছে। তার পর দরাদরি। কিন্তু সম্প্রতি তোলা না-দেওয়ায় এক প্রোমোটারের নির্মীয়মাণ প্রকল্পে ঢুকে তাঁকে মারধর এবং ভাঙচুর চালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। তার পর থেকেই হামলার আশঙ্কায় তটস্থ শহরের বহু প্রোমোটার। বিষয়টি পুলিশ জানে। কিন্তু এখনও ধরা পড়েনি কেউ।

মাখলার ওই নির্মীয়মাণ প্রকল্পটিতে দুষ্কৃতীরা ঢুকেছিল দামি সাদা গাড়ি চড়ে। প্রকল্পের এক কর্তা জানান, দুষ্কৃতীরা মোটা টাকা চায়। রাজি না-হওয়ায় মারধর করে। প্রকল্পে ভাঙচুর চালায়। তখন পুলিশের একটি মোটরবাইক ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি জানালে পুলিশের বাইকটি প্রকল্পের কাছে চলে আসে। দুষ্কৃতীরা বুঝতে পেরে গাড়ির গতি বাড়িয়ে পুলিশের বাইকটিকে একপাশে চেপে দিয়ে পালায়।

কী করছে পুলিশ?

পুলিশ জানায়, তদন্ত চলছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘মাখলার ওই ঘটনায় দুষ্কৃতীরা গাড়িতে ট্রাকের নম্বর লাগিয়ে এসেছিল। এলাকার তোলাবাজ বলে পরিচিত আক্রমের দলবল ওই ঘটনার যুক্ত বলে মনে হয়। তবে টাকা চাওয়ার ঘটনা হলে পুলিশকে জানাতে হবে। চেপে গেলে উৎপাত বাড়বে।’’

শহরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এলাকার কিছু প্রোমোটারের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের একাংশের বোঝাপড়া রয়েছে। প্রতি মাসেই হুজ্জুতি না-করার শর্তে দুষ্কৃতীদের টাকা দেন ওই প্রোমোটাররা। তার ফলেই শহরে তোলাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এক পুলিশকর্তারও দাবি, ‘‘প্রোমোটারদের একাংশই টাকা দিয়ে তোলাবাজদের মাথায় তুলেছেন।’’

কী বলছেন প্রোমোটাররা?

কয়েক জন প্রোমোটার দুষ্কৃতীদের টাকা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেননি। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘দিনকাল ভাল নয়। প্রশাসনকে বলে কাজের কাজ সে ভাবে হয় না। প্রাণের মায়া আছে তো। বিনা বাধায় ব্যবসার জন্যই টাকা দিই।’’ কিন্তু যে সব প্রোমোটার টাকা দেন না, দুষ্কৃতীরা বেছে বেছে তাঁদের উপরেই হামলা করছে বলে অভিযোগ। মাখলার ঘটনার আগে মধ্য ভদ্রকালীতে হুমকি শুনতে হয়েছে এক প্রোমোটারকে। ভয়ে প্রোমোটার পালিয়ে যান। কয়েকজন প্রোমোটারের আবার ক্ষোভ, ‘‘একটি নির্দিষ্ট দুষ্কৃতী-দলকে টাকা দিয়ে রেহাই পেলে তা-ও চলত। কিন্তু উত্তরপাড়া, কোতরং, কোন্নগরে রাজনীতির ছাতার আশ্রয়ে থাকা তোলাবাজদের সংখ্যা প্রতিদিন বা়ড়ছে। দিদি শাসকদলের কাউন্সিলর হওয়ায় এক দুষ্কৃতী এলাকায় দাপাচ্ছে। কত জনকে টাকা দেব? এ ভাবে চললে ব্যবসা গোটাতে হবে।’’

উত্তরপাড়ার কয়েকজন প্রোমোটারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তাঁদের কাছে সশস্ত্র যুবকেরা এসে হাওড়া-হুগলি শিল্পাঞ্চলের ‘ত্রাস’ রমেশ মাহাতোর লোক পরিচয় দিয়ে টাকা চাইছে। কিন্তু ওই প্রোমোটাররা পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারছেন, ওই যুবকদের সঙ্গে রমেশের কোনও সম্পর্ক নেই। রমেশের নাম ভাঙিয়ে তোলাবাজি চলছে। এক প্রোমোটারের প্রশ্ন, ‘‘কে আসল, কে নকল বুঝব কী করে?’’

তাই আতঙ্কেই দিন কাটছে এ শহরের প্রোমোটারদের।

Assault Miscreants
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy