Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Baidyabati

যুবকের মৃত্যুতে স্ত্রীর বাপের বাড়িতে ভাঙচুর

স্বামীর মৃত্যুতে শনিবার সকালে যুবতীর বাপের বাড়িতে ভাঙচুর চালাল জনতা। রাস্তা অবরোধও হল।

মৃত সুব্রত রাহা। —নিজস্ব চিত্র

মৃত সুব্রত রাহা। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বৈদ্যবাটী শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ০১:১৪
Share: Save:

সাংসারিক অশান্তির জেরে কয়েক মাস ধরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে থাকছিলেন বৈদ্যবাটীর এক যুবতী। স্বামীর মৃত্যুতে শনিবার সকালে যুবতীর বাপের বাড়িতে ভাঙচুর চালাল জনতা। রাস্তা অবরোধও হল। অভিযোগ উঠল, স্ত্রীর অত্যাচারে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে, রোগে ভুগে মারা গিয়েছেন সুব্রত রাহা (২৪) নামে ওই যুবক। তাঁর বাড়ি বৈদ্যবাটীর আদর্শনগরে।

তবে, এ নিয়ে কোনও পক্ষই থানায় অভিযোগ জানায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। যুবতীর বা তাঁর পরিবারের তরফে এ দিনের ঘটনা বা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। মৃতের মা সুস্মিতার অভিযোগ, ‘‘কিছু হলেই বৌমা ছেলেকে মারধর করত। গলা টিপে ধরত। কিছু চাইলে ছেলে যদি বলত পরে এনে দেবে, তা হলে সহ্য করতে পারত না। ওর জন্যই ছেলেটা চলে গেল। ওর শাস্তি চাই।’’

সুব্রতর সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ওই যুবতীর বিয়ে হয়। দীর্ঘদিন তাঁদের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। সুব্রতর পরিবারের অভিযোগ, পান থেকে চুন খসলেই যুবতী স্বামীর উপরে অত্যাচার করতেন। গায়ে হাত তুলতেন। কয়েক মাস আগে তিনি স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। যদিও ওই অভিযোগ মিথ্যা বলে
দাবি সুব্রতর মায়ের। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিয়ের আগে মেয়ের বাড়ির লোক আমার ছেলেকে কম হুমকি দেয়নি।’’

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানোর পর থেকে ওই যুবতী বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। এ সবের জেরে সুব্রত মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এর মধ্যেই তাঁর যকৃতের অসুখ ধরা পড়ে। তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে তিনি মারা যান।

সুব্রতর মৃত্যুর খবর চাউর হতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ দেহ বাড়িতে পৌঁছয়। এর পরেই এলাকার কয়েকশো মানুষ দেহ নিয়ে মেয়েটির বাপের বাড়ির সামনে যান। ৮টা নাগাদ গাছের গুঁড়ি, বাঁশ ফেলে বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোড অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অনেক মহিলা ছিলেন। অভিযোগ, এক দল লোক মেয়েটির বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ইট ছুড়ে জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে, বিক্ষোভ থামেনি। পরে চন্দননগর কমিশনারেটের এসিপি (২) বিজয়কৃষ্ণ মণ্ডল এবং শ্রীরামপুর থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস আরও বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে এক মহিলা বলেন, ‘‘ভালবেসে বিয়ে করার পরে মেয়েটা এত অত্যাচার করেছে, বলার নয়। ছেলেটার জীবন নষ্ট করেছে। ওর উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baidyabati Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE