Advertisement
E-Paper

বাঁশ দিচ্ছে না পুলিশ, ক্ষুব্ধ ডেকরেটররা 

গত মঙ্গলবার পান্ডুয়ার তেলিপাড়া মোড়ে বিজেপি-র একটি সভার জন্য ওঁরা মঞ্চ বেঁধে দিয়েছিলেন।

সুশান্ত সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২৮

ওঁরা কারও বশংবদ নয়। নেহাতই বাঁশ-ত্রিপলের কারবারি। কিন্তু উৎসবের মরসুমে ওঁরাই ‘বাঁশ’ খেয়ে গিয়েছেন!

গত মঙ্গলবার পান্ডুয়ার তেলিপাড়া মোড়ে বিজেপি-র একটি সভার জন্য ওঁরা মঞ্চ বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিনা অনুমতিতে সভার কথা বলে সেই যে পুলিশ ওঁদের বাঁশ-ত্রিপল-মাইক-চোঙ নিয়ে গেল— এখনও ফেরত আসেনি। প্রতিবাদে পান্ডুয়ার সব ডেকরেটর এবং মাইক ব্যবসায়ীরা আর কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ না-করার কথা ভাবছেন।

মাল ফেরত না-পাওয়ার জন্য পুলিশের উপরে ওঁরা ক্ষুব্ধ। তাঁর চেয়েও বেশি ক্ষুব্ধ রাজনৈতিক দলগুলির উপরে। কারণ, সে দিন সভা শেষে মঞ্চ খুলতে যাওয়ার সময়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হাতে তাঁরা নিগৃহীত হন বলে অভিযোগ। সেই কারণে নিরাপত্তার অভাবের কথা বলে শুক্রবার থানার দ্বারস্থ হয় ‘পান্ডুয়া থানা ডেকরেটর্স সমন্বয় সমিতি’ এবং মাইক ব্যবসায়ীরা।

ওই সমিতির সম্পাদক শান্তনু মোদকের ক্ষোভ, কোনও রাজনৈতিক দলের সভার মঞ্চ তৈরির জন্য এতদিন তাঁদের কখনও পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়নি। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মুখের কথায় কাজ করে এসেছেন তাঁরা। এই প্রথম বাধা এল। শান্তনুবাবুর অভিযোগ, ‘‘শাসকদলের নেতাদের কথায় পুলিশ মাইক ও ডেকরেটরের জিনিসপত্র আটক করে। এখনও ফেরত মেলেনি। সামনে কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো রয়েছে। কী ভাবে হবে? যতদিন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান না হবে, ততদিন আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ না করার কথা ভাবছি।’’

কী বলছে পুলিশ?

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনুমতি না-থাকায় ওই সভা বন্ধের জন্য পুলিশ গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ডেকরেটর বা মাইক ব্যবসায়ীদের কেউ ছিলেন না। আটক জিনিসপত্রগুলি পান্ডুয়া থানাতেই আছে। ওঁরা এলেই ফেরত পেয়ে যাবেন।’’

বিরোধী দলগুলি ছি-ছি করছে। ডেকরেটরদের পক্ষেই তারা মুখ খুলেছে। এলাকার সিপিএম বিধায়ক শেখ আমজাদ হোসেনের কথায়, ‘‘ওদের কী দোষ? শাসকদলের নির্দেশে পুলিশ গরিব মানুষগুলোর মালপত্র আটক করেছে। এখনই ফেরত দেওয়া উচিত।’’ পাণ্ডুয়া মণ্ডলের বিজেপির অন্যতম সভাপতি দেবপ্রসাদ চক্রবর্তীর আশ্বাস, ‘‘থানায় আটক জিনিসপত্র উদ্ধার করে ডেকরেটরদের ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ আর শাসকদলের ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম বলছেন, ‘‘সে দিন তো পুলিশ আমিই ডেকেছিলাম। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা তো সব সময় পুলিশের অনুমতি নিয়ে সভা করি। ওরা কেন যে নেয় না!’’

পান্ডুয়াতে ৬৩টি ডেকরেটর সংস্থা রয়েছে। সব সংস্থাই সব ধরনের অনুষ্ঠানের কাজ করে। গত মঙ্গলবারের ঘটনার পরে ওই সব সংস্থার সদস্যেরা আলোচনায় বসেন। সমস্যা না-মিটলে পুজোর ছুটির পরে তাঁরা বিডিও-র দ্বারস্থ হবেন বলেও জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তেলিপাড়ার ওই সভায় এসেছিলেন বিজেপি নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের জেলা সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য। সভাশেষে বিজেপি নেতাকর্মীরা চলে যাওয়ার পরেই কিছু তৃণমূল কর্মী ডেকরেটর-মালিক বাসুদেব ঘোষকে ধাক্কাধাক্কি করে এবং তাঁর কর্মীদের ও মাইক ব্যবসায়ীকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরেই পুলিশ আসে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।

কারও মুখের কথাতে যে তাঁরা আর বাঁশ-ত্রিপল-চোঙ দেবেন না, তা এক রকম ঠিকই করে ফেলেছেন পান্ডুয়ার ডেকরেটররা।

Police Decorators
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy