Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মানসিক ভারসাম্যহীনের কামড়ে পর্যুদস্ত পুলিশ

পুলিশ জানায়, পকেটে থাকা আধারকার্ড থেকে জানা গিয়েছে, বিহারের সমস্তিপুরে বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম ললিতকুমার চৌধুরী। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ বালি দমকল কেন্দ্রের সামনে জিটি রোডে ঘোরাঘুরি করার সময়ে এক যুবকের কাছে চাকরির খোঁজ করেন ললিত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

রাস্তায় উদ্‌ভ্রান্তের মতো দৌড়চ্ছেন মাঝবয়সি এক ব্যক্তি। হাতের সামনে কাউকে পেলেই কামড়ে কিংবা আঁচড়ে দিচ্ছেন। কখনও আবার ইট তুলে ছুড়ে দিচ্ছেন চলন্ত গাড়ির দিকে!

শনিবার সকালে বালি এলাকায় এমনই এক মানসিক ভারসাম্যহীনকে সামলাতে গিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে হিমশিম খেলেন পুলিশ থেকে স্থানীয় লোকজন। ধস্তাধস্তিতে মাথাও ফেটে যায় ওই ব্যক্তির। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, এক রোগীকে কামড়ে দেন তিনি। কেড়ে নেন পুলিশের লাঠি, ওয়াকিটকি। পুলিশের দাবি, অনেক টালবাহানার পরে রাতে তাঁকে পাভলভে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, পকেটে থাকা আধারকার্ড থেকে জানা গিয়েছে, বিহারের সমস্তিপুরে বাসিন্দা ওই ব্যক্তির নাম ললিতকুমার চৌধুরী। এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ বালি দমকল কেন্দ্রের সামনে জিটি রোডে ঘোরাঘুরি করার সময়ে এক যুবকের কাছে চাকরির খোঁজ করেন ললিত। অভিযোগ, আচমকাই ওই যুবককে কামড়ে দিয়ে তিনি দৌড়তে শুরু করেন। নিজের মাথা দেওয়ালে ঠুকতে থাকেন তিনি। খবর পেয়ে আসে বালি থানার টহলদারি গাড়ি।

জিটি রোড দিয়ে এক ব্যক্তি ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছেন, পিছনে দৌড়চ্ছেন স্থানীয় লোকজন এবং পুলিশ—এমন দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে যান পথচারীরা। ইতিমধ্যেই আরও চার জনকে আঁচড়ে, কামড়ে জখম করেন ওই ব্যক্তি। শেষমেশ বাদামতলার কাছে স্থানীয়েরা ও পুলিশকর্মীরা ললিতকে জাপটে ধরতেই শুরু হয় ধস্তাধস্তি। পুলিশ জানায়, তখনই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে ললিতের মাথা ফেটে যায়। কোনও মতে তাঁকে থানায় আনা হলে সেখানেও দুই পুলিশ কর্মী তাঁর কামড়ে জখম হন। আঁচড়ে দেওয়ায় জখম হয়েছেন আরও কয়েক জন।

পুলিশ সূত্রের খবর, বালি থানার দুই অফিসার অনিমেষ দাস ও সুজল দে-সহ অন্য পুলিশকর্মীরা ললিতকে গাড়িতে নিয়ে আসেন হাওড়া জেলা হাসপাতালে। সেখানকার জরুরি বিভাগে আসা অরুণ সাউ নামে এক রোগীর পাঁজরের কাছে কামড়ে মাংস তুলে দেন ললিত। শেষে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে গাড়িতে আটকে রাখা হয় তাঁকে। সেখানেও পুলিশের ওয়াকিটকি কেড়ে ললিত বলতে থাকেন, ‘হ্যালো, চেঙ্গিজ় ভাই...’।

এক রোগীর পরিজন শাকিলা বেগম বলেন, ‘‘কেউ গাড়ির সামনে গেলেই জানলা দিয়ে তাঁকে টেনে ধরছিল। আর কামড়ে দেবে বলছিল।’’ এর পরে গাড়িতেই ললিতের চিকিৎসা শুরু হয়। পুলিশ জানায়, হাওড়া আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে ললিতকে পাভলভে ভর্তি করে চিকিৎসার নির্দেশ দেন বিচারক। সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রিজ়ন ভ্যানে তুলতেই ধুন্ধুমার বাধে। কনস্টেবলের থেকে লাঠি ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে পেটাতে শুরু করেন ললিত। বিশাল পুলিশ বহিনী লাঠি উঁচিয়ে কোনও মতে তাঁকে শান্ত করে মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bally Police Pavlov Nursinghome
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE