Advertisement
E-Paper

চিকিৎসার নামে বুজরুকি, বন্ধ করল প্রশাসন

সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটির একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চৌহদ্দিতে গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে প্রতি শনিবার এ ভাবেই চলছিল ‘চিকিৎসা’। শনিবার তা জানতে পেরে বন্ধ করে প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০১:২২
সরেজমিনে: উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

সরেজমিনে: উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

সঙ্গে করে গ্রামবাসীরা এনেছিলেন তেল-জল। তাতে মন্ত্র পড়ে দিচ্ছিলেন দম্পতি। ‘মন্ত্রঃপূত’ সেই তেল-জল ব্যবহার করলে নাকি ম্যাজিকের মতো উধাও হয়ে যাবে যে কোনও জটিল রোগ!

সিঙ্গুর ব্লকের বিঘাটির একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চৌহদ্দিতে গত পাঁচ সপ্তাহ ধরে প্রতি শনিবার এ ভাবেই চলছিল ‘চিকিৎসা’। শনিবার তা জানতে পেরে বন্ধ করে প্রশাসন। চন্দননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চৌহদ্দিতে বিনা অনুমতিতে ওই জিনিস চলায় তা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিডিও (সিঙ্গুর) সুমন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ তো পুরোপুরি কুসংস্কার। এমনটা যাতে আর না হয়, সেটা দেখা হবে।’’ এ দিন ঘটনাস্থলে যায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও। মঞ্চের রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য চন্দন দেবনাথ বলেন, ‘‘মানুষের বিশ্বাসকে হাতিয়ার করে ওখানে পুরোপুরি বুজরুকি চলছিল। স্থানীয় মানুষজনকে বিষয়টি হাতে-কলমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

একটি ট্রাস্টির উদ্যোগে সুসীম কোটাল ও তাঁর স্ত্রী রিয়া ওই ‘চিকিৎসা’ চালাচ্ছিলেন। ট্রাস্টির সম্পাদক অসীমকুমার দাসের দাবি, ‘‘বহু জায়গায় এ ভাবে মানুষের রোগ সেরে যাচ্ছে। মানুষের উপকার হচ্ছে। তাই এখানেও সেটাই করা হচ্ছে।’’

এমনিতে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো বেহাল ব‌লে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। দীর্ঘদিন চিকিৎসক ছিলেন না। একমাস ধরে সপ্তাহে দু’দিন এক জন চিকিৎসক আসছেন। এ দিন সকালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক মানুষের ভিড়। অধিকাংশই মহিলা। অনেকে জানালেন, বিশ্বাসের ভরেই তাঁরা এসেছেন। কারও বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি চাই, কেউ এসেছেন সন্তানের আকাঙ্ক্ষায়।

রিয়া এবং সুসীম হরিপালে ভাড়া থাকেন। সুসীম আগে মুম্বইতে গয়নার কাজ করতেন। সেখানেই খ্রিস্টান ধর্ম নেন তাঁদের দাবি। পরে হুগলিতে ফিরে আসেন। গত দেড় বছর ধরে হুগলির বিভিন্ন ব্লক ঘুরে এই ‘কাজ’ করছিলেন তাঁরা। রিয়ার দাবি, ‘‘আমার এবং স্বামীর সঙ্গে ঈশ্বরের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এখানে প্রার্থনা সভা হয়। ঈশ্বরের কৃপায় আমাদের পরিবারের কারও রোগ হয়নি। তাই ওই ভাবে রাজ্যের মানুষের উপকার করতে চাই আমরা।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত একটি ভব‌নকে সারিয়ে সেখানেই ওই ‘চিকিৎসা’ চলছিল। খবর পেয়ে বিএমওএইচ (সিঙ্গুর) রজতকুমার পাল স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠান। ভদ্রেশ্বর থানার আইসি নন্দন পানিগ্রাহী সরেজমিনে বিষয়টি দেখতে যান। হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী জানান, ওই কাণ্ড স্বাস্থ্য দফতরের কোনও ভবনে হচ্ছিল না। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর যাতে না হয়, সে ব্যবস্থাও
নেওয়া হচ্ছে।

Crime Fraud Case Singur Health Center
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy