বৃষ্টিতে বেহাল পথ।
শহরে নিকাশির সমস্যা দীর্ঘদিনের। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এই প্রথম বিক্ষোভ-অবরোধে নামলেন আরামবাগের মানুষ।
সোমবার আরামবাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে তালতলা বাজার সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা সকাল সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা বাজার সংলগ্ন রাস্তা আবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হন। রবিবার বিকালের বৃষ্টিতে রাস্তার জল বেরোতে না পেরে বিভিন্ন দোকানে ঢুকে যায়। পথচারীদেরও অনেকে হাঁটুজলে ডোবা রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে খানাখন্দে পড়ে জখম হন। সোমবার সকালেও দেখা যায় রাস্তার জল নামেনি। এই অবস্থায় নিকাশি নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ, অবরোধ সামিল হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলার হাসান আলি চৌধুরী (এবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী) দ্রুত কাজ শুরুর আশ্বাস দিলে সওয়া ১২টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা তৈরির নামে শহরবাসীকে ধোঁকা দিচ্ছে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। জল আগেও জমত। সেই জল বের হওয়ার যেটুকু ব্যবস্থা ছিল তাতে এরকম অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়নি। ব্যবসায়ীদের পক্ষে অর্ণব ঘোষ, শেখ ফিরোজ আলি জানান, ভূগর্ভস্থ নালা করা হচ্ছে বলে ২০১৪ সালের ১২ জুন ঢাকডোল পিটিয়ে কাজ শুরু হয়। সেদিন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেছিলেন ৪৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। বিশ্বমানের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়েছে। কিন্তু মাস খানেক পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর এক বছর হতে চলল নতুন করে কাজেরও কোনও উদ্যোগই নেই। দ্রুত নিকাশি নালার কাজ শেষ করার দাবিতেই তাঁদের এই বিক্ষোভ-অবরোধ। নিকাশি নিয়ে অভিযোগের প্রসঙ্গে পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, ‘‘শহরবাসীর সঙ্গে কোনও তঞ্চকতা করা হয়নি। ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার কাজ আগামী এক বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।’’
অবরোধে ব্যবসায়ীরা। ছবি: মোহন দাস।
আরামবাগ পুরসভা সূত্রে খবরা, তালতলা বাজার থেকে আরামবাগ রেল কালভার্ট পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ভূগর্ভস্থ নালা নির্মাণের জন্য ৩ কোটি ৭২ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৭৭ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। নালার গভীরতা হওয়ার কথা ১০ ফুট এবং চওড়া ৫ ফুট। ২০১৪ সালের মার্চ নাগাদ বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা করানোর পরে কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ১২ জুন।
পুর কর্তৃপক্ষেরই একাংশের অভিযোগ, কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করানো হয়নি। হুগলির পান্ডুয়ার এক সংস্থাকে দিয়ে ওই সমীক্ষা করানো হয়। ফলে অপরিকল্পিত ভাবে ওই প্রকল্পের কাজও মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ওই রাস্তায় মাটি, পাথর পড়ে যাতায়াত যেমন দূরূহ হয়ে উঠেছে, তেমনি জল নিকাশির যে ন্যূনতম উপায় ছিল তাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy