Advertisement
E-Paper

বিকল্প চাষে অনীহা সমস্যা বাড়াচ্ছে আলুচাষিদের

জমি থেকে আলু উঠে বস্তাবন্দি হচ্ছে। কিন্তু ন্যায্য দাম কোথায়! গোটা আরামবাগ মহকুমা জুড়ে আলুচাষিদের হাহাকার। বুধবার পুরশুড়ার বিভিন্ন মাঠ-সহ মহকুমা জুড়ে ‘পোখরাজ’ এবং ‘এস ওয়ান’ প্রজাতির আলুর বস্তাপিছু (৫০ কিলোগ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০১
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

জমি থেকে আলু উঠে বস্তাবন্দি হচ্ছে। কিন্তু ন্যায্য দাম কোথায়!

গোটা আরামবাগ মহকুমা জুড়ে আলুচাষিদের হাহাকার। বুধবার পুরশুড়ার বিভিন্ন মাঠ-সহ মহকুমা জুড়ে ‘পোখরাজ’ এবং ‘এস ওয়ান’ প্রজাতির আলুর বস্তাপিছু (৫০ কিলোগ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা দরে। চাষিদের অভিযোগ, “বিঘাপ্রতি খরচ অনুপাতে বস্তা পিছু ২০০ টাকা দাম হলে অন্তত চাষের খরচ উঠে। সেখানে মাত্র ৯০ টাকায় আলু বিক্রি করতে হওয়ায় বিঘাপিছু লোকসান হচ্ছে প্রায় ৯ হাজার টাকা। অবিলম্বে সরকার এই অবস্থার মোকাবিলা না করলে এরপর ওঠা জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী আলুর ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি দেখা দেবে। তখন আত্মহত্যা করা ছাড়া পথ থাকবে না।’’

চাষিদের অসহায় অবস্থার কথা স্বীকার করেছেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলে, “সরকারি স্তরে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।’’

জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জ্যোতি এবং চন্দ্রমুখী আলু না ওঠা পর্যন্ত বাজারে নতুন আলুর জোগান বলতে থাকে ‘পোখরাজ’ এবং ‘এস ওয়ান’ প্রজাতির আলু। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি একেবারেই আলু তোলার শুরুতে এই দু’রকম আলু চাষিরা মাঠ থেকেই বিক্রি করেছেন ২০০-২২০ টাকা বস্তা। আরামবাগ মহকুমায় মোট আলু চাষের এলাকা ৩২ হাজার হেক্টরের মধ্যে জলদি জাতের এই দুই আলুর এলাকা প্রায় ১০ হাজার হেক্টর। গোঘাটের বালি গ্রামের দেবীপ্রসাদ গুঁই এ বার দু’বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘বিঘাপিছু গড়ে ৯০ বস্তা করে ফলন হয়েছে। খরচ হয়েছে বিঘাপ্রতি ১৮ হাজার টাকা। মোট ৩৬ হাজার টাকা খরচ করে আলুর দাম পাচ্ছি ১৬ হাজার ২০০ টাকা। অথচ গত বছর ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা বস্তা মাঠ থেকে বিক্রি করেছি। বিঘাপ্রতি ১৫ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছিল। এ বার চাষের খরচই উঠছে না। দু বিঘায় লোকসান ১৯ হাজার টাকার বেশি। খুব ক্ষতি হয়ে গেল।’’ একই অভিযোগ পুরশুড়ার ডিহিবাতপুরের সনৎ বাইরি, আরামবাগের বলরামপুরের বাণেশ্বর চিনা, খানাকুলের পোল গ্রামের কিশোর রায়ের। আলুতে লোকসানে মাথায় হাত পড়েছে সকলের।

আলু চাষে এমন অবস্থা নতুন নয়। প্রতি এক বছর বা দু’বছর অন্তর এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। তার পরেও তাঁরা বিকল্প চাষে কেন ঝুঁকছেন না?

পুড়শুড়ার জঙ্গলপাড়ার নির্মল মাইতি বলেন, “আলু চাষ থেকে বের হলে বিকল্প লাভজনক চাষ কোথায়! আমন এবং বোরো ধানে বিঘা প্রতি ২ হাজার টাকার বেশি লাভ থাকে না। সেখানে আলু চাষে লাভ অনেক বেশি।’’

আরামবাগ মহকুমা কৃষি দফতরের মতে, এ বছর অনুকূল পরিবেশ পেয়ে আলুর ব্যাপক ফলনই চাষিদের সর্বনাশের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। মহকুমা কৃষি আধিকারিক সজল ঘোষ বলেন, “প্রতিটি ফসলের অধিক ফলন হোক আমরা চাই। সেইমত চাষিদের পরামর্শও দিই। তবে আলু চাষে প্রায়ই এমন অবস্থা হওয়ার জন্য বছর দশেক ধরে বিকল্প চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে চাষিদের। কিন্তু চাষিরা আলু থেকে সরতে চাইছেন না।’’

Potato farmers Crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy