Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Jam

ধূলাগড়ি টোলপ্লাজ়া পেরোতেই এক ঘণ্টা !

টোলপ্লাজ়ার এক কর্তা পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, করোনা আবহের আগে যেখানে প্রতিদিন ৩২ হাজার গাড়ি প্লাজ়া পার হয়ে যেত, এখন সেই সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৮ হাজারে। এর মধ্যে ছোট গাড়ির সংখ্যাই ২০ হাজার।

স্তব্ধ: ধূলাগড়িতে এমনই অবস্থা হচ্ছে নিত্যদিন। বুধবার ছবিটি তুলেছেন সুব্রত জানা।

স্তব্ধ: ধূলাগড়িতে এমনই অবস্থা হচ্ছে নিত্যদিন। বুধবার ছবিটি তুলেছেন সুব্রত জানা।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:৪৮
Share: Save:

টোলপ্লাজ়ায় ‘ফাস্ট্যাগ’ পদ্ধতি চালু হওয়ার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ১০ মাস। কথা ছিল, নয়া পদ্ধতি টোলপ্লাজ়ায় যানজট কমাতে সহায়ক হবে। ধূলাগড়ি টোলপ্লাজ়ায় উল্টো ছবি। এখানে দিন দিন যানজট তীব্র হচ্ছে দুই লেনেই। দুর্ভোগ বাড়ছে সাধারণ যাত্রীদের। গাড়ি-চালকদের অভিযোগ, প্লাজ়া-কর্মীরা নতুন পদ্ধতিতে এখনও সড়গড় হননি। ফলে, ‘টোল’ নিতে দেরি হচ্ছে। প্লাজ়া কর্তৃপক্ষ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, করোনা আবহে ট্রেন ‌বন্ধ থাকায় মুম্বই রোডে ছোট গাড়ির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। সে কারণেই প্লাজ়াতে যানজট হচ্ছে।

টোলপ্লাজ়ার এক কর্তা পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, করোনা আবহের আগে যেখানে প্রতিদিন ৩২ হাজার গাড়ি প্লাজ়া পার হয়ে যেত, এখন সেই সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৮ হাজারে। এর মধ্যে ছোট গাড়ির সংখ্যাই ২০ হাজার। আগে যা ছিল দৈনিক ১০ হাজার। ওই কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু কাউন্টারের সংখ্যা একই আছে তাই বাড়তি গাড়ির চাপ পড়ছে। ফলে, যানজট হচ্ছে। ‘ফাস্ট্যাগ ব্যবস্থা ঠিকমতো কাজ করছে বলেই যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি। না হলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যেত।’’

ভুক্তভোগীরা উল্টো কথা বলছেন। তাঁদের দাবি, পরিস্থিতি এখনই আয়ত্তের বাইরে চলে গিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে সকাল থেকে রাত— কোনও সময়েই যানজট থেকে রেহাই মিলছে না ধূলাগড়ি টোলপ্লাজ়ায়। একদিকে আলমপুর পর্যন্ত যানজট জডিয়ে পড়ছে, অন্যদিকে রানিহাটি পর্যন্ত। প্লাজ়া পার হতে এক-একটি গাড়ির গড়ে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লাগছে। বিশেষ করে কলকাতার দিক থেকে যে সব গাড়ি আসছে, তার যাত্রীদের অবস্থা শোচনীয় হচ্ছে।

কোলাঘাট থেকে মুম্বই রোড এবং কোনা এক্সপ্রেস হয়ে কলকাতার ধর্মতলা পর্যন্ত গাড়িতে যেতে যেখানে আগে সময় লাগত দেড় ঘণ্টা, এখন প্লাজ়ায় যানজটের জন্য লাগছে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। ফলে, বিশেষ করে সমস্যায় পড়ছেন যাঁরা জরুরি কাজে কলকাতায় যাতায়াত করছেন। মুক্তি পাচ্ছে না অ্যাম্বুল্যান্সও। এক গাড়ি-চালক জানান, অনেক সময়ে ‘স্ক্যান’ করার যন্ত্রের সামনে ‘ফাস্ট্যাগ’যুক্ত গাড়িকে ঠিকমতো দাঁড় করানো হয় না। একবার ঠিকমতো ‘স্ক্যান’ না হলে গাড়িটিকে যন্ত্রের সামনে একবার এগিয়ে আবার পিছিয়ে দাঁড় করাতে হয়। এর ফলে, অনেক সময় নষ্ট হয়।

পুলিশের বক্তব্য, এখনও সব গাড়ি ‘ফাস্ট্যাগ’ লাগায়নি। মাত্র ৫০ শতাংশ গাড়িতে ‘ফাস্ট্যাগ’ লাগানো হয়েছে। বাকি গাড়িগুলি নগদেই ‘টোল’ দেয়। ‘ফাস্ট্যাগ’ ব্যবস্থা চালু হওয়ার আগে নগদে ‘টোল’ দেওয়ার ক্ষেত্রে চালকেরা কিছু সুযোগ-সুবিধা পেতেন। এখনও কেন সেই সুবিধা মিলবে না, না তা নিয়ে প্লাজ়া-কর্মীদের সঙ্গে চালকদের প্রায়ই বাক্‌বিতণ্ডা হয়। তাতেও যানজট হচ্ছে।গাড়ির চাপ বাড়লেও প্লাজ়ায় কাউন্টারের সংখ্যা আর বাড়বে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্লাজ়া কর্তৃপক্ষ। তাঁদেরই এক জন বলেন, ‘‘ট্রেন চলাচল শুরু হয়ে গেলেই গাড়ির চাপ কমে যাবে। যানজট একদমই থাকবে না। ফলে, কাউন্টার বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।’’ফলে, যতদিন না ট্রেন চালু হচ্ছে, ততদিন ধূলাগড়ি টোল-প্লাজ়়ায় যানজট থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা প্রায় নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE