বেহাল: এবড়োখেবড়ো এই সি সি পাল রোড দিয়েই চলে নিত্য যাতায়াত। ছবি: সুব্রত জানা
দীর্ঘদিন ধরে হাওড়ার বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বেহাল। যাতায়াতে নাকাল হচ্ছেন যাত্রী। বাড়ছে ক্ষোভ। পূর্ত (সড়ক) দফতরের হাত ধরে এ বার হাল ফিরতে চলেছে হাওড়া জেলা পরিষদের আওতায় থাকা সেই সব রাস্তার।
দু’বছর ধরে টাকার অভাবে তারা রাস্তাগুলি মেরামত করতে পারছে না দাবি জেলা পরিষদের। সেই কারণে সেই সব রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির দায়িত্ব নিচ্ছে পূর্ত (সড়ক) দফতর। জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে আমাদের বলা হয়েছে রাস্তার তালিকা পাঠাতে। তা থেকে বাছাই করা রাস্তাগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির দায়িত্ব নেবে পূর্ত (সড়ক) দফতর।’’
হাওড়া জেলা পরিষদের হাতে আন্দুলের পি সি রায় রোড, ঝোড়হাটের সি সি পাল রোড-সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা রয়েছে। এগুলি তৈরি হয়েছিল আগের ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের আমলে। ১৯৭৭ সালে বাম আমলে রাজ্যে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থা চালু হওয়ায় আগের ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের হাতে থাকা রাস্তাগুলিই চলে আসে জেলা পরিষদের হাতে। ন্যূনতম ২ কিলোমিটার থেকে ১০ কিলোমিটার লম্বা রাস্তাও রয়েছে এই তালিকায়। সবই পিচের। এতদিন জেলা পরিষদই রাস্তাগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতির কাজ করত। এর জন্য জেলা পরিষদের আলাদা ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রয়েছে। কিন্তু টাকার অভাবে বছর দুয়েক রাস্তাগুলি মেরামতিতে তারা হাত দিতে পারেনি বলে জানান জেলা পরিষদ কর্তারা। ফলে, সেগুলির বেশির ভাগই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
কেন টাকার অভাব?
জেলা পরিষদ সূত্রের খবর, এক সময় কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নের জন্য যে টাকা দিত, তার একটা অংশ পেত জেলা পরিষদ। এক-একটি অর্থ কমিশনের মেয়াদ হল পাঁচ বছর। ফলে, পাঁচ বছর ধরে টাকা পেত জেলা পরিষদগুলি। সেই টাকায় রাস্তা মেরামত করত জেলা পরিষদ। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে শুরু হওয়া চতুর্দশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে টাকার ভাগ আর জেলা পরিষদ পাবে না। ফলে, সব টাকা চলে যাচ্ছে সরাসরি পঞ্চায়েতের তহবিলে।
কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন বাদ দিলে জেলা পরিষদের নিয়মিত আয়ের তেমন বড় কোনও সংস্থান নেই। ফেরিঘাট জমা দেওয়া, দোকান লিজ, বহুতল বাড়ির অনুমতি দেওয়া ইত্যাদি খাত থেকে জেলা পরিষদ যে আয় করে, তার পরিমাণ খুব কম। তার উপরে কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে হাওড়া জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদের কর্তারা জানান, রাস্তাগুলির রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের উপায় জানানোর জন্য তাঁরা রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছে অনুরোধ করেন। জেলা পরিষদের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, মাস দুয়েক আগে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর রাস্তার তালিকা পাঠাতে বলে। সেইমতো পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে। ওই তালিকা জমা দেওয়া হলে পরের বছরের গোড়াতেই পূর্ত দফতর রাস্তার কাজে হাত দিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy