Advertisement
E-Paper

দশ মাস ধরে বেতন বন্ধ স্কুল শিক্ষাকর্মীর

দশ মাস ধরে বেতন বন্ধ ডোমজুড় লাগোয়া জগাছার সাতাশি হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক মহিলা কর্মীর। তাঁর অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেআইনি ভাবে তাঁর বেতন আটকে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের পাল্টা দাবি, ওই মহিলা কর্মী তাঁর যে জন্ম-শংসাপত্র দিয়েছেন তা জাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০১:১৩

দশ মাস ধরে বেতন বন্ধ ডোমজুড় লাগোয়া জগাছার সাতাশি হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক মহিলা কর্মীর। তাঁর অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেআইনি ভাবে তাঁর বেতন আটকে দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষকের পাল্টা দাবি, ওই মহিলা কর্মী তাঁর যে জন্ম-শংসাপত্র দিয়েছেন তা জাল। তা ছাড়া তিনি নিয়মিত স্কুলে আসেন না। তাই বেতন আটকে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে মহিলা জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে দরবার করলে সেই দফতর থেকে স্কুলে চিঠি পাঠিয়ে ওই শিক্ষাকর্মীর বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও ওই মহিলা কর্মীর বেতন চালু হয়নি। এই অবস্থায় উলুবেড়িয়ার কৈজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা ওই বিধবা মহিলা কর্মী ছেলে, ছেলের বউ, নাতি ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে অর্থাভাবে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, শুধু বেতনই নয়, প্রধান শিক্ষক তাঁকে স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় সই করতেও দিচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের রায়ে তাঁর সই করার বাধা কেটে গেলেও তাঁর বেতন সেই আটকেই রয়েছে। বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন।

স্কুল কর্তৃপক্ষ ও জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিমা বিশ্বাস নামে ওই মহিলার স্বামী বচনপ্রিয় বিশ্বাস উলুবেড়িয়া পালপাড়া হাইস্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী ছিলেন। তিনি ১৯৮৫ সালে মারা যান। মৃত স্বামীর চাকরিটি পান প্রতিমাদেবী। ১৯৮৯ সালের ১ মার্চ তিনি জগাছার সাতাশি হাইস্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে যোগ দেন। সমস্যার শুরু ২০১০ সালে। ওই বছর স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন সমীরকুমার পাল। দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাস পর থেকেই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে প্রতিমাদেবীর নানা বিষয় নিয়ে সমস্যা শুরু হয়। প্রতিমাদেবীর অভিযোগ, ‘‘বছর কয়েক আগে স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ার পরে প্রধান শিক্ষক আমাকে তাঁর ঘরে ডেকে একা বসিয়ে রেখে বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে দিয়েছিলেন। ’’ সমস্যার কথা জানিয়ে প্রতিমাদেবী মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর ও স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদককে চিঠি পাঠান। স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক নিমাই পণ্ডিত বলেন, ‘‘ওই মহিলা কর্মী নিয়মিত স্কুলে আসেন না। প্রধান শিক্ষকের কথাও শোনেন না। অনেকবার ওঁকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে তাঁর বেতন ফের চালু করা হবে।’’ প্রতিমাদেবীর দাবি, তাঁর জন্মের শংসাপত্র হারিয়ে গিয়েছিল। তাই তিনি নিয়ম মেনে ‘ডুপ্লিকেট’ শংসাপত্র বের করেন।

প্রধান শিক্ষকের দাবি, ‘‘প্রতিমাদেবী জাল জন্ম-শংসাপত্র নিয়ে চাকরিতে ঢুকেছিলেন। নিজের ইচ্ছে মতো স্কুলে আসেন এবং চলে যান। কাজ করেন না।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরের এক কর্তা জানান, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতনের যাবতীয় তথ্য স্কুলের মাধ্যমেই তাঁদের দফতরে আসে। সেগুলি যাচাই করে জেলা ট্রেজারি দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গত ১০ মাস ধরে সাতাশি হাইস্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতনের তথ্যে প্রতিমা বিশ্বাসের নাম নেই। তাই তাঁর ওই মহিলা কর্মীর বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। ওই কর্তা জানান, ওই কর্মীর জন্মের শংসাপত্র জাল প্রমাণ হলে তাঁর চাকরি চলে যেতে পারে। কিন্তু সেটা প্রমাণ হওয়ার আগে একজন শিক্ষাকর্মীর বেতন আটকানো যায় না।

Salary school staff Domjur south bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy