Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সংরক্ষণ উঠল শ্রীরামপুর কলেজে, প্রতিবাদে ছাত্ররা

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দানা বেধেছে। সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। কলেজ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, রাজ্যের সংরক্ষণ আইনের প্রেক্ষিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

শ্রীরামপুর কলেজ।

শ্রীরামপুর কলেজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০২:০১
Share: Save:

তফসিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা উঠে গেল হুগলির শ্রীরামপুর কলেজে।

মাস খানেক আগেই প্রকাশিত হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক, আইএসসি পরীক্ষার ফল। স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কলেজ সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ বার থেকে তফসিলি জাতি, উপজাতি বা অন্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবারের ছেলেমেয়েদের ভর্তির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ থাকছে না। অর্থাৎ সাধারণ পড়ুয়াদের সঙ্গে মেধার ভিত্তিতে তাঁদের ভর্তি হতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দানা বেধেছে। সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। কলেজ কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, রাজ্যের সংরক্ষণ আইনের প্রেক্ষিতেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দু’শতকের পুরনো শ্রীরামপুর কলেজে পঠনপাঠনের জন্য দু’টি ভাগ রয়েছে। একটি ধর্মতত্ত্ব (থিয়োলজি)। অন্যটি কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান‌। ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান‌ বিভাগের ক্ষেত্রে অন্যান্য কলেজের মতোই সংরক্ষণ প্রথা চালু ছিল।

কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, ২০১৩ সালের রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রের সংরক্ষণ আইনে বলা আছে, বিশেষ কোনও ধর্ম (সংখ্যালঘু) বা ভাষার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানে বাকি ক্ষেত্রের সংরক্ষণ লাগুর প্রয়োজন নেই। শ্রীরামপুর কলেজ খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রাধান্য। সেই কারণেই আইনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে শিক্ষা দফতরের আইন বিষয়ক অফিসারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

তবে, সিদ্ধান্তের কথা জানাজানি হতেই ছাত্র মহলে শোরগোল পড়েছে। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার এসএফআইয়ের তরফে পোস্টার সাঁটা হয়। সংগঠনের জেলা সহ সভাপতি অভীক ঘোষ বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে অনেক ছেলেমেয়ে সমস্যায় পড়বেন। এ ব্যাপারে শীঘ্রই কলেজ কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেব আমরা।’’

এক সুর রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি নেতাদের গলাতেও। সংগঠনের জেলা সভাপতি গোপাল রায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আমাদের শ্রেণি প্রতিনিধিরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ পুনর্বিবেচন‌ার আশ্বাস দিয়েছেন। সিদ্ধান্ত শিথিল না করলে লিখিত আবেদন জানানো হবে।’’

কলেজের প্রাক্তনী সংসদও সংরক্ষণ ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার বিপক্ষে। সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন ছাত্রনেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের এগিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের যে ভাবনা, এই সিদ্ধান্তের ফলে তা ধাক্কা খাবে। ’’ অন্বয়বাবুর প্রশ্ন, ‘‘সংরক্ষণের হিসেব অনুযায়ী কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান‌ শাখায় ভর্তি হওয়ার মতো এত খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ভুক্ত ছেলেমেয়ে এখানে কোথায়?’’

সূত্রের খবর, এ বার ওই তিন শাখায় ১২৪ জন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ভুক্ত ভর্তির আবেদন জানিয়েছেন। অথচ সংরক্ষণ এর দ্বিগুণেরও বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE