সজ্জা: লঞ্চের ভিতরে ঝুলছে লাইফ জ্যাকেট। নিজস্ব চিত্র
ফেরিঘাটের সাউন্ড বক্সে নাগাড়ে বেজে চলেছে ‘লাইফ জ্যাকেট পরুন। বিপদের ঝুঁকি নেবেন না’। কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অনেকেই সে কথায় কান দিচ্ছেন না। কেউ সরাসরি বলে দিচ্ছেন, লাইফ জ্যাকেট তিনি পরবেন না। কেউ কেউ সেটি হাতে নিচ্ছেন বটে কিন্তু গায়ে চড়াচ্ছেন না।
রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে হুগলির প্রায় সব ঘাটেই লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ বাস্তবে কাজে দিচ্ছে না বললেই চলে। অন্তত কয়েকটি ঘাট ঘুরে সেই ছবিই সামনে এসেছে।
মাস কয়েক আগে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়ায় বাঁশের জেটি ভেঙে কয়েকজনের মৃত্যু হয়। তার পর জেলার ঘাটের নিরাপত্তা, ভিড় সামলানোর পরিকাঠামো— সব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। তেলেনিপাড়ায় দুর্ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। ঘাটগুলির অবস্থা নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়। সেখানে জেলা প্রশাসন ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষদের জানিয়ে দেয়, সব যাত্রীদের জন্য লাইফ-জ্যাকেট, ফেরিঘাটগুলিকে সিসিটিভি-র আওতায় আনা, প্রতিটি ঘাটে বিশেষ গেট রাখা-সহ কয়েকটি নির্দেশিকা মানতে হবে। নৌকাগুলি চলাচলের উপযুক্ত কি না সেটিও নিশ্চিত করতে বলা হয়। সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসনগুলিকে ঘাট প্রতি ১০ লক্ষ টাকা দেয় রাজ্য সরকার।
জীবনের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও কেন পরছেন না লাইফ জ্যাকেট? এই প্রশ্নের উত্তরে কেউ বলেছেন, ‘‘গা কুটকুট করে।’’ কেউ কেউ আবার জানিয়েছেন, একই লাইফ জ্যাকেট অনেকে পরে। তাই ভাল পোশাকের উপরে লাইফ জ্যাকেট পরলে পোশাক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। উত্তরপাড়া খেয়াঘাট, কোন্নগর ফেরিঘাট, শ্রীরামপুর, চন্দননগরের রানিঘাট, চুঁচুড়া, বলাগড়, গুপ্তিপাড়া সর্বত্রই কমবেশি একই ছবি।
এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সচেতনতা তৈরির উপরেই জোর দিয়েছেন বিভিন্ন পুরসভার কর্তারা। ভদ্রেশ্বর পুরসভার প্রধান মনোজ উপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সরকারি ভাবে নিরাপত্তার নানা ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু মানুষকে তো নিজের জীবনের মূল্যটুকু বুঝতে হবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অনেকেই বেড়াতে গিয়ে পোশাক ভাড়া নিয়ে ছবি তোলেন। অথচ লাইফ জ্যাকেট পরলে তাদের নাকি পোশাক নষ্ট হয়ে যাবে! তাঁরা যত তাড়াতাড়ি সচেতন হবেন ততই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy