হাওড়ার মহিষরেখায় দামোদরের চর থেকে তোলা হচ্ছে বালি। ছবি: সুব্রত জানা।
কলকাতা লাগোয়া চার জেলায় নদী থেকে বালি তোলার অনুমতি আর দেবে না রাজ্য সরকার।
হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা— এই চার জেলায় দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। জাতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ে বালিকে ‘খনিজ সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, খনিজ আইন মেনে বালি তুলতে হলে আগে ‘খাদান’ চিহ্নিত করতে হবে। তার পরে সেই ‘খাদানের’ নিলাম ডাকতে হবে। সর্বোচ্চ দরদাতাকে ‘খাদান’ লিজ দিতে হবে। কিন্তু এই নিম্ন গাঙ্গেয় অববাহিকায় থাকা ওই চার জেলায় বালি তোলা হয় নদী থেকে। সেখানে খনিজ আইন মেনে কী ভাবে বালি তোলার অনুমতি দেওয়া সম্ভব, সে ব্যাপারে জেলা প্রশাসনগুলি সম্প্রতি রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চায়। তার উত্তরেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে চার জেলাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বালি তোলার অনুমতি তারা দিতে পারবে না। কেউ বালি তুললে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) আরশেদ হোসেন ওয়ারসি বলেন, ‘‘নির্দেশ পেয়েছি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে। যে সব জায়গা থেকে বালি তোলা হচ্ছে, তা বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
খনিজ আইন মেনে বালি তোলার অনুমতি দেওয়ার জন্য চারটি দফতরকে (খনিজ, বাণিজ্য, পরিবেশ এবং সেচ) সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে আবার এই চার দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে বালি তোলার অনুমতি দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
এক সময়ে বালি তোলার অনুমতি দিত ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। অভিযোগ ওঠে, নজরদারি এড়িয়ে অনুমতির বাইরে গিয়ে বেশি বালি তুলে রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছিল এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। এর পরে ওই দফতরের কাছ থেকে বালি তোলার অনুমতি দেওযার দায়িত্ব যায় সেচ দফতরের হাতে। কিন্তু জতীয় পরিবেশ আদালতের রায়ের পরে গত ১ এপ্রিল থেকে সেচ দফতরও অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা হারায়। এর ফলে, কলকাতা লাগোয়া চারটি জেলার প্রশাসন সমস্যায় পড়ে। কী ভাবে তারা খাদান চিহ্নিত করবে বা বালি তোলার অনুমতি দেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। গত মাসের শেষ দিকে খনিজ, বাণিজ্য, পরিবেশ এবং সেচ দফতরের সঙ্গে এই চার জেলা প্রশাসনের কর্তারা ভিডিও কনফারেন্স করেন। তার পরেই অনুমতি দেওয়া বন্ধ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy