Advertisement
E-Paper

এ বার শহর নোংরা করলেই জরিমানা

ইচ্ছেমতো চন্দননগরের রাস্তাঘাটে আবর্জনা ফেলার দিন শেষ। শহর নোংরা করা হলে এ বার গুনতে হবে জরিমানা।পরিবেশ ও দৃশ্য দূষণ রোধে বৃহস্পতিবার এমনই কঠোর সিদ্ধান্ত নিল চন্দননগর পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট ভ্যাট বা জায়গা ছাড়া রাস্তার যেখানে-সেখানে বা জলাশয়ে ময়লা ফেলা হলে জরিমানা করা হবে।

তাপস ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৮ ০১:২২
দূষণ: রাস্তার মাঝেই আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

দূষণ: রাস্তার মাঝেই আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র

ইচ্ছেমতো চন্দননগরের রাস্তাঘাটে আবর্জনা ফেলার দিন শেষ। শহর নোংরা করা হলে এ বার গুনতে হবে জরিমানা।

পরিবেশ ও দৃশ্য দূষণ রোধে বৃহস্পতিবার এমনই কঠোর সিদ্ধান্ত নিল চন্দননগর পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট ভ্যাট বা জায়গা ছাড়া রাস্তার যেখানে-সেখানে বা জলাশয়ে ময়লা ফেলা হলে জরিমানা করা হবে। বাইরে থেকে আসা লোকজনও রেহাই পাবেন না।

এই সিদ্ধান্তে খুশি শহরের পরিবেশপ্রেমীরাও। নাগরিকদের অনেকেই মনে করছেন, এমন সিদ্ধান্ত আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ শহরের ঐতিহ্য রয়েছে। শহরকে সুন্দর এবং দূষণমুক্ত করে তোলার জন্য নানা সচেতনতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তারই অঙ্গ হিসাবে এই নতুন সিদ্ধান্ত। তবে কী ভাবে, কত টাকা জরিমানা ধার্য হবে, তা আগামী পুরবোর্ডের বৈঠকে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।’’

সুন্দর শহর হিসেবে এক সময়ের এই ফরাসি উপনিবেশের নাম-ডাক রয়েছে। রাজ্য সরকারের ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পেও শহরকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে। তবু চোখ ধাক্কা খায় কোথাও কোথাও রাস্তার ধারে আবর্জনা স্তূপে বা পুকুর-জলাশয়ে পড়ে থাকা নোংরা ভরা প্লাস্টিকের প্যাকেটে। পুরবাসীদের কেউ কেউ আবার বাড়ির বর্জ্য রাস্তার ধারে ফেলে দেন, এই অভিযোগও রয়েছে।

পুরকর্তারা মনে করছেন, শহরবাসীর একাংশের দীর্ঘদিনের বদভ্যাস ছাড়াতে কড়া দাওয়াই প্রয়োজন। পুরসভার নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গা বা ভ্যাটে ময়লা ফেলা হলে তা পুরকর্মীরা সহজে সংগ্রহ করে ভাগাড়ে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তা হয় না। এর আগে পুরসভার পক্ষ থেকে প্রচার করেও বিশেষ লাভ হয়নি। শহরবাসীর একাংশের সচেতনতা বাড়েনি। ফলে, জরিমানার মতো কড়া পদক্ষেপ করা না-হলে দূষণ রোধ করা যাবে না।

এই নয়া উদ্যোগে খুশি পরিবেশবিদ, এ শহরেরই বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘দূষণ ঠেকাতে এবং মানুষের সচেতনতা বাড়াতে পুরসভার এই সিদ্ধান্ত খুবই ভাল হবে। তবে পুরসভাকে নজর রাখতে হবে জমা আবর্জনা ঠিক সময়ে যেন পরিষ্কার হয়।’’ ফটকগোড়ার বাসিন্দা বিপ্লব ভাদুড়ির কথায়, ‘‘পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে পুরসভার সিদ্ধান্ত খুব ভাল।’’ বাগবাজারের স্বাতী মজুমদার বলেন, ‘‘পুরসভা জরিমানা করতেই পারে। তবে, পুরসভাকেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেখানে কোনও গা-ছাড়া মনোভাব যেন না-থাকে।’’ জ্যোতির মোড় এলাকার বাসিন্দা চঞ্চল ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘পুরসভা সিদ্ধান্ত যথাযথ ভাবে কার্যকর করতে পারলে তা নজির হবে।’’

পুরসভা নয়া সিদ্ধান্ত কতখানি কার্যকর করতে পারবে, সে প্রশ্ন উঠছে। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে এই জেলারই উত্তরপাড়াতে বিচ্ছিন্ন ভাবে জরিমানা চালু করেছিল পুরসভা। কিন্তু নজরদারির অভাবে কিছুদিন পরেই সেই উদ্যোগ হোঁচট খায়। চন্দননগরেও তেমনটা হবে না তো? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘সিদ্ধান্তমতো কয়েকদিন জরিমানা করা হল, তার পরে সব চুপ— এমনটা হলে কোনও লাভ হবে না।’’

পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করছেন, সিদ্ধান্ত বজায় রাখতে তাঁরা বদ্ধপরিকর।

Unclean Fine Chandannagar চন্দননগর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy