Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাড়িতে মার, কিশোরীকে হোমে পাঠাল প্রশাসন

প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, বিনা দোষে মেয়েটিকে ভুগতে হচ্ছে।

—প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

—প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খানাকুল শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

বাবা কর্মসূত্রে থাকেন ভিন্‌রাজ্যে। মা-ও থাকেন আলাদা। বছর পনেরোর মেয়েটি থাকত কাকা-কাকিমার সংসারে। কিন্তু তাঁরা ওই কিশোরীর উপরে অত্যাচার করছিলেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হোমে পাঠাল প্রশাসন। হুগলির খানাকুল-১ ব্লকের চক ভেদুয়া এলাকার ঘটনা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, মেয়েটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মাস ছ’য়েক আগে তাঁর বাবা মুম্বইতে গিয়েছেন জরির কাজ করতে। আড়াই মাস ধরে তার মা-ও অন্যত্র থাকছেন। সেই কারণে ওই কিশোরী কাকা-কাকিমার কাছে থাকতে বাধ্য হয়। অভিযোগ, দু’জনেই কারণে-অকারণে মেয়েটির গায়ে হাত তুলতেন। সম্প্রতি তাকে দশম শ্রেণির পরীক্ষা দিতে যেতে দেওয়া হয়নি।

এরপরই শুক্রবার ব্লক প্রশাসন, চাইল্ড লাইন এবং থানার আধিকারিকেরা মেয়েটির বাড়িতে যান। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে দেখা যায়, মেয়েটি যে ঘরে থাকে সেটি তালাবন্ধ। মেয়েটি ঠাকুমার ঘরে ছিল। প্রশাসনের আধিকারিকরা অভিযোগ পান যে, দু’দিন ধরে মেয়েটির ঘরে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। সে ঠাকুমার ঘরে থাকছে। ঠাকুমাই খেতে দিচ্ছেন। মেয়েটির শরীরে মারের দাগ ছিল। প্রশাসনের আধিকারিকদের সে জানায়, ওই বাড়িতে থাকতে চায় না। অন্য দিকে কাকিমা দাবি করেন, মেয়েটি একটি ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করছে। তাই শাসন করেছেন।

এর পরেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে আনেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। ব্লক দফতরের তরফে তাকে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) নির্দেশে তাকে হোমে পাঠানো হয়েছে। গোটা বিষয়টি মেয়েটির মাকে জানানো হয়েছে।

প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, বিনা দোষে মেয়েটিকে ভুগতে হচ্ছে। বাবা-মা আলাদা থাকায় নিজের অধিকার থেকে সে বঞ্চিত হচ্ছে। বাড়িতেই নির্যাতিত হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, মেয়েটি জানায়, নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে সে বাবাকে ফোন করেছিল। কিন্তু বাবা গালাগাল দিয়ে ফোন কেটে দেন। অপর দুই সন্তানকে মানুষ করতে মেয়েটিকে দেখভাল‌ করতে পারছেন না বলে মা জানান।

প্রশাসনের আধিকারিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, মেয়েটি যাতে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সেই চেষ্টা করা হবে। বিডিও দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘‘এই ধরণের সামাজিক ব্যধি যাতে রোধ করা যায়, সে ব্যাপারে প্রশাসন সজাগ। এ নিয়ে সচেতনতা ছড়াতে প্রশাসনের তরফে কর্মসূচিও নেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Assault Shelter Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE