উদ্ধার: ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে গাঁজা। নিজস্ব চিত্র
মাস চারেক আগে শ্রীরামপুরের বিবির বেড়ে এক যুবক-খুনে মূল অভিযুক্তকে আগ্নেয়াস্ত্র এবং গাঁজা-সমেত গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সুমন নাথ। তার সঙ্গেই ধরা পড়েছে কানাই সরকার নামে আরেক সমাজবিরোধীও। তারা দুজনেই শ্রীরামপুরের ৫ নম্বর কলোনির বাসিন্দা। বছর দু’য়েক আগে শ্রীরামপুর পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিল উত্তম রায়কে বোমা ছোড়ার ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত কানাই।
চন্দননগর কমিশনারেটের অফিসারদের দাবি, দু’টি ঘটনার নেপথ্যেই জমিজমা সংক্রান্ত কারণ রয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে সমাজবিরোধীমূলক বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। সম্প্রতি উঠছিল তোলাবাজির অভিযোগও।
পুলিশ সূত্রের দাবি, সোমবার রাত ১০টা নাগাদ মোটরবাইকে চেপে জিটি রোড ধরে শহরে ঢুকছিল ওই দুই দুষ্কৃতী। শহরের অমূল্যকানন এলাকা থেকে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ তাদের ধরে। অভিযুক্তদের কাছ থেকে ২৫ কিলোগ্রাম গাঁজা, একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি ওয়ান শটার এবং তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় মোটরবাইকটি।
গত ৩০ এপ্রিল রাতে বাড়িতে ঢুকে অজয় রায়ভৌমিক ওরফে দেবু নামে বিবিড় বেড়ের বাসিন্দা এক যুবককে নাবালিকা মেয়ে, স্ত্রী এবং মায়ের সামনেই দুষ্কৃতীরা গুলি করে, বোমা ছোড়ে। তদন্তকারীদের বক্তব্য, দেবু জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিল। সেই সূত্রে তার সঙ্গে সন্দীপ নন্দী নামে শ্রীরামপুরের এক দুষ্কৃতীর যোগাযোগ ছিল। এলাকায় প্রাধান্য বিস্তার করা নিয়ে সন্দীপকে টেক্কা দিতে সুমন-বাহিনী ওই হামলা করে।
সম্প্রতি ওই এলাকাতেই অতনু ঘোষ ওরফে মন্টু নামে এক যুবক খুন হয়। পুলিশের বক্তব্য, সুমনের দলের ছেলেদের সঙ্গে মন্টুর মেলামেশা ছিল। অজয় খুনের বদলা নিতেই তাকে সরিয়ে দেয় বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর সমাজবিরোধীরা।
অন্য দিকে, ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর শহরের মল্লিকপাড়ায় উড়ালপুলের নিচে বসে থাকার সময় বোমার আঘাতে জখম হন দাপুটে তৃণমূল নেতা উত্তম রায়। ওই ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত কানাই।
পুলিশের একটি সূত্রের খবর, শ্রীরামপুরের ত্রাস যিশুর নির্দেশেই উত্তমের উপর হামলা হয়েছিল। যিশুকে টেক্কা দিয়ে একটি পুকুর কিনে নিয়েছিলেন উত্তম। তাতেই তাঁর উপর যিশুর আক্রোশ তৈরি হয়েছিল। ওই তৃণমূল নেতার উপর হামলার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকায় যিশুর সঙ্গে কানাইদের চুক্তি হয়েছিল। ৫০ হাজার টাকা অগ্রিমও নিয়েছিল তারা।
হামলায় উত্তমের বাঁ পায়ে বোমার আঘাত লাগে। ওই অবস্থাতেই তিনি দৌড়ে পিছনের একটি গলিতে ঢুকে পড়েন। তাঁর দিকে তারা রিভলভার ধরলেও গুলি ছো়ড়েনি। পরে উত্তমবাবু শ্রীরামপুর থানায় তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন।
উত্তমবাবু বলেন, ‘‘এলাকায় মদের ভাটি তুলে সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তুলেছি। দুষ্কৃতীদের রমরমা বন্ধের চেষ্টা করেছি। সেই জন্যই পরিকল্পনা করে আমার উপর হামলা করা হয়।’’ উত্তমবাবু যোগ করেন, ‘‘তথাকথিত কোনও সমাজবিরোধী যদি মূলস্রোতে ফিরতে চায়, তা হলে আমার সাহায্য প্রয়োজন হলে সব রকম চেষ্টা করব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy