Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Dankuni

তৃণমূল ছাড়লেন ডানকুনির দেবাশিস

দলত্যাগ করার পরে তিনি কোন দলের যোগ দেবেন, তা খোলসা করেননি দেবাশিসবাবু। তবে, তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীর পথই তাঁর পথ।

অফিসে দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

অফিসে দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

দলের প্রতি অনাস্থা এবং শুভেন্দু অধিকারীর সমর্থনে বুধবারই মুখ খুলেছিলেন ডানকুনি পুরসভার বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান তথা পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি পুরসভা এবং দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করলেন। তৃণমূলের অস্বস্তি আরও বেড়েছে একই সঙ্গে ওই পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী দলীয় কাউন্সিলর মীরা কুমারী পাসোয়ানও দল ছাড়ায়। দেবাশিসবাবুর সমর্থনে মুখ খুলেছেন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী দলীয় কাউন্সিলর কৃষ্ণেন্দু মিত্র।

এ দিন সকালে পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক অভ্রজ্যোতি পালের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন দেবাশিসবাবু। বহু বিদায়ী কাউন্সির তাঁর সঙ্গে আছেন এবং তাঁরা পরে দল ছাড়বেন দাবি করে দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘দল আমাকে যেমন দায়িত্ব দিয়েছে, তেমন কাজ করেছি। আমার ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে। দলের কেউ কেউ মনে করছেন, আমরা চলে গেলে দল শক্তিশালী হবে। তাঁরা দলকে আরও শক্তিশালী করুন।’’ ফের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ‘আইপ্যাক’কেও বিঁধেছেন দেবাশিস। তিনি বলেন, ‘‘আগে মনে করতাম, দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ছাড়া তৃণমূলের কোনও অস্তিত্ব নেই। তা হলে প্রশান্ত কিশোর কীসের জন্য? তিনি রাজ্যের পরিবর্তন আনেননি। আজ কিছু নেতা বলছেন, দিদি সব কিছু নন, কর্পোরেট সংস্থা লাগবে। আমি কর্পোরেট সংস্থায় বিশ্বাস করি না।’’

বিধানসভা ভোটের মুখে এ ভাবে ডানকুনির দুই নেতা দল ছাড়ায় তড়িঘড়ি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নামেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব সন্ধ্যায় ডানকুনি স্টেশন সংলগ্ন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক করেন। ডাকা হয়েছিল পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান এবং কয়েকজন বিদায়ী কাউন্সিলরকে। দেবাশিসবাবু-সহ চার বিদায়ী কাউন্সিলর ডাক পাননি। দিলীপবাবু বলেন, ‘‘এটা দলের সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। যাঁদের ডাকা হয়েছিল, তাঁরা এসেছিলেন। আমরা কাদের ডেকেছি, তা সংবাদমাধ্যম জানবে কী করে? যাঁদের ডাকা হয়নি, তাঁদের পরে ডাকব।’’

দলত্যাগ করার পরে তিনি কোন দলের যোগ দেবেন, তা খোলসা করেননি দেবাশিসবাবু। তবে, তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, শুভেন্দু অধিকারীর পথই তাঁর পথ। আর এক দলত্যাগী বিদায়ী কাউন্সিলর মীরা কুমারী বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দলটা করেছিলাম। বর্তমানে দল থেকে সেই সম্মান আর পাচ্ছি না। দেবাশিসবাবুর সঙ্গে আছি। তিনি যে দিকে যাবেন, আমিও সে দিকেই যাব।’’

কৃষ্ণেন্দুবাবুও তাঁর ক্ষোভ গোপন করেননি। তবে, দলত্যাগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেননি। তাঁর দাবি, পুরসভার নানা দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দলের আট কাউন্সিলর নেতৃত্বে জানিয়েছিলেন। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে, দরজা খোলা আছে। চলে যান। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা কি অন্যায়?

এই ক্ষোভ-দলত্যাগ নিয়ে ডানকুনির পুরপ্রশাসক হাসিনা শবনমের দাবি, ‘‘ওঁরা এখন এ ধরনের কথা কেন বলছেন, জানি না। ওঁদের ওয়ার্ডে কী কাজ হয়েছে, এলাকার মানুষ বলবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari Dankuni TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE