Advertisement
২২ মে ২০২৪
মাঝ রাস্তায় নামানো হল যাত্রীদের

ব্রিগেডের জন্য বাস দখলে অভিযুক্ত তৃণমূল

বুধবার ভোর থেকে আবার যাত্রীদের মাঝ পথে নামিয়ে বাসে তৃণমূলের পতাকা ঝুলিয়ে বাস দখলের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আর তার জেরে সমস্যায় পড়লেন নিত্যযাত্রীরা।

বাসের সামনে লাগানো তৃণমূলের পতাকা। ছবি: মোহন দাস

বাসের সামনে লাগানো তৃণমূলের পতাকা। ছবি: মোহন দাস

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৮
Share: Save:

তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ আগামী শনিবার। আর তার আগে মঙ্গলবার রাত থেকেই আরামবাগ মহকুমা-সহ জেলার বিভিন্ন দূরপাল্লা রুটের বাস তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।

বুধবার ভোর থেকে আবার যাত্রীদের মাঝ পথে নামিয়ে বাসে তৃণমূলের পতাকা ঝুলিয়ে বাস দখলের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। আর তার জেরে সমস্যায় পড়লেন নিত্যযাত্রীরা।

বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ গোঘাট থানার সামনে স্থানীয় বদনগঞ্জ থেকে কলকাতাগামী বাসটির যাত্রীদের নামিয়ে বাসে পতাকা লাগিয়ে দেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। যাত্রীদের বিক্ষোভের জেরে অবশ্য পুলিশ এসে নেতাদের বুঝিয়ে ফের সেই বাস দখলমুক্ত করে। মঙ্গলবার রাত থেকেই মহকুমার বিভিন্ন রাস্তায় দূরপাল্লার গাড়ি আটকানো শুরু হয়। দূরপাল্লার বাস মালিক সংগঠনের (হুগলি ইন্টার রিজিয়ন) সম্পাদক গৌতম ধোলের অভিযোগ, “বুধবার ভোর থেকে হুগলির সঙ্গে বর্ধমান, দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন।’’ মঙ্গলবার রাতেই গোঘাটের হাজিপুর, বাঁকুড়া কোতলপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরের মাংরুল এবং বর্ধমানের শেয়ারাবাজারে প্রায় ৩০টি দূরপাল্লার বাস জোর করে দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। তাঁর আক্ষেপ, “যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কিন্তু আমরা অসহায়। প্রশাসন এবং শাসক দলের বিভিন্ন মহলে দরবার করেও কোনও সাড়া মেলেনি”।

বাস তুলে নেওয়া নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরাও। তাঁদের অভিযোগ, দ্বিগুণ-তিন গুণ ভাড়া দিয়ে টোটো, অটো চেপে যাতায়াত করতে হচ্ছে। হাজিপুরের শওকত মোল্লা নামে এক প্রৌঢ়র অভিযোগ, “তারকেশ্বর যাওয়ার জন্য বেরিয়ে আরামবাগ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার আসতেই ২০০ টাকা খরচ হয়ে গেল। বাস থাকলে ৪৪ টাকায় বাড়ি থেকে তারকেশ্বর যাই।’’

ভোগান্তি: বাস কম। তাই বাসের ছাদে চেপেই যাতায়াত। ছবি: মোহন দাস

বাস তুলে নেওয়া নিয়ে আরামবাগ মহকুমাশাসক লক্ষ্মীভব্য তান্নিরু বলেন, “খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” হুগলি আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক শুভেন্দু শেখর দাস বলেন, “বাস মালিকরা কেউ কেউ মৌখিক অভিযোগ করছেন। কারা বাস তুলে নিচ্ছেন নির্দিষ্ট লিখিত দিতে বলেছি। সেই অভিযোগ কেউ দিচ্ছেন না বলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যাচ্ছে না।” বাস মালিকদের দাবি, “আমরা রাজনৈতিক নেতাদের নামে লিখিত অভিযোগ করতে পারব না, তা সরকারি আধিকারিকরা ভালভাবেই জানেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছেন তাঁরা।”

চার দিন আগে থেকেই বাস দখলে নেওয়া হচ্ছে কেন? তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রস্তুতি সভাগুলোতে দলের জেলা এবং রাজ্য নেতারা বুথ পিছু কত লোক নিয়ে যেতে হবে সেই লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছেন। সেই জন্যেই বাস দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।

গোঘাটের বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার বলেন, “ছেলেদের বলে দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের ভোগান্তি করে বাস আটকানো যাবে না। পুলিশকেও বলেছি কেউ বাস আটকালে পদক্ষেপ নিতে।” তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “এত আগে বাস আটকানোর কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Brigade TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE