Advertisement
E-Paper

মাখলায় তাণ্ডব, ফের অভিযুক্ত টিএমসিপি

শ্রীরামপুরের পর এ বার উত্তরপাড়ার প্যারীমোহন কলেজ। ফের সোশ্যাল-অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে মারধর, ভাঙচুরে নাম জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি)। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৫:৩৬
গুন্ডাগিরি: তখনও চলছে হাতাহাতি। নিজস্ব চিত্র

গুন্ডাগিরি: তখনও চলছে হাতাহাতি। নিজস্ব চিত্র

শ্রীরামপুরের পর এ বার উত্তরপাড়ার প্যারীমোহন কলেজ। ফের সোশ্যাল-অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বিবাদের জেরে মারধর, ভাঙচুরে নাম জড়াল তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি)। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে ঘণ্টাখানেক তাণ্ডব চলে মাখলার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের লোহার পোল এলাকায় টিএন মুখার্জি রোডে। চার-পাঁচটি গাড়ি এবং ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর খোকন মণ্ডলের মোটরবাইক-সহ কয়েকটি বাইকে ভাঙচুর চালানো হয়। হামলা হয় খোকনবাবুর ক্লাবেও। হামলাকারীদের মারে ওই ক্লাবের কয়েক জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া রুখতে একটি গাড়িকে রাস্তায় আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

তাণ্ডবের জেরে এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। হামলাকারীরা বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের নাম করে হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। লোকজন প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালান। কিন্তু হঠাৎ এই তাণ্ডব কেন?

তৃণমূলেরই একটি সূত্রের দাবি, গত বুধবার প্যারীমোহন কলেজের সোশ্যাল অনুষ্ঠানে চার-পাঁচ জন ছাত্রকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কলেজে দলের ছাত্র সংগঠনের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের জেরে ওই ঘটনা। তারই বদলা হিসেবে বৃহস্পতিবারের ঘটনা। খোকনবাবুর অভিযোগ, ‘‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওরা ফোনে হুমকি দিচ্ছিল। দলেরই কাউন্সিলর তাপস মুখোপাধ্যায় (বুড়োদা) আমায় সামলে থাকতে বলেন। হামলাকারীদের মধ্যে টিএমসিপি-র কয়েক জনও ছিল। ওরা হাসপাতালেও আমাকে হেনস্থা করেছে।’’ সোশ্যাল নিয়ে কোনও গণ্ডগোলের কথা তাপসবাবু মানতে চাননি। তাঁর দাবি, ‘‘দু’টি ক্লাবের মধ্যে বিবাদের জেরেই মাখলার ওই ঘটনা। তার সঙ্গে দলের বা কলেজ সোশ্যালের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘প্যারীমোহন কলেজের সোশ্যালকে কেন্দ্র করে বিধায়ক এবং পুরপ্রধানের অনুগামীদের মধ্যে বিবাদের জেরেই ওই ঘটনা। পুলিশ কড়া হাতে মোকাবিলা করবে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করবে।’’

পুরপ্রধান দিলীপ যাদব এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘এই তো আমি আর দিলীপ এক সঙ্গে নাটকের অনুষ্ঠানে রয়েছি। বিবাদ কোথায়? তবে, কোনও রকম দাদাগিরি চলবে না। আতঙ্ক ছড়ানোর মতো ওখানে কিছু হয়নি। আমার নামে কেউ কিছু রটালে কী করব? ঘটনার সত্যাসত্য খোঁজ নেব।’’

শ্রীরামপুর কলেজে সোশ্যালে বক্স বাজানোর প্রতিবাদ করায় বুধবার রাতে এলাকার এক দম্পতি ও তাঁদের ছেলেকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। তার পরে ফের প্যারীমোহন কলেজের ঘটনাতেও টিএমসিপি-র নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। টিএমসিপি অভিযোগ মানেনি। কিন্তু কলেজের গোলমাল যে ভাবে বারবার রাস্তায় নামছে, তাতে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ।

রঞ্জিত মণ্ডল নামে মাখলার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমি প্রতিদিন বাড়ি ফেরার আগে পাড়ার ওই ক্লাবে গিয়ে টিভি দেখি। বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ কিছু বহিরাগত এসে বেমক্কা হামলা চালাল। আমার বাইক ভেঙে দিল।’’ এই হামলায় মাথা ফেটেছে আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যুবকের। তিনি বলেন, ‘‘ওরা রড, লাঠি নিয়ে এসেছিল। মহিলাদের গালিগালাজ করল। হামলাকারীদের কয়েক জন কোন্নগর, ধাড়সা এলাকার। ওরা বিধায়কের নাম করে হুমকি দিচ্ছিল।’’

Unrest TMCP College
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy