Advertisement
E-Paper

টিএমসিপি-র গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম ৫ জন

ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীনই ছাত্র সংসদের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে সোমবার তেতে উঠল হুগলি শ্রীরামপুর কলেজ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৪০
তখনও চলছে গোলমাল। সোমবার ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।

তখনও চলছে গোলমাল। সোমবার ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।

ভর্তি প্রক্রিয়া চলাকালীনই ছাত্র সংসদের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে সোমবার তেতে উঠল হুগলি শ্রীরামপুর কলেজ। জখম হন অন্তত ৫ জন। গোলমালের জেরে ভর্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। চিকিৎসার জন্য আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও একপ্রস্ত মারামারি হয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশ যায়।

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর পরে একাধিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে কঠোর ভাবে দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, সেখানে দলের ছাত্র সংগঠনের এই ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন হুগলি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

ওই কলেজের ছাত্র সংসদের ক্ষমতা রয়েছে টিএমসিপি-র হাতে। ছাত্র সংসদের সভানেত্রী সোনিয়া সিংহ। ২০১৫ সালে তিনি স্নাতক হন। কলেজের নিয়ম মোতাবেক, কোনও পড়ুয়া স্নাতক হয়ে গেলে (পাস আউট) তিনি সংসদের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে থাকতে পারবেন না। দিন কয়েক আগে ‘ফ্যাকাল্টি’র বৈঠকে ঠিক হয়, সোনিয়াকে সরিয়ে সংসদের সহ-সভাপতি সঞ্জিত রামকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু সোনিয়া বা তাঁর অনুগামীরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি। গোলমাল তা নিয়েই।

গোলমালের দায় সঞ্জিতদের উপরে চাপিয়ে সোনিয়ার দাবি, ‘‘সভানেত্রী হিসেবে আমি এখনও পদত্যাগ করিনি। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কোনও পদ পরিবর্তন হবে না বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন। আমাকে সরানোর জন্য কিছু ছেলেমেয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে। সঞ্জিতরা এসেই ভর্তি বন্ধ করে দেয়। মারধর করে আমাদের ছেলেমেয়েদের।’’ পক্ষান্তরে, সঞ্জিতের অনুগামী টিএমসিপি কর্মী সুস্মিতা বসুর অভিযোগ, ‘‘সঞ্জিত সভাপতি হিসেবে নিয়োগের চিঠি নিতে এসেছিল। কিন্তু সোনিয়া আর গৌরব চক্রবর্তীর নির্দেশে কিছু ছেলেমেয়ে ওঁকে মারধর করে। ওঁদের অন্যায় কাজ যারা সহ্য করেন না, তাঁদের গায়েও হাত তোলে। সভানেত্রী অনেক দুর্নীতি করেছেন। সে জন্যই অন্যায় জেনেও পদ আঁকড়ে থাকতে হামলা করছেন।’’

এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অফিসে অধ্যক্ষ ভ্যানস্যাংল্যুরার দেখা মে‌লেনি। উপাধ্যক্ষ সৌমিত্রশঙ্কর দাশগুপ্ত কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, টিএমসিপি-র শীর্ষ স্তরের এক নেতা জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে ওই পদে কে বসবেন, সে ব্যাপারে কলেজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। ওই কলেজে বিবদমান দু’পক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

কলেজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংসদের সভাপতি হিসেবে চিঠি নিতে আসেন সঞ্জিত। কিন্তু কলেজের অফিসেই সোনিয়া-অনুগামীরা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন ব‌লে অভিযোগ। সেই সময় প্রথম বর্ষের ভর্তি চলছিল। গোলমালকারীদের একাংশ কাউন্টার বন্ধ করে দেয়। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রবল মারামারি শুরু হয়। ভর্তি হতে আসা ছেলেমেয়ে এবং তাঁদের অভিভাবকেরা রীতিমতো ভয় পেয়ে যা‌ন। কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর এসেও গোলমাল সামাল দিতে কার্যত ব্যর্থ হন। আসে পুলিশও। তবে, পুলিশ কলেজে ঢোকেনি। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে কাউন্সিলররা ছাত্র সংসদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন।

পুলিশ আসার পরে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও দু’পক্ষের মারামারি হয়। পুলিশ গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে গোলমালকারীদের সরিয়ে দেয়। সংগঠনের জেলা সহ-সভাপতি কৌশিক শীল জানিয়েছেন, শ্রীরামপুরের বিধয়ক এবং দলীয় নেতৃত্বকে ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বিবদমান দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে তৃণমূল শিবির সূত্রে জানা গিয়েছে।

conflict TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy