পর্যাপ্ত বরাত না থাকার কারণ দেখিয়ে সম্প্রতি বর্ষাতি তৈরির একটি কারখানায় ‘লে-অফ’ ঘোষণা করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। গত ২০ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত ‘লে-অফে’র সময়সীমা ছিল। ঘোষণা অনুযায়ী, ৪ মে ‘লে-অফ’ তুলে নেওয়া হলেও এখনও স্বাভাবিক হলো না পরিস্থিতি। অভিযোগ, তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির লোকজন মালিকপক্ষকে কারখানায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন। ওই কারখানার আইটিটিইউসি নেতাদের পাল্টা অভিযোগ, ঘোষিত ‘লে-অফ’ বেআইনি ছিল। সেটি কারখানা কর্তৃপক্ষকে স্বীকার করতে হবে।
ত্রিমূর্তি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে ওই কারখানার ডিরেক্টর অতনু সেনের অভিযোগ, ‘‘শ্রমিকদের একাংশ এমন অসহযোগিতা করছেন যে, কারখানা চালানোর পরিস্থিতি নেই। এমন চললে লক-আউট ঘোষণা করা ছাড়া পথ থাকবে না। বিষয়টি শ্রম দফতরকে জানানো হয়েছে।’’
দিল্লি রোডের ধারে ডানকুনির মোল্লাবেড়ে এলাকায় ওই কারখানাটি প্রায় তিন দশকের পুরনো। বর্তমানে ৩৬ জন শ্রমিক রয়েছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের জানান, এক সময় কারখানাটি রমরম করে চললেও বছর দু’য়েক ধরে পরিস্থিতি বদলেছে। রবারের জিনিসের চাহিদা অনেক কমেছে। লাভের বদলে লোকসান হচ্ছে। সেই কারণেই ‘লে-অফ’ ঘোষণা হয়েছিল। এর পরেই শুরু হয় গোলমাল। কারখানায় গেটের সামনে বাঁশের ব্যারিকেড ও বোল্ডার ফেলা রয়েছে। ব্যারিকেডের বাঁশের মাথায় তৃণমূলের পতাকা আটকানো।
শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, তাঁরা সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি পান না। শেখ সিতাব নামে এক কর্মীর দাবি, ‘‘লে-অফ বেআইনি ছিল। ওই দিনগুলির পুরো টাকা দিতে হবে। মালিকপক্ষ কারখানা থেকে যন্ত্রপাতি বের করে নিয়ে যেতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা। তাই বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।’’ ওই কারখানার আইএনটিটিইউসি ইউনিটের সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বঞ্চিত শ্রমিকরা আবেগতাড়িত হয়েই ব্যারিকেড দিয়েছেন। সেগুলি আমরা এখনই সরিয়ে নিতে পারি। কিন্তু তার আগে লে-অফ যে বেআইনি ছিল, সেটি স্বীকার করে মালিক পক্ষকে আলোচনায় বসতে হবে।’’
শ্রীরামপুরের উপ শ্রম-কমিশনার পার্থসারথি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক হয়, সে ব্যাপারে আমরা শ্রমিক এবং মালিক— দু’পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা চালাচ্ছি। আশা করছি, শীঘ্রই সমাধানসূত্র মিলবে।’’