Advertisement
E-Paper

বাগনানে দুই খুনের কিনারা কবে, ক্ষোভ

বাগনান থানার দাবি, এই মামলায় ২২ জন অভিযুক্তের মধ্যে আশরাফের ভাই হাফিজুল-সহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু আশরাফ ধরা না-পড়ায় তদন্তে গতি আসেনি বলে পুলিশকর্তাদের একাংশ মেনে নিয়েছেন।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

দেড় মাসের মধ্যে এলাকায় দু’টি খুন, একটি চুরির ঘটনা। কিনারা হয়নি কোনওটির। বাগনানে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।

গত ৪ জুন রাতে ন’পাড়া গ্রামে খুন হন মহসিন খান নামে এক তৃণমূল নেতা। তার পর ২৫ জুলাই রাতে বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে খুন হয় ঈশিতা দত্ত নামে এক স্কুলছাত্রী। মহসিন খুনের পরে পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। আইসি-কে বদলি করে দেয় নবান্ন। কিন্তু তার পরেও মূল অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। ঈশিতা খুনের পরেও পুলিশের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ওঠে। পর পর এই ঘটনাগুলিতে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা।

জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা অবশ্য দাবি করেছেন, দু’টি খুনের মামলাই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তেরা রেহাই পাবে না। বাড়ির কাছেই মোটরবাইকে চড়ে আসা কয়েকজন দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন হন মহসিন। মূল অভিযুক্ত আশরাফ আলি মিদ্দে এবং তার শাগরেদদের ধরার দাবি ওঠে। আশরাফ একসময়ে তৃণমূল করত। মহসিন ছিলেন কংগ্রেসে। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকে আশরাফ দলে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে থানায় তোলাবাজি, ধর্ষণ-সহ নানা অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ ছিল। কিন্তু পুলিশ কখনওই তাকে ধরেনি। পঞ্চায়েত ভোটে মহসিনের স্ত্রী তৃণমূলের টিকিটে গ্রাম পঞ্চায়েতে জেতেন। তাঁকে হারাতে আশরাফ নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল। এ নিয়ে মহসিন-আশরাফ বিবাদ তুঙ্গে ওঠে। বদলা নিতেই আশরাফ খুন করে বলে অভিযোগ।

নিহতের পরিবারের আরও অভিযোগ, মহসিন আগেই খুনের আশঙ্কার কথা পুলিশকে ফোনে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশ অভিযোগ মানেনি। বাগনান থানার দাবি, এই মামলায় ২২ জন অভিযুক্তের মধ্যে আশরাফের ভাই হাফিজুল-সহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু আশরাফ ধরা না-পড়ায় তদন্তে গতি আসেনি বলে পুলিশকর্তাদের একাংশ মেনে নিয়েছেন।

২৫ জুলাই রাতে নবাসনে বন্ধু শুভময় মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে খুন হয় এনডি ব্লকের স্কুলছাত্রী ঈশিতা। তার বাবা বিমলবাবুর অভিযোগ ছিল, ওই রাতেই কার বাড়িতে মেয়ে গিয়েছে, তা জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও তৎপরতা দেখায়নি। পরের সকালে শুভময়দের তালাবন্ধ ভাড়াঘর থেকেই ঈশিতার দেহ মেলে। ঘটনার পরে কেটে গিয়ে চার দিন। এখনও শুভময় এবং তার মা সু্স্মিতার নাগাল পায়নি পুলিশ। বিমলবাবু মনে করেন, ওই রাতে পুলিশ তৎপর হলে অভিযুক্তদের ধরা সহজ হত। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তদের ফোনের সূত্র ধরে তাদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে। যদিও মোবাইল বন্ধ থাকায় তাদের অবস্থান চিহ্নিত করতে সমস্যা হচ্ছে।

তারমধ্যেই আবার ২৭ জুলাই বাগনানের বাঘেশ্বরী মন্দিরে চুরি হয়। এ ক্ষেত্রেও পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ জানান বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, গত বছরেও এই মন্দিরে চুরি হয়েছিল। পুলিশ কিনারা করতে পারেনি। এ বার সিভিক ভলান্টিয়ার থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে চুরি হয়, এ প্রশ্নও ওঠে। পুলিশ শনিবার মন্দির কমিটিকে একটি সিসিটিভি দিয়েছে। কিন্তু ধরতে পারেনি কাউকে।

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীদের অনেকে মনে করছেন, ‘সোর্স’ কাজ না-করায় পুলিশ অপরাধগুলির কিনারা করতে সক্ষম হচ্ছে না। বিজেপির জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি অনুপম মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘বাগনানের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। পুলিশ অপরাধমূলক কাজকর্ম রোধ করতে ব্যর্থ। শাসক দলের একাংশের মদতেই আজ পুলিশ নিধিরাম সর্দার হয়ে পড়েছে।’’ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ সেন অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘পুলিশকে সব ক্ষেত্রেই আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পুলিশ সে কাজ করছেও।’’

Bagnan Police Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy