Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দাবি না মেটানোয় ভাটার রাস্তায় বেড়া, অভিযোগ

রাস্তা তৈরির জন্য তিরিশ হাজার ইট অথবা দু’লক্ষ টাকা— ইটভাটার মালিকের কাছে গ্রামবাসীর একাংশের দাবি ছিল এই রকম। তিনি তা না-মেটাতে পারায় তাঁর ইটভাটার যাতায়াতের রাস্তায় ওই গ্রামবাসীরা বেড়া দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়গড়চুমুক গ্রামের ওই ভাটাটির মালিক কবিতা গিরি। ওই গ্রামেই তাঁর বাড়ি।

বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে ইটভাটায় যাওয়ার রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা।

বেড়া দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে ইটভাটায় যাওয়ার রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০০:৪৯
Share: Save:

রাস্তা তৈরির জন্য তিরিশ হাজার ইট অথবা দু’লক্ষ টাকা— ইটভাটার মালিকের কাছে গ্রামবাসীর একাংশের দাবি ছিল এই রকম। তিনি তা না-মেটাতে পারায় তাঁর ইটভাটার যাতায়াতের রাস্তায় ওই গ্রামবাসীরা বেড়া দিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। হাওড়ার শ্যামপুরের বাড়গড়চুমুক গ্রামের ওই ভাটাটির মালিক কবিতা গিরি। ওই গ্রামেই তাঁর বাড়ি। এ নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে তাঁর অভিযোগ। তবে, গত ২১ জুন উলুবেড়িার এসডপিও-র কাছে কবিতাদেবী এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ না নেওয়ার কথা থানা অস্বীকার করেছে। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ইটভাটার জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র কবিতাদেবীকে থানায় জমা দিতে বলা হয়েছে। তারপরেই পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।

কবিতাদেবীর স্বামী দামোদরের তীরে ২০০০ সালে ইটভাটাটি গড়েন। ২০০৬ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে কবিতাদেবীই ভাটাটি চালাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই প্রতি বছর যে কোনও অজুহাতে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করেন গ্রামের কিছু যুবক। এ বছর দাবির বহর তাঁরা বাড়িয়ে দেন। রাস্তা তৈরির জন্য ৩০ হাজার ইট চাওয়া হয়। তিনি তা দিতে অস্বীকার করলে নগদ দু’লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। টাকাও দিতেও তিনি অস্বীকার করেন। এর পরেই গত ১৮ জুন তাঁর ইটভাটায় যাতায়াতের রাস্তায় ওই যুবকেরা বেড়া দিয়ে দেন বলে কবিতাদেবীর অভিযোগ।

কবিতাদেবী বলেন, ‘‘এই ঘটনার পরেই আমি শ্যামপুর থানায় যাই। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। ২১ জুন এসডিপিকে অভিযোগ জানাই। কিন্তু তারপরেও বেড়া তুলতে পুলিশ কোনও সহায়তা করেনি।’’ তিনি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে গেলে তিনি তাঁকে বিষয়টি গ্রামবাসীদের সঙ্গে আপোসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন বলে কবিতাদেবীর দাবি।

বারগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘কবিতাদেবী আমার কাছে এসেছিলেন। শুনেছি, গ্রামবাসীরা একটা খেলার মাঠকে ইটভাটা করার জন্য তাঁর স্বামীকে দিয়েছিলেন। তার বিনিময়ে তাঁর স্বামী গ্রামবাসীদের রাস্তা তৈরি করে দেবেন বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর স্বামী বা তিনি নিজে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হননি। তার ফলেই বিপত্তি হয়েছে। তবে, বেড়া দেওয়ার কথা শুনিনি।’’

কবিতাদেবী অবশ্য এই ধরনের চুক্তির কথা অস্বীকার করেন। তবে, যাঁরা বেড়া দিয়েছেন তাঁদের কাছেও শোনা গিয়েছে প্রধানের কথার প্রতিধ্বনী। গ্রামবাসীরা জানান, এই এলাকা থেকে নির্বাচিত পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য দীপক ঘোষই পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁদের দাবি, শুধু রাস্তার জন্য ইট চাওয়া হয়েছিল। টাকা চাওয়া হয়নি। ইট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কবিতাদেবীর স্বামী দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তা মানা হচ্ছে না। এরই প্রতিবাদে বেড়া দেওয়া হয়েছে রাস্তার। একই কথা শোনা গিয়েছে দীপকবাবুর মুখেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE