Advertisement
E-Paper

গড়ে ওঠেনি কোনও ব্যবস্থা, গ্রামীণ হাওড়া ঢাকছে বর্জ্যে

প্রচারই সার। গ্রামাঞ্চলে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা চলছেই। ফলে, দূষণের বিরাম নেই। হাওড়ার বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর, উলুবেড়িয়া— সর্বত্রই রাস্তার ধারে জমে থাকছে বর্জ্য। কাক-কুকুর তা নিয়ে টানাটানি করছে। দেখার কেউ নেই।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:১৬

প্রচারই সার। গ্রামাঞ্চলে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা চলছেই। ফলে, দূষণের বিরাম নেই।

হাওড়ার বাগনান, আমতা, শ্যামপুর, জগৎবল্লভপুর, উদয়নারায়ণপুর, উলুবেড়িয়া— সর্বত্রই রাস্তার ধারে জমে থাকছে বর্জ্য। কাক-কুকুর তা নিয়ে টানাটানি করছে। দেখার কেউ নেই।

শহর পরিষ্কার রাখতে পুরসভাগুলি রাস্তার ধারে ভ্যাট বসায়। বর্জ্য ফেলার জন্য ডাম্পিং গ্রাউন্ড বানায়। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে সে সবের বালাই নেই। অথচ, রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে বিশাল বিশাল হোর্ডিং দেওয়া হচ্ছে।

বাগনানের আমতা মোড়ে মুম্বই রোডের ধারে গেলেই দেখা যাবে স্তূপাকার হয়ে রয়েছে সব বিয়েবাড়ির বর্জ্য। মহিষরেখায় দামোদরের বাঁধের উপরেও জঞ্জালের পাহাড়। সেই জঞ্জাল নদীতেও পড়ছেও। দূষিত হচ্ছে জল। বাগনান, কুলগাছিয়া, আমতা, মুন্সিরহাট প্রভৃতি এলাকাতেও জমে রয়েছে জঞ্জাল। এমনকী এই সব আবর্জনা ফেলে পুকুর বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।

বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় এ রাজ্যে চলছে গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ প্রকল্প। এই প্রকল্পে পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য বাছাই করা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে গত পাঁচ বছরে দেওয়া হয়েছে গড়ে এক কোটি টাকা করে। হাওড়া জেলার ১৫৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৯৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তা পেয়েছে। মূলত বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তাপ্রাপ্ত ওই সব পঞ্চায়েত এলাকাতেই আবর্জনা না-ফেলার আবেদন জানিয়ে হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি।

গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, ডাম্পিং গ্রাউন্ড করার জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই টাকাতে ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি ডাম্পিং গ্রাউন্ড হবে। ২০১৭ সাল থেকে বাকি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হবে। তখন ওই সব গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতেও ডাম্পিং গ্রাউন্ড গড়ার জন্য টাকা দেওয়া হবে।

যত দিন না ডাম্পিং গ্রাউন্ড গড়ে উঠছে, ততদিন কী হবে? জঞ্জাল ফেলার জায়গা হিসেবে কি রাস্তাকেই বেছে নেওয়া হবে? ওই সব এলাকার গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, তাঁরা যত্রতত্র জঞ্জাল ফেলার পক্ষপাতী নন। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জঞ্জাল ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা করা হয়নি। তার ফলেই সমস্যা হচ্ছে। যে যেখানে পারছেন বাড়ির জঞ্জাল ফেলছেন। হাওড়ার ডোমজুড় থেকে শুরু করে কোলাঘাট পর্যন্ত গড়ে উঠেছে প্রচুর কারখানা। সেইসব কারখানার বর্জ্য কোথায় ফেলা হবে তারও বিশেষ কোনও জায়গা নেই। ফলে, মুম্বই রোডের ধারেই দেখা যায় স্তুপাকারে বর্জ্য। মাঝে মাঝে সেগুলি জ্বালিয়ে দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সেই সময় চারদিক কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তৈরি হয় দমবন্ধ পরিস্থিতি।

গ্রামীণ এলাকার মফস্সল শহরগুলিতে এখন দ্রুত বাড়ছে জনবসতি। বাগনান, আমতা, শ্যামপুরের মতো শহরে বাড়ছে আবাসন। অথচ, ওই সব বহুতলে যাঁরা থাকেন, তাঁরা জঞ্জাল কোথায় ফেলবেন তা নিয়ে বিভ্রান্ত হন। ফ্ল্যাটের চারপাশে যে ফাঁকা জায়গা থাকে সেখানেই যে যাঁর মতো করে জঞ্জাল ফেলেন। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের বচসা প্রতিদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

গ্রামীণ হাওড়া ঢাকছে বর্জ্যে।

waste management
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy