অস্থায়ী: দ্বারকেশ্বরে জল বাড়ায় চরের বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর। মঙ্গলবার আরামবাগে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় প্রতি বছরই দ্বারকেশ্বর ভাসায় আরামবাগের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত বছর বাঁধ ভেঙে বিধ্বস্ত হয়েছিল আরামবাগ শহর-সহ মহকুমার একটা বড় অংশ। রবিবার রাত থেকে বাঁকুড়ায় টানা বৃষ্টির খবরে তাই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল।
সোমবার রাত ১২ টা নাগাদ দ্বারকেশ্বরের জল ফুলে উঠতেই পুরসভার এবং কয়েকটি পঞ্চায়েত মাইকে ঘোষণা শুরু করে। বাঁধের কাছে বসবাসকারী মানুষদের সতর্ক করা হয়। গভীর রাতেই পুরপ্রধান স্বপন নন্দীর নেতৃত্বে ২ নম্বর ওয়ার্ডের সতীতলার প্রায় ১৫০ পরিবারকে বাঁধের উপরে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়। পঞ্চায়েত এলাকার মানুষদের সরানোর আগে ভোর ৪টে নাগাদ জল কমতে শুরু করে।
মহকুমা সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আতঙ্কের কারণ বাঁকুড়ার পরিস্থিতি। বাঁকুড়ার বৃষ্টির জল পুরোটাই বয়ে যায় আরামবাগ শহরের গা ঘেঁষে দ্বারকেশ্বর দিয়ে। তারপর তা গিয়ে প়ড়ে দক্ষিণে রূপনারায়ণে। আরামবাগ মহকুমা সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়ম পাল বলেন, “বাঁকুড়া ক্যাচমেন্ট বেসিন থেকে প্রথম দফায় ৫২ হাজার কিউসেক জল বয়ে গিয়েছে দ্বারকেশ্বর দিয়ে। মূল চাপটা ছিল ভোর ৪টে নাগাদই। দ্রুত সে জল বয়ে গিয়েছে রূপনারায়ণে। তাই মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ ২৯ হাজার কিউসেকেরও কম জল বইছে দ্বারকেশ্বরে, যা বিপদসীমা থেকে প্রায় আড়াই মিটার নীচে।”
প্রিয়মের আশ্বাস, “এখনই কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই। তবে ফের নিম্নচাপ হলে অসুবিধা হতে পারে।” সেচ দফতরের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী এ বার দ্বারকেশ্বরের খাত প্রায় জল শূন্য ছিল। একই অবস্থা রূপনারায়ণেরও। তাই বাঁকুড়ায় প্রবল বর্ষণের জল দ্রুত নেমে গিয়েছে। কিন্তু এর পরের বৃষ্টিতে ভরা নদে প্লাবনের আশঙ্কা থাকছেই। তাই সার্বিক নজর রাখছে প্রশাসন।
প্রায় প্রতি বার শুধু দ্বারকেশ্বরের প্লাবনেই বিধ্বস্ত হয় আরামবাগ শহর-সহ গোঘাটের ২টি ব্লক, খানাকুল ১ এবং আরামবাগ ব্লকের বেশ কিছু পঞ্চায়েত এলাকা। মহকুমার বাকি অংশ দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরীর আওতায়। সেচ দফতরের আশঙ্কা ছিল বাঁকুড়ার জল সোমবার রাত ১১টার পর আরামবাগের উপর দিয়ে বয়ে যাবে। সেই মতো সতর্কও করা হয় পুরসভা এবং সংশ্লিষ্ট ব্লকগুলিকে।
রাত ১০টা থেকেই দ্বারকেশ্বরের জল ফুলতে শুরু করে।গোঘাটের ভাদুর, কুমুরশা ও বালি পঞ্চায়েত এলাকার নদী সংলগ্ন মণ্ডলগাঁথি, বিরামপুর, বেলি, শ্যামবাটী, আরামবাগের পুরসভা এলাকা-সহ ব্লকের মোবারকপুর, রায়পুর, সালেপুর, মানিকপাট, বসন্তবাটী, ভাবাপুর, শেখপুর, রাংতাখালি, বেড়াবেড়ে, ডহরকুণ্ডু এবং খানাকুলের কিশোরপুর, ঘোষপুর, ঠাকুরানিচক প্রভৃতি গ্রামকে সতর্ক করা হয়।
আরামবাগ পুরসভার সতীতলা সংলগ্ন নদী বাঁধের ভিতর বসবাস করা প্রায় দেড়শো পরিবার-সহ সালেপুর ২ পঞ্চায়েত এলাকায় দ্বারকেশ্বর নদী বাঁধের ভিতরে বসবাস করা বেড়াবেড়ে এবং ডহরকুণ্ডু গ্রামের মোট ৮৯টি পরিবারকে সরাতে হতে পারে আশঙ্কা করে স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা নদী বাঁধেই রাত কাটান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy