পুলিশ-প্রশাসন থেকে বার বার সচেতন করা হয়েছে। অথচ তার পরেও হেলমেট ছাড়া বাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা কমেনি। রবিবার রাতে হাওড়ার ধূলাগড়-মুন্সিরহাট রোডের ফটিকগাছিতে তেমনই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী-সহ দুই ছাত্রের। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম সেখ মাসুদ (১৭) ও আবু আইয়ুব হোসেন (১৭। দুজনেরই বাড়ি জগতবল্লভপুর থানার ঘনশ্যামবাটী গ্রামে। সেখ মাসুদ এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় সেখ মাসুদ বন্ধু আবু হোসেনকে নিয়ে বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে সিদ্ধেশ্বরে মেলা দেখতে যাবে বলে বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোয়। মেলা দেখে ফেরার সময় রাত ১০টা নাগাদ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছে ধাক্কা মারে। দুজনেই রাস্তায় ছিটকে পড়ে। স্থানীয় লোকজন তাদের জগৎবল্লভপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে দু’জনের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না।
বেপরোয়া: হেলমেট বিধি শিকেয় তুলে বাইকে সওয়ার তিন স্কুলপড়ুয়া। সোমবার উলুবেড়িয়ায় মুম্বই রোডে ছবি তুলেছেন সুব্রত জানা
মাসুদের কাকা জানান, বাড়িতে মোটরবাইক থাকলেও সামনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকায় মাসুদকে তা দেওয়া হতো না। এ নিয়ে বাড়িতে অশান্তিও করত সে। রবিবার সন্ধ্যায় সুযোগ পেয়ে বাড়িতে কাউকে না জানিয়েই সে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে যায়। পরে তাঁরা জানতে পারেন বন্ধুকে নিয়ে মেলায় গিয়েছে। নিষেধ শুনলে এমন দিন দেখতে হতো না। বাসিন্দাদের অভিযোগ জগতবল্লভপুর এলাকায় হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানোয় পুলিশের নজরদারি নেই বললেই চলে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, পুলিশের সামনে দিয়েই বিনা হেলমেটে মোটর সাইকেলে যাতায়াত করছে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে সাধারণ যুবকেরা। পুলিশের নজরদারি কড়া হলে হয়তো এমন দুর্ঘটনা ঘটত না। হাওড়া জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক কর্তা জানান, হেলমেটহীন মোটর সাইকেল ধরতে নিয়মিত অভিযান চলে। পাশাপাশি পুলিশের তরফে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে মানুষকেও জীবনের মূল্য বুঝতে হবে।