Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দূষণ নিয়ে মিল বন্ধের নির্দেশে শঙ্কায় শ্রমিকেরা

কাজোরিয়া শিল্পগোষ্ঠী পরিচালিত গোন্দলপাড়া মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ নতুন হয়। গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি অতীতে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে।

তালাবন্ধ: গোন্দলপাড়া জুটমিল। ছবি: তাপস ঘোষ।

তালাবন্ধ: গোন্দলপাড়া জুটমিল। ছবি: তাপস ঘোষ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চন্দননগর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৭ ০৯:১০
Share: Save:

আগেও অভিযোগ উঠেছিল গঙ্গা দূষণের। জরিমানা দিয়ে সে যাত্রায় রেহাই পান চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিল কর্তৃপক্ষ। এ বার পুজোর মুখে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অবিলম্বে মিলের উৎপাদন বন্ধ রাখতে বলেছে।

দূষণের অভিযোগে হুগলির ডানকুনি কোল ইন্ডিয়ার উৎপাদন বন্ধ। শ্রীরামপুরের সাংসদ তথা কোল ইন্ডিয়ার সংসদীয় কমিটির একদা চেয়্যারম্যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি নিয়ে সংস্থার চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি। কারণ, এর সঙ্গে শ্রমিকদের রুটিরুজির প্রশ্ন জড়িত।’’ পাশাপাশি এবার গোন্দলপাড়া মিলের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠায় সিদুঁরে মেঘ দেখছেন শ্রমিকেরা। পুজোর মুখে অন্তত পাঁচ হাজার শ্রমিক ঘোর অনিশ্চয়তায়।

কাজোরিয়া শিল্পগোষ্ঠী পরিচালিত গোন্দলপাড়া মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দূষণের অভিযোগ নতুন হয়। গঙ্গাকে দূষণমুক্ত রাখতে কলকাতা হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি অতীতে গুরুতর অভিযোগ এনেছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে। শুধু শিল্পের প্রয়োজনে ব্যবহৃত বর্জ্যই নয়, শ্রমিক মহল্লার মলমূত্রে নিকাশি নালাও সরাসরি গঙ্গায় নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই কমিটিতে ছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বর্তামান চেয়ারম্যান নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র। কমিটির প্রাক্তন সদস্য পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সঞ্জয় কাজোরিয়া পরিচালিত ওই মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিক মহল্লার বর্জ্য, মলমূল সরাসরি নিকাশি নালা দিয়ে গঙ্গায় নামিয়ে দিত। সেই সময় আমরা লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করি।’’

সূত্রের খবর, দূষণ রোধে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘদিন ধরেই মিল কর্তৃপক্ষকে সর্তক করে আসছে। বলা হয়েছে, মিলের বর্জ্য কোনওভাবেই গঙ্গায় ফেলা যাবে না। সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে দূষণ রোধে প্রযুক্তিগতভাবে আধুনিক পরিকল্পনাও জরুরি। এ সব নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠলেও সে সবকে কখনওই মিল কর্তৃপক্ষের তরফে মান্যতা দেওয়া হয়নি। ধারাবাহিকভাবে দূষণ ছড়ানোর জন্য রাজ্যে ইতিমধ্যেই ১৮ টি সংস্থাকে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। যার মধ্যে রয়েছে গোন্দলপাড়া জুটমিলও।

এই বিষয়ে মঙ্গলবার বার বার সংস্থার কর্তা সঞ্জয় কাজোরিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মিলের ম্যানেজার তন্ময় বেরা বলেন, ‘‘হ্যাঁ দূষণ সংক্রান্ত চিঠি আমরা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে কী পদক্ষেপ করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে।’’

মিলের এক কর্মীর কথায়, ‘‘একে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকেরা এখানে পাওনাগণ্ডা নিয়মমাফিক পায় না। তার উপর মিল বন্ধ হয়ে গেলে পেট চলবে কী করে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE