Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দিল্লি রোডের কাজ থমকে, নীরব প্রশাসন

গত জুন মাসের গোড়ায় তারকেশ্বরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘দিল্লি রোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে কেন এত সময় লাগছে? কাজ কবে শেষ হবে?’

জটিল: এখন কাজ বন্ধ (উপরে) যখন দিল্লি রোড সম্প্রসারণের কাজ।

জটিল: এখন কাজ বন্ধ (উপরে) যখন দিল্লি রোড সম্প্রসারণের কাজ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
ডানকুনি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৪০
Share: Save:

জটিল: এখন কাজ বন্ধ (উপরে) যখন দিল্লি রোড সম্প্রসারণের কাজ।

দু’মাস পার। তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে বন্ধ থাকা দিল্লি রোড সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত শুরুর আশ্বাস দিয়েছিলেন পূর্ত সচিব ইন্দিবর পাণ্ডে। কিন্তু সেই কাজ এখনও শুরুই হল না। কবে হবে, তেমন কোনও দিশাও দেখাতে পারছে না পূর্ত দফতর। ফলে, ওই রাস্তায় যাতায়াতে দুর্ভোগ কবে মিটবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

গত জুন মাসের গোড়ায় তারকেশ্বরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি উষ্মা প্রকাশ করে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘দিল্লি রোড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সম্প্রসারণের কাজে কেন এত সময় লাগছে? কাজ কবে শেষ হবে?’’ উত্তরে পূর্ত সচিব জানিয়েছিলেন, নির্মাণকারী সংস্থা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে সমস্যার কারণে। অন্য সংস্থার সঙ্গে কথা বলে কাজ দ্রুত শুরুর প্রক্রিয়া চলছে।

পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস অবশ্য শনিবার বলেন, ‘‘আমি আপাতত কলকাতায় নেই। ওই রাস্তার কাজ এখন ঠিক কোনও পর্যায়ে আছে তা আমাকে খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। ’’

তবে পরিস্থিতি জটিল বলেই মনে করছেন হুগলি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। কেন?

প্রশাসন সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত দিল্লি রোডকে নতুন কলেবরে সাজার উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের হাইওয়ে বিভাগের আওতায় থাকা ওই রাস্তার শুধু পরিসর বাড়ানোই নয়, মানও উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল রাজ্য। দু’টি ভিন্ন ভাগে ভাগ করে সেই কাজ শুরু হয়। ভদ্রেশ্বর থেকে মগরা পর্যন্ত কাজ যথাযথ ভাবে হলেও জটিলতা দেখা দেয় ডানকুনি থেকে ভদ্রেশ্বর পর্যন্ত অংশের কাজে। ওই অংশের কাজের দায়িত্ব ছিল মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি নির্মাণকারী সংস্থার হাতে। কিন্তু ওই সংস্থা কাজ চলাকালীন দেউলিয়া হয়ে যায়। আর জটিলতা দেখা দিয়েছে এ নিয়েই।

জেলা প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, অনেক সময় অসুবিধায় পড়ে নির্মাণকারী সংস্থা কাজ শেষ না করে চলে গেলে বিকল্প হিসেবে অন্য সংস্থাকে দিয়ে সেই বকেয়া কাজ করিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে নতুন সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়ার আগে দেখতে হবে আগের সংস্থা কত শতাংশ কাজ করেছে। বকেয়া কাজের পরিমানই বা কত? সেই হিসাব জরুরি। তার উপর যেহেতু সময় অনেকটা পেরিয়ে গিয়েছে তাই নতুন নির্মাণকারী সংস্থা প্রকল্প খরচ বেড়ে যাওয়ার কথা বলবে স্বাভাবিক ভাবেই। এখন নতুন সংস্থা এসে ঠিক কত টাকায় রফা করে বকেয়া কাজের ক্ষেত্রে সম্মতি দেয় সব কিছুই তার উপরে নির্ভর করছে। এর পাশাপাশি দেখতে হবে, দেউলিয়া হয়ে যাওয়া সংস্থাটির ক্ষেত্রে আদালত কী
অবস্থান নেয়।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘যেহেতু জটিলতা অনেক, তাই সব দিক থেকেই চেষ্টা হচ্ছে তার প্রতিটি অংশ কাটিয়ে ওঠার। এর সঙ্গে যেহেতু আদালতের অংশ জুড়ে রয়েছে তাই কিছুটা সময় লাগছে।’’

এখন দেখার, দিল্লি রোডের কাজ ফের শুরু হতে ঠিক কতটা সময় লাগে। ততদিন যে মানুষের দুর্ভোগ মিটবে না তা স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Road PWD Works
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE