Advertisement
১১ মে ২০২৪

বাইক দুর্ঘটনায় বাউড়িয়ার যুবকের মৃত্যু

বর্ধমান থেকে মোটরবাইকে উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর গিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত আসার ‘চ্যালেঞ্জ’ নিয়ে বেরিয়ে গত নভেম্বরে প্রাণ গিয়েছিল বর্ধমান শহরের যুবক বিক্রম হাজরা ও তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর।

স্মৃতি: বাইক নিয়ে তুষার পাল। ছবি: ফেসবুক

স্মৃতি: বাইক নিয়ে তুষার পাল। ছবি: ফেসবুক

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
Share: Save:

গতির নেশায় মোটর বাইকে চেপে কখনও চলে যেতেন দিঘা, মন্দারমণি, কখনও বা সিকিম। সেই গতির নেশাই প্রাণ কাড়ল হাওড়ার বাউড়িয়ার যুবক তুষার পাল (২২)-এর। হেলমেট আর নি-গার্ডেও শেষ রক্ষা হল না। রবিবার রাতে ঝাড়গ্রামের বালিভাসায় জাতীয় সড়কে দ্রুতগতিতে বাইক চালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়েন তুষার। মানিকপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি।

বর্ধমান থেকে মোটরবাইকে উত্তরপ্রদেশের ফতেপুর গিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত আসার ‘চ্যালেঞ্জ’ নিয়ে বেরিয়ে গত নভেম্বরে প্রাণ গিয়েছিল বর্ধমান শহরের যুবক বিক্রম হাজরা ও তাঁর বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর। একই ভাবে গতির নেশা আরও এক যুবকের প্রাণ নেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ-সরঞ্জাম ছাড়া শুধু শখে এই অ্যাডভেঞ্চার বাইক রাইডে রাশ টানবে কে!

তুষারের বাড়ি বাউড়িয়ার ভট্টাচার্য পাড়ায়। কলকাতার বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র তুষারের প্রিয় সঙ্গী ছিল তাঁর বাইক। দ্রুত গতিতে সেই বাইক চালিয়ে ঘুরতেন। হাওড়া ও কলকাতার সমবয়সী যুবকদের বাইক অ্যাডভেঞ্চার গ্রুপের সদস্যও ছিলেন তুষার। তবে প্রশিক্ষণ ছিল না। রবিবার সকালে মা কল্যাণী পালকে তুষার বলে গিয়েছিলেন, বাইক-দলের জনা আটেক বন্ধুর সঙ্গে জামশেদপুরের ডিমনা লেকে যাচ্ছেন। যাওয়ার সময় সকাল এগারোটা নাগাদ ঝাড়গ্রামের জঙ্গলরাস্তায় দাঁড়িয়ে ফেসবুকে লাইভ পোস্টও দিয়েছিলেন।

কয়েক ঘন্টা পরে টাটা থেকে ফেরার পথে ঝাড়গ্রামেই ঘটে দুর্ঘটনা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ৬টি রেসিং বাইকে আটজন যুবক ছিলেন। তুষার নিজের বাইকে একাই ছিলেন। বালিভাসায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তুষারের সঙ্গী বেসরকারি সংস্থার কর্মী রঞ্জন ও সাহিলদের দাবি, পাম্প থেকে পেট্রল ভরার পরে তাঁরা সবাই বেরোচ্ছিলেন। আগে ছিলেন তুষার। উল্টোদিকের লরির আলো চোখে পড়ায় রাস্তার বিভাজন ঠাহর করতে পারেননি তুষার। বাইক দ্রুত গতিতে থাকায় ছিটকে পড়েন ওই যুবক।

সোমবার সকালে ঝাড়গ্রামে আসেন তুষারের জামাইবাবু বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর্মী শুভজিৎ পাড়ুই, উলুবেড়িয়ায় ভোট থাকা সত্ত্বেও বাউড়িয়া থেকে তুষারের পড়শি ও পাড়ার বন্ধুরা এসে পৌঁছন। কাঁদতে কাঁদতে শুভজিৎ বলেন, “কী যে হয়ে গেল ভাবতে পারছি না।” তুষারের প্রতিবেশী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলছিলেন, “বাইক-ট্যুর ছিল ওর প্রথম প্রেম। রাতে কেন যে ফিরতে গেল।” তুষারের বাবা দিলীপ পাল বছর চারেক মারা গিয়েছেন। তাঁর রবারের সরঞ্জাম তৈরির ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসা এখন সামলান তুষারের মামা শ্যামল পাল। ছেলের মৃত্যুসংবাদ জানানো হয়নি কল্যাণীদেবীকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youth Bike Accident Accident bauria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE