Advertisement
E-Paper

আর্থিক অনিয়ম, শুরুর ছ’মাসেই বন্ধ হাসপাতাল

তৃণমূল পরিচালিত চন্দ্রকোনার রামজীবনপুর পুরসভার উদ্যোগে চালু পিপিপি মডেলের হাসপাতালে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, ওই হাসপাতালের তরফে নার্সিং, প্যাথোলজি, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট-সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং তারপরে শংসাপত্র দেওয়া এমনকী প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু টাকা তোলা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:০৪

তৃণমূল পরিচালিত চন্দ্রকোনার রামজীবনপুর পুরসভার উদ্যোগে চালু পিপিপি মডেলের হাসপাতালে বিস্তর অনিয়মের অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, ওই হাসপাতালের তরফে নার্সিং, প্যাথোলজি, হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট-সহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণ এবং তারপরে শংসাপত্র দেওয়া এমনকী প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু টাকা তোলা হয়েছে।

এই অভিযোগে বুধবার শ’খানেক প্রতারিত ছেলেমেয়ে পুরপ্রধান শিবরাম দাসকে ঘেরাও করেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রশিক্ষণের নামে ১৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। প্রতারিতদের দাবি, অবিলম্বে টাকা ফেরত কিংবা চাকরি দিতে হবে। পুরপ্রধান সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিলে ঘেরাও ওঠে।

পুরপ্রধানের দাবি, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। যে সংস্থার সঙ্গে মউ চুক্তি হয়েছিল, তারাই টাকা তুলেছিল। ওই সংস্থার কর্তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা চিকিৎসক আনা-সহ যাবতীয় দায়িত্ব ওই সংস্থার হাতে দিয়েছিলাম। তাই এ জানতেই পারিনি।” এ দিন বহু চেষ্টা করেও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পুরপ্রধানের আশ্বাস, টাকা ফেরতের বিষয়টি তিনি দেখবেন। চন্দ্রকোনা ১ ব্লকের বিডিও সুরজিৎ ভড় জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, পিপিপি মডেলে চালু হাসপাতালে দুই তরফেরই সমান দায়িত্ব থাকে। পুরসভাও ওই মডেলের অন্যতম অংশীদার। স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রতারিতদের সাফ কথা, পুরসভা নিজের দায়িত্ব এড়াতে পারে না। তাঁদের অভিযোগ, পুর-এলাকার মধ্যেই অনৈতিক কাজ হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ইন্ধন না-থাকলে এমনটা অসম্ভব। আরও অভিযোগ, হাসপাতালে তৃণমূলের কাউন্সিলরের ছেলে, যুব তৃণমূল নেতার স্ত্রী-সহ শাসক দলের ঘনিষ্ঠ লোকজনই কাজ করতেন। জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেও জানা গিয়েছে, পিপিপি মডেলের হাসপাতালে এমন প্রশিক্ষণের কোনও অনুমতিই নেই।

আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ সামনে আসায় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। দলের স্থানীয় নেতা তথা ওই পুরসভার কাউন্সিলর গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা তদন্ত চেয়ে চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। দ্রুত দলের পক্ষ থেকে আন্দোলনে নামা হবে।”

গত পুর-নির্বাচনেই চন্দ্রকোনার রামজীবনপুর পুরসভা পুর-শহরে একটি হাসপাতাল চালুর প্রতিশ্রুতি দেয়। সম্প্রতি পুরসভার নিজস্ব জমিতে অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন তহবিল প্রকল্পের (বিআরজিএফ) মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয়ে মাস ছ’য়েক আগে ‘জীবনজ্যোতি’ নামে ওই হাসপাতাল চালু হয়। কলকাতার একটি সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষরিত হয়। মাস খানেক ধরেই হাসপাতালটি অনিয়মিত ভাবে চলছিল। দিন কয়েক আগে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। অথচ, চালুর পরই ৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা নিয়ে কার্ড করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, পরিবারের পাঁচ জন পিছু ৬০ টাকার বিনিময়ে এক মাস, ২০০ টাকায় তিন মাস চিকিৎসার সুযোগ মিলবে। বাসিন্দাদের দাবি, এ রকম অন্তত ৭-৮ হাজার জনের কাছ থেকে বিপুল টাকা তোলা হয়েছিল।

এলাকাবাসী ভেবেছিলেন এ বার আর তাঁদের চিকিৎসার জন্য ছোটাছুটি বন্ধ হবে। কিন্তু, শুরুর ছ’মাসের হাসপাতাল মুখ থুবড়ে পড়ায় হতাশ তাঁরা।

ghatal financial irregularities southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy