শ্রমিকদের মজুরির টাকা ঠিকমতো মিলছে না। তাই চালু হওয়ার মাস দেড়েকের মধ্যে হাওড়া জেলায় গরিব মানুষদের জন্য ‘নির্মল ভারত অভিযান’ প্রকল্পে সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিতে বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় তৈরির কাজ হোঁচট খাচ্ছে।
কাজে গতি আনার জন্য ওই প্রকল্পের সঙ্গে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। কিন্তু জেলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বরাদ্দ ঠিকমতো না মেলাতেই হোঁচট খাচ্ছে শৌচালয় তৈরির কাজ। কেননা, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী, শৌচালয় তৈরির ক্ষেত্রে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হবে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের তহবিল থেকে। প্রতিটি শৌচালয় তৈরিতে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হবে মোট ১৩৫২ টাকা। এই টাকার অভাবেই যাবতীয় সমস্যা বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
টাকা বকেয়া পড়ে যাওয়ার ভয়েই বেশির ভাগ পঞ্চায়েতই যে শৌচালয় তৈরিতে বিশেষ উদ্যোগী হচ্ছে না, তা মেনে নিয়েছেন ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রশাসনের কর্তারা। ওই প্রকল্পের জেলা অধিকর্তা কোহেলী দাস বলেন, “তহবিল কম রয়েছে। ফলে, বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি রাজ্য প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। টাকা পেলে কাজে গতি আসবে।” ‘নির্মল ভারত অভিযান’ প্রকল্প রূপায়ণে জেলার এক কর্তা জানান, তাঁদের তহবিলে কোনও ঘাটতি নেই। নিয়মের কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-’১২ অর্থবর্ষে কেন্দ্র সরকার ‘নির্মল ভারত অভিযান’ প্রকল্পে গতি আনতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গে সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচিকে জুড়ে দিয়ে বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্যসম্মত শৌচালয় তৈরির পরিকল্পনা করে। ঠিক হয়, প্রতিটি শৌচালায় তৈরির জন্য সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান কর্মসূচি প্রকল্প থেকে দেওয়া হবে ৪৬০০ টাকা। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প থেকে দেওয়া হবে ৫৪০০ টাকা। উপভোক্তার থেকে নেওয়া হবে ৯০০ টাকা। মোট ১০ হাজার ৯০০ টাকায় তৈরি হবে এক-একটি শৌচালয়। তবে, উপভোক্তা শ্রম দিলে তাঁকে ৯০০ টাকা দিতে হবে না।
মাস দেড়েক আগে উদয়নারায়ণপুর ব্লক থেকে বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু হয় হাওড়া জেলায়। প্রথম পর্যায়ে বিভিন্ন ব্লকে ১০ হাজার বাড়িতে এবং সব মিলিয়ে গোটা জেলায় ২ লক্ষ বাড়িতে শৌচালয় তৈরির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে জেলা প্রশাসন। কিন্তু টাকার অভাবে ১৫৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে অধিকাংশেই এখন হোঁচট খাচ্ছে সেই প্রকল্প।
পঞ্চায়েতগুলিও যে এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হচ্ছে না তা মেনে নিয়েছেন উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের মৃত্যুঞ্জয় সামন্ত। তাঁর দাবি, চলতি বছরে বহু ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের ১০০ দিনের কাজের মজুরি বকেয়া রয়েছে। ফের শৌচালয় তৈরির ক্ষেত্রেও মজুরি বকেয়া পড়ে গেলে সমস্যা হবে। সেই কারণেই অনেক পঞ্চায়েত ওই কাজে সাহস করছে না। তিনি বলেন, “কিছু পঞ্চায়েত অন্য খাতের টাকা শৌচালয় তৈরিতে ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু সময়মতো ওই খাতের টাকা না এলে সমস্যা বাড়বে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy