Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
কর্মীদের সামনেই ভস্মীভূত কারখানা

কালী পুজোর আগেই বিপাকে ৪০০ শ্রমিক

একটি শিফটের কাজ শেষে অন্য শিফটে কাজ শুরুর তোড়জোড় চলছিল। তখনই গুদামঘরের কম্পিউটারের কাছে আগুনের শিখা। টের পেতেই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন কর্মীরা। রবিবার তাঁদের চোখের সামনেই পুড়ে কার্যত ছাই হয়ে গেল ডানকুনির গোবরার প্লাস্টিক কারখানা। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে কারখানার শুধু প্রভূত ক্ষতিই হল না, কালীপুজোর মুখে বিপদে পড়লেন প্রায় চারশো শ্রমিক। আগুন যত ছড়াচ্ছিল, তত অসহায় হয়ে পড়তে থাকেন শ্রমিকেরা।

সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র নয়। ডানকুনি। ছবি: ইমন নিধারিয়া

সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্র নয়। ডানকুনি। ছবি: ইমন নিধারিয়া

প্রকাশ পাল
ডানকুনি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৮
Share: Save:

একটি শিফটের কাজ শেষে অন্য শিফটে কাজ শুরুর তোড়জোড় চলছিল। তখনই গুদামঘরের কম্পিউটারের কাছে আগুনের শিখা। টের পেতেই অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন কর্মীরা। রবিবার তাঁদের চোখের সামনেই পুড়ে কার্যত ছাই হয়ে গেল ডানকুনির গোবরার প্লাস্টিক কারখানা।

এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে কারখানার শুধু প্রভূত ক্ষতিই হল না, কালীপুজোর মুখে বিপদে পড়লেন প্রায় চারশো শ্রমিক। আগুন যত ছড়াচ্ছিল, তত অসহায় হয়ে পড়তে থাকেন শ্রমিকেরা। অনেকেই মুখে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেখা যায়। রাত পর্যন্ত দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যায়। শর্ট-সার্কিট থেকেই এই অগগ্নিকাণ্ড বলে দমকলের অনুমান।

এ দিন বিকেলে ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি বলেন, “আগুন কেন লাগল, তা তদন্ত করা হবে। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কেন কাজ করেনি, তা-ও দেখা হবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে, ভিতরে প্রচুর দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন পুরো নেভানো যায়নি। পুরো নেভাতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।” কারখানার মালিকপক্ষ অবশ্য কোনও কথা বলতে চাননি। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে দমকলের হুগলির ডিভিশনাল অফিসার তারকনাথ প্রধানও বলেন, “এখানে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তা কাজ করেনি।”


জ্বলছে প্লাস্টিকের কারখানা। ডানকুনিতে দীপঙ্কর দের তোলা ছবি।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোবরায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ‘কল্পনা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে প্লাস্টিকের প্যাকেট তৈরির ওই কারখানাটি তৈরি হয় বছর দেড়েক আগে। এ দিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ আগুন দেখা যায়। কারখানায় প্রচুর পরিমাণে ডিজেল ও রং মজুত ছিল। সেগুলির সংস্পর্শে এসে আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকে। আগুন নেভাতে ব্যর্থ হন কর্মীরা। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র কাজ করেনি। কর্মীরা ডানকুনি থানায় খবর দেন। খবর যায় দমকলেও। প্রথমে শ্রীরামপুর থেকে দমকল আসে। ততক্ষণে অবশ্য আগুনের লেলিহান শিখা কার্যত পুরো কারখানাকেই গ্রাস করে ফেলে। পরে উত্তরপাড়া, কলকাতা, ব্যারাকপুর, কামারহাটি প্রভৃতি জায়গা থেকে দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন আসে। একযোগে কাজ করেও বিকেল পর্যন্ত তারা আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি। ডানকুনি থানার ওসি পার্থসারথি পাল, সার্কেল ইনস্পেক্টর অসিতবরণ কুইল্যা-সহ জেলার পদস্থ পুলিশ অফিসাররা ঘটনাস্থলে আসেন।

দিলীপ সিংহ নামে কারখানার এক কর্মী এ দিন বলেন, “রাতের ডিউটি করে বাড়ি যাওয়ার তোড়জোড় করছিলাম। তখনই আগুন দেখা যায়। আমরা নেভানোর চেষ্টাও করি। কিন্তু পারা যায়নি। হু হু করে আগুন ছড়িয়ে পড়ল।” দমকলের অফিসারেরা মনে করছেন, কারখানার গুদাম ঘরের কম্পিউটারের যন্ত্রাংশে শর্ট সার্কিট থেকেই এই আগুন লাগে। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ, সোমবার বেলা গড়িয়ে যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE