Advertisement
E-Paper

গোন্দলপাড়া চটকলের কর্মী খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে তিন বছর আগে নিজের আবাসনের কাছে খুন হয়েছিলেন চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকলের সহকারী শ্রম অফিসার ফিরোজ আখতার। সেই খুনের দায়ে ওই চটকলেরই প্রাক্তন শ্রমিক রাজেশ চৌধুরীকে শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল হুগলির চন্দননগর আদালত। বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্ত আরও দুই শ্রমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০২:০১

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে তিন বছর আগে নিজের আবাসনের কাছে খুন হয়েছিলেন চন্দননগরের গোন্দলপাড়া চটকলের সহকারী শ্রম অফিসার ফিরোজ আখতার। সেই খুনের দায়ে ওই চটকলেরই প্রাক্তন শ্রমিক রাজেশ চৌধুরীকে শুক্রবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল হুগলির চন্দননগর আদালত। বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্ত আরও দুই শ্রমিক।

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে বিভিন্ন চটকলে সাম্প্রতিক যত হিংসার ঘটনা ঘটছে, তাতে এই রায়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রশাসনের কর্তারা। গত জুনেই রড-পাথর দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছিল ভদ্রেশ্বরের নর্থব্রুক চটকলের সিইও হরিকিষান মহেশ্বরীকে। তার পরে আক্রান্ত হন ভিক্টোরিয়া জুটমিলের এক কর্তাও। এ দিন হরিকিষানের দাদা প্রেমকিষান মহেশ্বরী বলেন, “আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে যে নৃশংসতার সঙ্গে আমার ভাইকে মারা হয়েছিল, গোন্দলপাড়াতেও তেমনই ঘটেছিল বলে শুনছি।”

গোন্দলপাড়ার ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১১ সালের ১৪ জুলাই। সে সময়ে ওই চটকলে দাবি-দাওয়া নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছিলেন ফিরোজ। ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ চটকলে যাওয়ার সময়ে গেটের সামনে প্রথমে তাঁকে গুলি করা হয়। তিনি লুটিয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে কেটে দেওয়া হয় গলার নলি। এলাকার লোকজন চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেন। সে দিনই পুলিশ মিলের ফিনিশিং বিভাগের কর্মী রাজেশ ও মেশিন বিভাগের কর্মী রঞ্জিত সাউকে ধরে। দিন কয়েক পরে অলোক যাদব নামে মেশিন বিভাগের আরও এক শ্রমিককে ধরা হয়। উদ্ধার হয় খুনে ব্যবহৃত ছুরিটিও।

পুলিশ দাবি করেছিল, খুনের পরে ওই তিন জন স্থানীয় একটি হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া সারে। তার পরে রক্তমাখা ছুরিটি টেবিলের নীচে ফেলে চলে আসে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন এবং ৩৪ ধারায় দলবদ্ধ ভাবে হামলার মামলা রুজু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার চন্দননগর ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মাসুদ হুসেনের এজলাসে তিন জনকে হাজির করানো হয়েছিল। সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে রঞ্জিত ও অলোককে খালাস দেন বিচারক। রাজেশকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া ছাড়াও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে রাজেশের দাদা অশোক জানান, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন। আদালতে হাজির ছিলেন ফিরোজের পরিবারের লোকজন এবং চটকলের কর্তারা। রায়ের পরে ফিরোজের ভাগ্নে গহর আলি বলেন, “আসামির যে সাজা হয়েছে, তাতে আমরা খুশি।” গোন্দলপাড়া জুটমিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় কাজোরিয়া বলেন, “দৃষ্টান্তমূলক সাজা খুবই জরুরি ছিল। শিল্পক্ষেত্রে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে।” দীর্ঘদিন ধরে চটকল আন্দোলনে জড়িত সিপিএম নেতা শ্যামল বাগও বলেন, “দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন কখনওই হিংসাশ্রয়ী হওয়া উচিত নয়।”

gondolpara agitation workers life term punishment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy