Advertisement
২১ মে ২০২৪

চিঠিতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে অভিনব উপায়ে তোলাবাজি, ধৃত

চিঠির মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, চুঁচুড়ার বুড়োশিবতলার বাসিন্দা প্রসেনজিত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যুবক বেশ কিছুদিন ধরে চিঠির মাধ্যমে তোলাবাজি করছিল চুঁচুড়া, চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর এলাকায়।

ধৃত প্রসেনজিত। ছবি: তাপস ঘোষ।

ধৃত প্রসেনজিত। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:২০
Share: Save:

চিঠির মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তোলাবাজির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, চুঁচুড়ার বুড়োশিবতলার বাসিন্দা প্রসেনজিত বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক যুবক বেশ কিছুদিন ধরে চিঠির মাধ্যমে তোলাবাজি করছিল চুঁচুড়া, চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বর এলাকায়। এলাকার সম্পন্ন বেশ কিছু মানুষকে বিভিন্ন এলাকার ডাকঘরের মাধ্যমে সে চিঠি পাঠাত। তাতে একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার নম্বর দেওয়া থাকত। সেই মোবাইল নম্বরে টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হত। চিঠিতে লেখা থাকত যে, ওই মোবাইল নম্বরের সঙ্গে কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ধৃত ব্যক্তির অ্যাকাউন্টের যোগ রয়েছে। টাকা পাঠালে তা মোবাইল ব্যাঙ্কিং এর মাধ্যমে তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে যেত। এই ভাবে কারও কাছ থেকে ২০ হাজার, কারও কাছ থেকে ৫০ হাজার আবার কারও কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা দাবি করত সে। টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হত।

বেশ কয়েক জনকে এই ভাবে চিঠি পাঠানোর পরে প্রাণনাশের হুমকিতে আতঙ্কিত কয়েকজন ওই মোবাইল নম্বরে দাবিমত রিচার্জও করে দেন। গত বছরের ২ ডিসেম্বর এমনই একটি চিঠি পান মানকুন্ডুর বাসিন্দা ব্যাঙ্ককর্মী বাসুদেব বিশ্বাস। কিন্তু প্রাণনাশের হুমকিতে তিনি চিঠির ব্যাপারে কাউকে কিছু জানাননি। গতকাল রাতে বাসুদেববাবু স্থানীয় বাসিন্দাদের চিঠি দেখিয়ে সব জানালে তাঁরা থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। বুধবার সকালে বাসুদেববাবু ভদ্রেশ্বর থানায় ওই চিঠি দিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নামে। চিঠিতে দেওয়া মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তল্লাশি চালায় পুলিশ।

ভদ্রেশ্বর থানার ওসি অনুপধূতি মজুমদারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল চুঁচুড়া, চন্দননগর এবং ভদ্রেশ্বরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে চন্দননগরের বোড়াইচন্ডীতলায় দিদির বাড়ি থেকে প্রসেনজিতকে বুধবার বিকেলে গ্রেফতার করে। তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, প্রসেনজিত মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে ভয় দেখিয়ে তোলাবাজি করত। ধৃতের কাছ থেকে মোবাইল এবং বেশ কয়েকটি সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যে সব বাড়িতে সে চিঠি পাঠাতো, আগে সেইসব বাড়ির পরিবারের সদস্যদের গতিবিধি সম্পর্কে সবকিছু জেনে নিত সে। চিঠিতে তা লিখে দেওয়া হত। জেরায় ধৃত প্রসেনজিত তার এই অভিনব পদ্ধতিতে তোলাবাজির কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। যে সব ব্যাঙ্কে প্রসেনজিতের অ্যাকাউন্ট রয়েছে সেখানে কত টাকা জমা পড়েছে তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

হুগলির পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের অভিযোগ আসছিল। কিন্তু কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় তদন্ত করা যাচ্ছিল না। বুধবার সকালে বাসুদেববাবু লিখিত অভিযোগ করায় পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা দেখা হচ্ছে।”

বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘বেশ কয়েকদিন আগে আমি চিঠিটা পেয়েছিলাম। কিন্তু প্রাণনাশের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়েই ব্যাপারটা কাউকে জানাইনি। এখন শুনছি এই রকম চিঠি অনেকেই পেয়েছে। এ ধরনের তোলাবাজি আগে কখনও শুনিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal bhadreswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE