Advertisement
E-Paper

দু’মাস পরে আজ খুলছে ভিক্টোরিয়া

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে প্রায় দু’মাস বন্ধ ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে উৎপাদন চালুর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মিলল বছরের শেষে। মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বর পুরসভায় আয়োজিত এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মিলল রফাসূত্র। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার বছরের শেষ দিন থেকেই চটকলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালু হবে। আর আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে উৎপাদন চালু হয়ে যাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৪৪

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে প্রায় দু’মাস বন্ধ ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে উৎপাদন চালুর ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত মিলল বছরের শেষে।

মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বর পুরসভায় আয়োজিত এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মিলল রফাসূত্র। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার বছরের শেষ দিন থেকেই চটকলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালু হবে। আর আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে পুরোদমে উৎপাদন চালু হয়ে যাবে। দু’মাস চটকল বন্ধ থাকায় শ্রমিকেরা যে হেতু সমস্যায় পড়েছেন, সেই কারণে সব শ্রমিককে আগামী ৮ জানুয়ারি দু’হাজার টাকা করে অগ্রিম হিসেবে দেবেন মিল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ১০ মাসে শ্রমিকদের বেতন থেকে ২০০ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে। কোনও শ্রমিক যাতে কর্মহীন না হন, সে ব্যাপারে দৃষ্টি দেওয়ার আশ্বাস দেন মিল কর্তৃপক্ষ। তবে, শ্রমিকদের অন্য বিভাগে স্থানান্তর করা হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রেও তাঁরা যে যে কাজে দক্ষ, সেই ধরনের কাজ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলেও তাঁরা জানান।

ওই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “ওই চটকলে আর কোনও সমস্যা নেই। কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোদমে উৎপাদন চালু হয়ে যাবে। চটকলে শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কোনও বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না।”

গত ৭ নভেম্বর রাতে চটকল কর্তৃপক্ষ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বেশ কিছু শ্রমিককে এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। এতে কাজ হারানোর আশঙ্কা করেন শ্রমিকেরা। পরের দিন সেই আশঙ্কায় শ্রমিকদের একাংশ চটকলের ম্যানেজারদের আবাসনে চড়াও হন। সেখানে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালানো হয়। প্রোডাকশন ম্যানেজার জ্ঞানচন্দ্র উপাধ্যায়কে ঘর থেকে টেনে বের করে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি চালিয়ে মারমুখী শ্রমিকদের হঠিয়ে দেয়। ঘটনার জেরে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। মিল কর্তৃপক্ষের তরফে ৩৩ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করা হয়। চটকলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তিও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকে একাধিক বৈঠক হলেও অবশ্য বরফ গলেনি।

মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বর পুরসভায় ওই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে প্রশাসনের তরফে তপনবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চন্দননগরের উপ-শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত, মালিকপক্ষের তরফে সিইও রাজেনকুমার সিংহ-সহ চটকলের অন্য পদস্থ কর্তারা। ছিলেন সেখানকার ১৬টি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, ঘণ্টা তিনেকের বৈঠকে স্থির হয়, ৬ জানুয়ারি থেকে উৎপাদন চালু হলেও এফআইআর-এ নাম থাকা শ্রমিকেরা আপাতত বাইরে থাকবেন। আগামী ২৮ জানুয়ারি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তাঁদের কাজে পুনর্বহাল করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। ওই শ্রমিকদের বিষয়ে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে মালিকপক্ষকে অনুরোধ করা হয় প্রশাসনের তরফে। শ্রমিক নেতারাও একই অনুরোধ করেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এসইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি নেতা দিলীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “চটকল খোলায় শ্রমিকদের মুখে নিশ্চয়ই হাসি ফুটবে। তবে, চটশিল্পের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রীকে জানিয়েছি। কেন্দ্র সরকার দৃষ্টি দিলে তবেই এই শিল্প আবার চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারবে।” ভদ্রেশ্বরের বন্ধ শ্যামনগর নর্থ চটকলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার ব্যাপারে তাঁরা আজ, বুধবার রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের দ্বারস্থ হবেন বলেও দিলীপবাবু জানান।

তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত বলেন, “ভিক্টোরিয়ায় উৎপাদন চালুর খবর আনন্দদায়ক। চার হাজার শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের লোক এতে সমস্যামুক্ত হলেন। আলোচনার মাধ্যমে শ্যামনগর নর্থ চটকল খোলার ব্যাপারেও আমরা আশাবাদী।”

south bengal bhadreswar jute mill victoria jute mill hooghly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy