Advertisement
E-Paper

দল ‘চায় না’, তবু তৃণমূলের নেতৃত্বে রেল-অবরোধ

দলের নির্দেশ, সড়ক বা রেলপথ অবরোধ করা যাবে না। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে হাওড়ায় রেল অবরোধকারীদের সমর্থন করতে এগিয়ে এলেন খোদ মেয়র থেকে মেয়র পারিষদ-সহ তাবড় তৃণমূল নেতারা। শুধু সমর্থনই নয়, মেয়র সাফ জানিয়ে দিলেন, বিক্ষোভকারীদের দাবি মানা না হলে হাওড়া স্টেশন স্তব্ধ করে দিতেও পিছপা হবেন না তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২০
তৃণমূলের রেল অবরোধ।

তৃণমূলের রেল অবরোধ।

দলের নির্দেশ, সড়ক বা রেলপথ অবরোধ করা যাবে না। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্বের সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে হাওড়ায় রেল অবরোধকারীদের সমর্থন করতে এগিয়ে এলেন খোদ মেয়র থেকে মেয়র পারিষদ-সহ তাবড় তৃণমূল নেতারা। শুধু সমর্থনই নয়, মেয়র সাফ জানিয়ে দিলেন, বিক্ষোভকারীদের দাবি মানা না হলে হাওড়া স্টেশন স্তব্ধ করে দিতেও পিছপা হবেন না তাঁরা।

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় জল জমার প্রতিবাদে ও রেলের রানি ঝিল পরিষ্কারের দাবিতে বুধবার বেলা ১০টা নাগাদ পূর্ব রেলের বামনগাছি কারশেডের কাছে রেল অবরোধ করেন একদল বিক্ষোভকারী। তাতে নেতৃত্ব দেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি তথা হাওড়ার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) গৌতম চৌধুরী এবং ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রজত সরকার। ৫০-৬০ জন বিক্ষোভকারী রেললাইনের মাঝখানে তৃণমূলের পতাকা পুঁতে বিক্ষোভ দেখান।

অবরোধ-বিক্ষোভের জেরে মেন ও কর্ড লাইনে সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন স্টেশনে আটকে যায় লোকাল ও দূরপাল্লার একাধিক ট্রেন। পুজোর ছুটির পরে প্রথম কাজের দিনে চূড়ান্ত নাস্তানাবুদ হন নিত্যযাত্রী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা। হাওড়া স্টেশনে পৌঁছতে অগত্যা রেললাইন ধরে হাঁটা শুরু করেন অনেকেই। ঘণ্টা দেড়েক পরে রেল পুলিশের পদস্থ কর্তারা এসে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে অবরোধ তুললেও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লেগে যায়।

বিক্ষোভকারীরা জানান, উত্তর হাওড়ার নিকাশি ব্যবস্থার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল রানি ঝিল। পূর্ব রেলের কারশেডের পাশে রেলের সম্পত্তি এই ঝিলটিতেই উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার নর্দমার জল এসে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, রেল কারশেডের সমস্ত আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলায় ঝিলটির নাব্যতা কমে গিয়েছে। তার উপরে দিনের পর দিন ঝিলটি সংস্কার না করায় তার জলধারণ ক্ষমতাও কমে গিয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে যাচ্ছে উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে।

কিন্তু সড়ক বা রেলপথ অবরোধ করে মানুষের অসুবিধা না করার দলীয় নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন অবরোধ?

বিক্ষোভকারীদের তরফে মেয়র পারিষদ গৌতমবাবু বলেন, “রেলকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা রানি ঝিল সংস্কার করেনি। বৃষ্টি কবে থেমে গিয়েছে, অথচ সালকিয়া ধর্মতলায় গজানন বস্তির পাঁচ হাজার মানুষ এখনও জমা জলের মধ্যেই বাস করছেন। এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তাই এই অবরোধ করেছি।”

মেয়র পারিষদের এই বক্তব্যকে আরও ছাপিয়ে গিয়েছেন খোদ হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী। অবরোধের সমর্থনে তিনি বলেন, “রেলের সঙ্গে এ নিয়ে অনেক বৈঠক করেছি। কিন্তু রেল আমাদের কথায় গুরুত্বই দেয়নি। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এই অবরোধ যুক্তিযুক্ত। এতেও কাজ না হলে প্রয়োজনে হাওড়া স্টেশন স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।”

সাধারণ মানুষকে প্রবল সমস্যায় ফেলে এই অবরোধ কর্মসূচি কি দল মেনে নিয়েছে?

এ দিন হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন,“রাস্তা বা রেল অবরোধ অবশ্যই দল সমর্থন করে না। তবে এটাও ঠিক, দীর্ঘদিন ধরে রানি ঝিল সংস্কার ও কালভার্ট পরিষ্কারের পুর-আবেদন অগ্রাহ্য করছে রেল। তবে আজকের আন্দোলনে প্রথম দিকে কয়েক জন দলীয় নেতা থাকলেও পরে তাঁরা সবাই চলে যান। সাধারণ মানুষই এই অবরোধ করেন।”

—নিজস্ব চিত্র।

rail blockade rani jil drainage system tmc southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy