জমিজমা নিয়ে ছেলে-বউমার সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই গোলমাল চলছিল বৃদ্ধের। বাড়ি ছেড়েছিল ছেলে-বউমা। মামলা গড়িয়েছে আদালতে। সেই বিবাদের জেরেই এ বার দলবল নিয়ে এসে পুত্রবধূকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল বৃদ্ধের বিরুদ্ধে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঘরের জানলার গ্রিল থেকে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় আরামবাগের সিংহপাড়ার বাসিন্দা শিপ্রা কোনার (৩০) নামে ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর বাবার দায়ের করা ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় শিপ্রার শ্বশুর শেখরচন্দ্র কোনার এবং বড় ননদের ছেলে রঞ্জন ঘোষকে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের মধ্যে শিপ্রার বড় ননদ রূপা ঘোষ এবং নন্দাই পিরু ঘোষও রয়েছেন। তাঁরা পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ধৃত শেখরবাবু তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশের কাছে তাঁর দাবি, বেয়াইয়ের প্ররোচনাতেই ছেলে-বউমার সঙ্গে তাঁর গোলমাল। সেই কারণেই শিপ্রা আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে বাঁকুড়ার বেতাল গ্রামের বাসিন্দা তারকনাথ সামন্তের মেয়ে শিপ্রার সঙ্গে গোঘাটের সন্তা গ্রামের বাসিন্দা শেখরবাবুর একমাত্র ছেলে উজ্জ্বলের বিয়ে হয়। ২০০৭ সাল নাগাদ শেখরবাবু তাঁর বিবাহিত মেয়েদের জানিয়েই উজ্জ্বলের নামে নিজের সমস্ত জমি লিখে দেন। বছর তিনেক হল উজ্জ্বল স্ত্রীকে নিয়ে আরামবাগের সিংহপাড়ায় একটি ভাড়াবাড়িতে বসবাস শুরু করেন। প্রাইভেট টিউশন ছাড়াও একটি নার্সিংহোমে কাজ করেন উজ্জ্বল। শেখরবাবু চাইতেন, ছেলে-বউমা তাঁর কাছে গ্রামের বাড়িতেই ফিরে যাক। কিন্তু উজ্জ্বলরা তা চাননি। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মনোমালিন্য হয়। সম্প্রতি শেখরবাবু জানতে পারেন, ছেলে সব জমি বিক্রি করে দিতে চাইছে। তিনি জীবিত থাকাকালীন ছেলে যাতে তা না পারে, সে জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন শেখরবাবু। এর জেরে ছেলে-বউমার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের আরও অবনতি হয়।
শনিবার সকালে উজ্জ্বল কাজে বেরিয়ে যান। তাঁর ফেরার আগেই গ্রাম থেকে দলবল নিয়ে এসে শেখরবাবু শিপ্রাকে খুন করেন বলে থানায় অভিযোগ জানান তারকনাথবাবু। শেখরবাবু তাঁর বিরুদ্ধে সংসারে অশান্তির প্ররোচনা দেওয়ার যে অভিযোগ তুলেছেন, তা অস্বীকার করেছেন তারকনাথবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy