Advertisement
E-Paper

বরফ-প্রতিমা থেকে পুরনো কলকাতা হাজির ঝোড়হাটে

সরস্বতী পুজোর দিন সাঁকরাইলের ঝোড়হাট পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর ও কামরাঙ্গু এলাকা এ সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তৈরি। অন্তত এমনটাই দাবি এই এলাকার সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তারা। কাটোয়ায় যেমন কার্তিক পুজো, চন্দননগরে যেমন জগদ্ধাত্রী, ঠিক তেমনই হাওড়ার ঝোড়হাটের সরস্বতী পুজো। ওই দুই পুজোর তুলনায় অনেক ছোট এলাকা নিয়ে হলেও আবেগে ও উত্তেজনার মাপকাঠিতে প্রায় এক।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:২০
সাঁকরাইলের একটি মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।

সাঁকরাইলের একটি মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকের কলকাতা শহরকে কী রকম দেখতে ছিল?

কী রহস্য রয়েছে সমুদ্রের নীচে?

মাটির বদলে প্রতিমা যদি বরফের হয়, কী রকম দেখতে হবে?

সরস্বতী পুজোর দিন সাঁকরাইলের ঝোড়হাট পঞ্চায়েতের বাসুদেবপুর ও কামরাঙ্গু এলাকা এ সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে তৈরি। অন্তত এমনটাই দাবি এই এলাকার সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তারা।

কাটোয়ায় যেমন কার্তিক পুজো, চন্দননগরে যেমন জগদ্ধাত্রী, ঠিক তেমনই হাওড়ার ঝোড়হাটের সরস্বতী পুজো। ওই দুই পুজোর তুলনায় অনেক ছোট এলাকা নিয়ে হলেও আবেগে ও উত্তেজনার মাপকাঠিতে প্রায় এক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আশির দশকের শেষ দিক থেকেই এই এলাকায় জাঁকজমক করে সরস্বতী পুজো শুরু হয়। কয়েক বছর আগে ঝোড়হাট পঞ্চায়েত থেকে বাণীবন্দনায় পুরস্কার চালু করার পর থেকে সেই লড়াইয়ে ঝাঁঝ বেড়েছে। আয়োজকরা কেউ এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ।

ঝোড়হাট পঞ্চায়েতে কমবেশি ১৫টি বড় ও মাঝারি সরস্বতী পুজো হয়। মোটামুটি ৫-৬টি পুজো কমিটির মধ্যে পুরস্কার ঘোরাফেরা করে। নিয়মিত পুরস্কার-প্রাপকদের মধ্যে অন্যতম গোল্ডেন স্টার ক্লাব তাদের বাণীবন্দনায় তুলে এনেছে এক টুকরো বইয়ের দেশ। রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণ, মাইকেল মধূসূদন থেকে শুরু করে দান্তে, শেক্সপিয়ারকার বই নেই সেখানে? প্লাইউডের কাঠামোয় তৈরি সারি সারি সেই সব নকল বইয়ের কাঠামো ছাড়াও থাকবে কয়েকটি আসল বই। থাকছে বাহারি আলোর খেলা। উদ্যোক্তাদের অন্যতম উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্তমানে আমরা বই ইন্টারনেটে বেশি পড়ি। কিন্তু হাতে স্পর্শ না করলে কোনও মজাই নেই। এই বিষয়টি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি।’’

এ বার রোড ক্যাম্পাস ক্লাব ফুটিয়ে তুলেছে পুরনো কলকাতার খণ্ডচিত্র। ঘোড়ায় টানা গাড়ি, পালকি, পুরনো বাড়ি, দোকান, সেই সময়ের সিনেমার পোস্টার সব থাকছে পুজো মণ্ডপে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে দেবাশিস মাইতির দাবি, এ বার জায়গাগত সমস্যার জন্য সামান্য অসুবিধায় পড়লেও শেষ পর্যন্ত তাঁরাই বাজিমাত করবেন।

এলাকার আরও একটি বড় পুজো উদ্যোক্তা ‘রক’ এ বার ফুটিয়ে তুলছে সমুদ্রের তলদেশ। তালপাতা, নারকেল পাতা, থার্মোকল দিয়ে তৈরি এই মণ্ডপের ভিতরে ঢুকলে চমকে যেতে হবে। মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী থেকে ডুবুরি সব রয়েছে মণ্ডপে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে স্বরাজ রায় জানান, প্রায় ১৮ বছরের পুরনো এই পুজো মাঝে কিছু সমস্যায় পড়লেও গত কয়েক বছর ধরে আবার তারা স্বমহিমায়। পাশের কামরাঙ্গু নব মিলন সঙ্ঘও এ বার তাদের মণ্ডপে সমুদ্রের তলদেশ ফুটিয়ে তুলছে। সঙ্ঘের সদস্য গোপাল দাস বলেন, ‘‘তিন বছর আগে অবধি সাবেকি ঘরানায় পুজো হত। কিন্ত আশপাশে এতগুলি থিমের পুজো শুরু হওয়ার পর আমরাও থিম পুজো শুরু করেছি।” ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের পুজো এ বার ৩০ বছরে পড়ল। এ বারের বাণী বন্দনায় তাদের থিম ‘বিশ্ব উষ্ণায়ন’। উদ্যোক্তাদের দাবি, এ বার তিন দিন তিনটি বরফের প্রতিমা থাকবে। বরফ প্রতিমা ঘিরে ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এ ছাড়াও দর্শকদের নজর কাড়বে বন্ধুমহল, গ্যাংস্টারের মতো বেশ কয়েকটি ক্লাবের পুজো।

সর্বত্রই প্রস্তুতি প্রায় সারা।

saraswati puja jhorhat sankrail abhishek chattopadhyay southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy