Advertisement
E-Paper

ভোল বদলে চাকরি নিলেন অরূপের ভাই

তিনি বলেছিলেন, প্রত্যেক অভিযুক্ত ধরা না পড়লে রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরিতে যোগ দেবেন না। তাঁর পরিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সিবিআই তদন্তের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু নিজের বলা কথা ভেঙে শেষমেশ সোমবার তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেন। আবার বললেন, সিআইডি তদন্তের উপরে তাঁর পূর্ণ আস্থাও রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৪০

তিনি বলেছিলেন, প্রত্যেক অভিযুক্ত ধরা না পড়লে রাজ্য সরকারের দেওয়া চাকরিতে যোগ দেবেন না। তাঁর পরিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সিবিআই তদন্তের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কিন্তু নিজের বলা কথা ভেঙে শেষমেশ সোমবার তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দিলেন। আবার বললেন, সিআইডি তদন্তের উপরে তাঁর পূর্ণ আস্থাও রয়েছে।

তিনি সালকিয়ার নিহত প্রতিবাদী যুবক অরূপ ভাণ্ডারীর ভাই অমর ভাণ্ডারী, যাঁর হাতে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ‘দাদার মৃত্যুর জন্য দায়ী অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি না হলে চাকরি নেব না’, এ কথা বললেও তিনিই সোমবার বিধাননগরে রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরে ‘প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট কাম ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ পদে যোগ দিলেন। কিন্তু নিজের কথার অন্যথা কেন করলেন এবং আচমকা রাজ্য প্রশাসনের তদন্তের উপরে আস্থা হারিয়ে সিবিআইয়ের কাছেই বা কেন গেলেন, সে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অমর এ দিন যে তত্ত্ব খাড়া করতে চেয়েছেন, তা সম্পূর্ণ পরস্পরবিরোধী।

এ দিন সকাল দশটা নাগাদ বিধাননগরে চাকরিতে যোগ দিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাড়ি ফেরেন অমর। এর পরেই তাঁর মুখোমুখি হয়ে সিবিআই তদন্তের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি স্পষ্টই বলেন, “সিআইডি তদন্তে একটা হতাশা এসেছিল। সেই কারণেই আদালতে সিবিআই তদন্তের আবেদন করা হয়েছে।” তা হলে কি সিআইডি তদন্তে কোথাও ঘাটতি হচ্ছে বলেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন? ‘‘না আস্থা কমেনি।” বলেই দায় সারছেন অমর। একই সঙ্গে তিনি সিবিআই তদন্তের আবেদনের দায় তাঁর বাবার উপর চাপিয়ে বললেন, “আমি সিবিআই তদন্তে আপত্তি করেছিলাম। কখনওই ওটা করতে চাইনি। সিবিআই-এর দাবিটা বাবা করেছেন।” যদিও এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অমরের বাবা প্রতাপবাবু কোনও উত্তর দেননি।

এর পাশাপাশি চাকরিতে যোগ দেওয়ার পিছনে সংসার চালানোর জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তার যুক্তিকেই দাঁড় করিয়েছেন ওই যুবক। তাঁর দাবি, অরূপের হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে গেলে চাকরির প্রয়োজন। কেননা টাকা না থাকলে খালি পেটে ভাল করে লড়াই করা যায় না।

তবে অমর প্রথমে সিআইডি-র তদন্তের প্রতি হতাশার কথা বললেও পরক্ষণেই তাঁর কথায় অন্য সুর। তিনি বললেন, “সিআইডিকে আরও সময় দেওয়া প্রয়োজন। ওঁরা ঠিকই তদন্ত করছেন। এটা নয় যে ২৪ কি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সবাইকে ধরে ফেলবেন।” যদিও গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঘটনার তদন্তভার সিআইডি নেওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। বরং ৫ ফেব্রুয়ারি হাওড়া সিটি পুলিশ বারাণসী থেকে রাজু তিওয়ারি নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল। পরে শুভম দুবে নামে আর এক জন হাওড়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে। তবে অরূপ হত্যার তদন্তে হাওড়া সিটি পুলিশের গাফিলতি ছিল বলেই অভিযোগ করেন অমর।

যদিও অমর এ দিনই আবার দাবি করেছেন “আমি আমার পুরনো অবস্থান থেকে সরিনি। এখনও বাকি চার অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবিতেই অনড় থাকছি।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বাড়িতে দয়া দেখাতে নয়, একটি দরিদ্র পরিবারকে বাঁচাতে ক্ষতিপূরণ দিতে এসেছিলেন বলে মন্তব্য করেন অমর। ওই যুবক জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর তাঁর আগেও সম্মান-আস্থা ছিল। তা এখনও আছে ভবিষ্যতেও থাকবে।

অমরের কাছে এ দিন জানতে চাওয়া হয় তাঁরা কি সিবিআই তদন্তের আবেদন তুলে নেবেন? এ উত্তরে ওই যুবক বলেন, “অপরাধীরা এখনও অধরা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু ধরা পড়বেই। তবে সিবিআই তদন্তের আবেদন তুলব না। আদালত কী রায় দেয় তার জন্য অপেক্ষা করছি।”

arup bhandari murder case amar bhandari salkia southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy