হুগলি জেলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে কড়া পদক্ষেপ করল জেলা প্রশাসন।
সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ১০০ দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণের ৫১ শতাংশের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য রয়েছে তাতে পৌঁছতে গত ১৩ জুন জেলাশাসকের দফতরে বিডিওদের সঙ্গে বৈঠকে এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে জেলাশাসকের নির্দেশিত বেশ কিছ কর্মসূচি সামনে রেখে ব্লকগুলিতে কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজে হুগলি জেলায় মহিলাদের অংশগ্রহণ মাত্র ৩৮.৯৯ শতাংশ। ব্লক ভিত্তিক ১০০ দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে হুগলির ১৮টি ব্লকের মধ্যে মাত্র শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছে। এই ব্লকে মহিলাদের অংশগ্রহণ ৫৩.৭৯ শতাংশ। এছাড়া চিনসুরা-মগরা ব্লকে ৫০.৩৫, চন্ডীতলা-২ ব্লকে ৪৯.০৩, পাণ্ডুুয়া ব্লকে ৪৫.০৮, খানাকুল-২ ব্লকে ৪১.৯৫ শতাংশ। অন্যান্য ব্লকে এই হার ৩১ থেকে ৩৯ শতাংশের মধ্যে।
তবে গত আর্থিক বছরের তুলনায় এ বার জেলায় এখনও পর্যন্ত ১০০ দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার ৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া ১০০ দিনের প্রকল্পে সেরার মাপকাঠির যে সূচকগুলি রয়েছে তার অন্যতম প্রকল্পে মহিলাদের অংশগ্রহণের হার। অন্যান্য সূচকগুলি হল গড় শ্রমদিবস সৃষ্টি, কত কম পরিবার ১৫ দিনের কম কাজ পেয়েছে এবং পঞ্চায়েত পিছু প্রকৃত খরচ। যদিও কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে মহিলাদের যে অগ্রাধিকার দিতে হবে তা সূচনা থেকেই প্রকল্পের আইনে ছিল। তা সত্ত্বেও মহিলাদের ১০০ দিনের কাজে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে বাধা কি?
জেলা প্রশাসনের অনুসন্ধানে মূলত যে কারণগুলি সামনে এসেছে তা হল, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পটি চাহিদা ভিত্তিক হলেও কার্যক্ষেত্রে পঞ্চায়েতগুলি তাদের অনুমোদিত প্রকল্পগুলি থেকে যখন কাজ শুরু করতে চায় তখনই হাতের কাছে থাকা পুরুষ শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। সংখ্যালঘু অধ্যষিত এলাকায় মহিলাদের ঘরের বাইরে কাজ করায় সংস্কারজনিত বাধা, আবার কোথাও (অধিকাংশ জায়গায়) পরিবারের মহিলা সদস্যদের নাম জবকার্ডে নথিভুক্ত না করা, নাম থাকলেও তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট না থাকা, সর্বোপরি মজুরি দিতে বিলম্ব। এই সব বাধা যাতে অবিলম্বে অতিক্রম করা যায় সেইমত ছ’দফা নির্দেশিকা বৈঠকে বিডিওদের দেওয়া হয়েছে।
এখন থেকে পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতি মাসে গ্রাম রোজগার দিবস পালন করে গ্রামের মহিলাদের ১০০ দিনের কাজে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা, শিবির করে জবকার্ডে মহিলাদের নাম নথিভুক্তিকরণ, মহিলা শ্রমিকের নামে পৃথক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট করে দেওয়া বা বাড়ির পুরুষ শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মহিলার নাম সংযুক্তিকরণ, মজুরি প্রদানে দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ করা, মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে স্বনির্ভর গোষ্টীকে কাজের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলি বিডিওদের নজরদারি করতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আশা, নির্দেশগুলি ঠিকমতো পালন করা হলে জেলায় ১০০ দিনের কাজে মহিলাদের অংশগ্রহণে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার কাছে পৌঁছনো যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy