Advertisement
E-Paper

রেলে চাকরির নামে প্রতারণার চক্রের খোঁজ মিলল বৈঁচিগ্রামে

দু’দিনের মধ্যে ফের রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চক্র চালানোর খোঁজ মিলল হুগলিতে। পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার বৈঁচিগ্রাম স্টেশনের কাছে রেলের পরিত্যক্ত ঘরে জাঁকিয়ে বসেছিল সেই প্রতারণা চক্র। চলছিল চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার ভুয়ো প্রশিক্ষণ শিবির। মোটা টাকার বিনিময়ে রেলেরই চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী সেখানে ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১৯
এই সেই পরিত্যক্ত ঘর। বৈঁচিগ্রাম স্টেশনের কাছে। ছবি: তাপস ঘোষ।

এই সেই পরিত্যক্ত ঘর। বৈঁচিগ্রাম স্টেশনের কাছে। ছবি: তাপস ঘোষ।

দু’দিনের মধ্যে ফের রেলে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চক্র চালানোর খোঁজ মিলল হুগলিতে।

পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার বৈঁচিগ্রাম স্টেশনের কাছে রেলের পরিত্যক্ত ঘরে জাঁকিয়ে বসেছিল সেই প্রতারণা চক্র। চলছিল চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার ভুয়ো প্রশিক্ষণ শিবির। মোটা টাকার বিনিময়ে রেলেরই চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মী সেখানে ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার দুপুরে ঘরটি ‘সিল’ করেছে আরপিএফ। রেল পুলিশ (জিআরপি) ও জেলা পুলিশও ঘটনার কথা জানে। কিন্তু এখনও কার্যত কোনও মামলাই রুজু করা হয়নি। ধরাও পড়েনি কেউ। তদন্তের জন্য দু’পক্ষ একে অপরের কোর্টে বল ঠেলতে শুরু করেছে।

বর্ধমান-কাণ্ডের সঙ্গে যোগ খুঁজতে গিয়ে রবিবারই চুঁচুড়ায় ভাড়াবাড়িতে রেলে চাকরির নামে একটি প্রতারণা চক্রের হদিস পায় পুলিশ। সেই বাড়িতে হানা দিয়ে স্ক্যানার, প্রিন্টার, বেশ কিছু ভোটার কার্ড, রেলের ভুয়ো স্ট্যাম্প-সহ কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। চক্রে জড়িত অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এক জনকে। কিন্তু মূল অভিযুক্তেরা এখনও অধরা। কিন্তু তার দু’দিন পরে বৈঁচিগ্রামের বিষয়টি কেন এত হালকা ভাবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসাররা, এলাকার মানুষজন সেই প্রশ্ন তুলছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগ থাকতে পারে বলেও তাঁরা মনে করছেন। তাঁদের অভিযোগ, নাকের ডগায় রেলের ঘর ব্যবহার করে বেআইনি ব্যবসা চললেও পুলিশের উদাসীনতায় দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।

ব্যান্ডেল জিআরপি-র দাবি, বিষয়টি জেলা পুলিশ দেখছে। হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার মেহমুদ আখতার বলেন, “বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” পক্ষান্তরে, পাণ্ডুয়া থানার দাবি, ওই চক্রের কথা তাদের অজানা নয়। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করেনি। তাই তদন্তও তারা করছে না। হুগলির ডিএসপি (ডি অ্যান্ড টি) দেবশ্রী সান্যাল বলেন, “আরপিএফ চার ছাত্রকে পাণ্ডুয়া থানায় নিয়ে গিয়েছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু কেউই মামলা করেননি।” মঙ্গলবার বিহারের এক যুবক বৈঁচিগ্রাম স্টেশনের আরপিএফ পোস্টে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে জানান, রেলের এক কর্মী তাঁকে চাকরির আশ্বাস দিয়ে বেশ কয়েক হাজার টাকা নিয়েছেন। সেই মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বৈচিগ্রাম স্টেশনের কাছের ঘরটিতে। কিন্তু চাকরি দেওয়া হয়নি। তাঁর অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে বেকারদের থেকে মোটা টাকা নেন ওই রেলকর্মী। বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতেই প্রশিক্ষণের নাটক করা হয়। অভিযোগ পেয়ে আরপিএফের অফিসাররা হানা দেন। ঘরে টেবিল, বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার ছিল। টেবিলে রাখা ছিল খাতা, স্ট্যাম্প, কয়েকটি কলম। দেওয়ালে টাঙানো ছিল লেখার বোর্ড। কাউকে অবশ্য সেখানে পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। পাণ্ডুয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে আরপিএফ অভিযোগ রেল পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয়। আরপিএফের এক অফিসার বলেন, “ঘরটি পরিত্যক্ত। ফলে, সেটি ব্যবহার করার কথাই নয়। কিন্তু সকলের চোখ এড়িয়ে সেখানে যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হত, তা পরিষ্কার। একাধিক লোক চক্রে জড়িত থাকতে পারে।” রেল এবং জেলা পুলিশের মধ্যে যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে, চলতি সপ্তাহেই কামারকুণ্ডুর একটি ঘটনাও তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। কামারকুণ্ডু স্টেশনের অদূরে লাইনের ধারে এক যুবকের মৃতদেহ পড়ে ছিল। রেল না জেলা পুলিশ, কে দেহ তুলবে তা নিয়ে গড়িমসিতে তিন দিন গড়িয়ে যায়। ওই রেল লাইনের পাশেই ধানখেত। দেহটি পচে দুর্গন্ধ বেরোতে শুরু করে। অতিষ্ঠ হয়ে চাষিরা দেহ উদ্ধারের দাবিতে কামারকুণ্ডু জিআরপি থানায় বিক্ষোভ দেখান। তার পরেই জিআরপি দেহ তোলে। জিআরপির বক্তব্য ছিল, যেখানে দেহ ছিল, সেটি সিঙ্গুর থানার আওতায়।

railway job cheating boinchigram southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy