Advertisement
E-Paper

হুগলিতে দুই প্রার্থীর বাড়িতে হামলা

গোলমালের শুরুটা হয়েছিল গত সপ্তাহে, ভদ্রেশ্বরে। পুরভোটের মনোনয়ন-পর্বে এ বার বাঁশবেড়িয়া এবং আরামবাগে হামলা হল দুই প্রার্থীর বাড়িতে। এক জন সিপিএমের, অন্য জন তৃণমূলের। দু’টি ক্ষেত্রেই হামলায় নাম জড়াল শাসক দলেরই কর্মী-সমর্থকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০০:৪১

গোলমালের শুরুটা হয়েছিল গত সপ্তাহে, ভদ্রেশ্বরে। পুরভোটের মনোনয়ন-পর্বে এ বার বাঁশবেড়িয়া এবং আরামবাগে হামলা হল দুই প্রার্থীর বাড়িতে। এক জন সিপিএমের, অন্য জন তৃণমূলের। দু’টি ক্ষেত্রেই হামলায় নাম জড়াল শাসক দলেরই কর্মী-সমর্থকদের।

বাঁশবেড়িয়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী হয়েছেন ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। তিনি ত্রিবেণী মনসাতলা বাসুদেবপুরের বাসিন্দা। সোমবার তিনি মনোনয়ন জমা দেন। ওই রাতেই তৃণমূলের লোকজন মোটর বাইকে চড়ে এসে তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের ছোড়া ইটে জখম হন ইন্দ্রনীলবাবুর বৃদ্ধা মা ইন্দিরাদেবী। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত ১টা নাগাদ তিনটি মোটরবাইকে ন’জন যুবক ওই এলাকায় আসে। ইন্দ্রনীলবাবুর বাড়ি চিনতে না পেরে তাঁর উল্টো দিকের একটি বাড়ি লক্ষ করে ইট ছোড়ে। ইটের আঘাতে সেই বাড়ির জামলার কাচ ভাঙে। বাড়ির বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে হামলাকারীরা ভুল বুঝতে পেরে ইন্দ্রনীলবাবুর বাড়িতে হামলা চালায়। ওই বাড়ির গ্রিলের গেটের তালা ভেঙে ঢুকে প্রত্যেক দরজায় লাথি মারে। ইন্দ্রনীলবাবুর ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টাও করে। কিন্তু ইন্দ্রনীলবাবুর মা বেরিয়ে এলে হামলাকারীরা আর সে চেষ্টা করেনি। পালানোর আগে তারা ইট ছুড়তে থাকে। ইটের ঘায়েই জখম হন ইন্দিরাদেবী। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ইন্দ্রনীলবাবুর পরিবারের লোকেরা।

তবে, হামলাকারীদের হুমকিকে উপেক্ষা করে ইন্দ্রনীলবাবু তাঁর প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালায়। সিপিএমের হয়ে পুরভোটে দাঁড়ানো যাবে না বলে ওরা হুমকি দিচ্ছিল। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে খুনেরও হুমকি দেয়।” সিপিএমের বাঁশবেড়িয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অনুপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু ইন্দ্রনীলবাবুকেই নয়, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের আমাদের মহিলা প্রার্থীকেও মনোনয়ন প্রত্যাহারের হুমকি দিচ্ছে ওরা। পুলিশ এবং দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকেও জানাব।”

অভিযোগ উড়িয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্তের দাবি, “ওই ঘটনায় তৃণমূলের যোগ নেই। ওই ওয়ার্ডে সিপিএমের যারা প্রার্থী হতে পারেনি, তাঁরাই প্রার্থীর বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে। এটা ওদের দলীয় কোন্দল।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকায় টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন সিপিএম এলাকায় মিছিল করে।

অন্যদিকে, এ দিনই মনোনয়ন জমা দেন আরামবাগ পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পরিণীতা ঘোষ। তাঁকে প্রার্থিপদ দেওয়া নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল দলের অন্দরে। এ দিন তিনি ফেরার কিছু ক্ষণের মধ্যেই কিছু লোক ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে গৌরহাটি মোড়ের কাছে পরিণীতাদেবীর বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূলেরই কর্মী-সমর্থক। সেই বিক্ষোভ চলাকালীন পরিণীতাদেবীর ঘরের মূল দরজা ভেঙে দেওয়া, ইট ছোড়া এবং মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে দলের কিছু সমর্থকের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশি আসে। বিক্ষোভকারীরা চলে যায়।

পরিণীতাদেবী বিদায়ী বোর্ডের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মারিয়া বেগম, লক্ষ্মীকান্ত পোড়েলরা পরিণীতাদেবীর বিরুদ্ধে নানা প্রকল্পে উপভোক্তাদের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। তবে, হামলা বা ভাঙচুরের কথা তাঁরা অস্বীকার করেছেন।

পরিণীতা বলেন, “পাঁচ বছর ধরে কাউন্সিলর থাকাকালীন কেউ কোনও অভিযোগ করল না। আজ, নিজের ওয়ার্ড ছেড়ে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়ানোয় কিছু মানুষের অসুবিধা হওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ তুলে বাড়িতে হামলা চালানো হল। দলকে জানিয়েছি।” পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের চেয়ারম্যান, তৃণমূল নেতা স্বপন নন্দী জানান, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

southbengal arambagh bansberia cpm tmc candidates houses on attack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy