E-Paper

এলাকা সম্পর্কে খোঁজ নিয়েই কি ‘অপারেশন’

অভিজ্ঞ পুলিশকর্তারা মনে করছেন, দুর্গাপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে শক্তিগড়ে রাজুর গাড়ি দাঁড়াবে, সে বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত ছিল দুষ্কৃতীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:০৬
এখানেই খুন হন রাজু ঝা। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস

এখানেই খুন হন রাজু ঝা। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস

ভরসন্ধ্যায় শক্তিগড়ের আমড়ায় ল্যাংচার দোকানগুলির সামনে রাস্তার ধারে কয়েকশো গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। প্রচুর মানুষের আনাগোনা। শনি-রবিবার পর্যটকদের গাড়ির চাপও বেশি থাকে। বিশিষ্ট মানুষজনও যাতায়াতের পথে দাঁড়ান এখানে। পুলিশের নজরও থাকে ল্যাংচা হাবের দিকে। এমন জনবহুল জায়গায় রাজু ঝাকে খুন করার মতো ‘ঝুঁকি’ কেন নিল আততায়ীরা, প্রশ্ন উঠেছে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার পুলিশ মহলে।

অভিজ্ঞ পুলিশকর্তারা মনে করছেন, দুর্গাপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে শক্তিগড়ে রাজুর গাড়ি দাঁড়াবে, সে বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত ছিল দুষ্কৃতীরা। সম্ভবত হামলা চালানোর আগে এলাকা সম্পর্কে ওয়াকিবহালও ছিল। দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপরে শক্তিগড়ের আমড়ায় ল্যাংচা হাবের কাছে এমন দুষ্কর্ম করার পরে পালিয়ে যাওয়ার অনেকগুলি রাস্তা রয়েছে। গোটা ঘটনার বর্ণনা শুনে মনে করা হচ্ছে, সেই সব রাস্তা দিয়ে কী ভাবে বেরোনো সম্ভব, তা-ও আততায়ীদের নখদর্পণে ছিল।

কিন্তু জেলা পুলিশ খুব দ্রুত ডিএসপি, ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের দিয়ে ‘নাকাবন্দি’ করতে শুরু করে। তখন কিছুটা বাধ্য হয়ে, অথবা ভুল করে এক্সপ্রেসওয়ে থেকে শক্তিগড় থানার দিকে গাড়ি নিয়ে চলে যায় আততায়ীরা।

এক পুলিশকর্তার দাবি, “এলাকা সম্পর্কে জানা ছিল বলেই থানার নাকের ডগায় চলে যাওয়ার পরেও ওই দুষ্কৃতীরা গাড়ি রেখে পালিয়ে যেতে পেরেছে।’’ পুলিশ সূত্রের দাবি, অন্য কোনও গাড়িতে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, শক্তিগড় স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

পুলিশ ও স্থানীয়দের দাবি, শক্তিগড় থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে পালশিট টোলপ্লাজ়া পড়ে। দুষ্কৃতীরা সাধারণত ওই টোলপ্লাজ়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। তার বদলে, শক্তিগড় থেকে কালীতলা মোড় হয়ে আটাগড় দিয়ে কালনা রোডে উঠে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবার, বড়শুল দিয়ে চরকির মতো ঘুরে পাল্লা ক্রসিংয়ে গিয়ে এক্সপ্রেসওয়ে পার পরে রসুলপুল দিয়ে কুচুট হয়ে আবার কালনা রোডে ধরার রাস্তা রয়েছে। এ ছাড়াও, দামোদরের বাঁধ ধরে জামালপুর ধরে বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তাও রয়েছে। রসুলপুর হয়ে মেমারি দিয়ে পুরনো জিটি রোড ধরে ডানকুনি পর্যন্ত যাওয়ার উপায়ও রয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ রাস্তাতেই রেলগেট থাকায়, গাড়ি নিয়ে আটকে পড়ার বড় সম্ভাবনাও থেকে যায়।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের দাবি, “বুদবুদ, গলসির মতো জায়গাতেও গাড়ি আটকে হামলা চালিয়ে খুন করার সুযোগ ছিল দুষ্কৃতীদের। কিন্তু শক্তিগড়ে রাজু ঝায়ের গাড়ি দাঁড়াবে, সেটা মাথায় রেখেই হয়তো পরিকল্পনা করেছিল আততায়ীরা। সুযোগ পেতেই মিনিট দুয়েকের মধ্যে ‘অপারেশন’ করে বেরিয়ে যেতে পেরেছে তারা।’’ আততায়ীদের হদিস পেতে নানা জায়গায় সিসিটিভি ফুটেজ, অনেকের ফোনের ‘কললিস্ট’ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশের বেশ কয়েকটি দল তদন্তে ভিন্‌ রাজ্যেও রওনা দিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Raju Jha Shaktigarh Bardhaman Crime

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy