Advertisement
০৪ মে ২০২৪
সবংয়ে ছাত্র খুন

সরিয়ে দেওয়া হল তদন্তকারী অফিসারকেই

সবংয়ে ছাত্র খুনের পরে যে তদন্তকারী অফিসার আদালতে জানিয়েছিলেন, ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি-র সংঘর্ষে এই ঘটনা, তাঁকে সরতে হল। আনন্দ মণ্ডল নামে ওই সাব ইনস্পেক্টরের বদলে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সবং থানারই আর এক এসআই বিশ্বজিত্‌ মণ্ডলকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৩৭
Share: Save:

সবংয়ে ছাত্র খুনের পরে যে তদন্তকারী অফিসার আদালতে জানিয়েছিলেন, ছাত্র পরিষদ ও টিএমসিপি-র সংঘর্ষে এই ঘটনা, তাঁকে সরতে হল।

আনন্দ মণ্ডল নামে ওই সাব ইনস্পেক্টরের বদলে তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে সবং থানারই আর এক এসআই বিশ্বজিত্‌ মণ্ডলকে। বিরোধীদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি ভারতী ঘোষ যে ভাবে নতুন করে মামলা সাজাচ্ছেন, যে ভাবে বলে দিয়েছেন যে ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এই খুন, তাতে আগের অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া ছাড়া তাঁর গতি ছিল না।

জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, তিন দিন আগেই রদবদল হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার ভারতীদেবী ব্যাখ্যা দেন, ‘‘ঘটনার সময়ে ওই দক্ষ অফিসার ছুটিতে ছিলেন। উনি ফিরতেই ওঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, আগের অফিসার আনন্দবাবুই খুনের অভিযোগে টিএমসিপি-র তিন জনকে গ্রেফতার করেছিলেন। কয়েক দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পরে গত ১২ অগস্ট মেদিনীপুর সিজেএম আদালত যখন তাঁদের জেল হাজতে পাঠায়, তখনও তিনিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২৬ অগস্ট, মামলার পরবর্তী দিনে তাঁর জায়গায় থাকবেন বিশ্বজিত্‌বাবু। এবং সে দিন ধৃতেরা জামিনে ছাড়া পেয়ে যেতে পারে বলে বিরোধীদের আশঙ্কা।

সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়ার মতে, ‘‘ঘটনা পরম্পরা থেকে দু’টো জিনিস পরিষ্কার। প্রথমত, মামলা সাজাতে গিয়ে জেলা পুলিশ খুব স্বস্তিতে নেই। দ্বিতীয়ত, পুলিশ সুপার যে ভাবে মামলা সাজাতে চাইছেন, সব অফিসার তাতে রাজি হচ্ছেন না। তাই তাঁদের সরিয়ে দিতে হচ্ছে।’’ ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ-সভাপতি মহম্মদ সইফুলের অভিযোগ, “কে বা কারা খুন করেছে, তা না খুঁজে পুলিশ সুপার অভিযুক্তদের বাঁচাতে চাইছেন। বরং ওঁরা চাইছেন, পরের দিন ধৃতেরা যেন জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়।’’

৭ অগস্ট সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়ে ছাত্র সংঘর্ষের সময়ে মাথায় চোট পেয়ে মারা যান কৃষ্ণপ্রসাদ জানা। ওই কলেজের ছাত্র সংসদ ছাত্র পরিষদের দখলে। ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দেন, ইউনিয়ন রুম বন্ধ করে মারপিট হচ্ছিল, নিজেদের মধ্যে ধস্তাধস্তিতেই মারা গিয়েছে ছেলেটি। সোমবার ভারতীদেবীও দাবি করেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে ও প্রায় স্পষ্ট যে ছাত্র পরিষদের নিজেদের অশান্তিতেই এই খুন।

সবংয়ে ছাত্র খুনে সিবিআই তদন্ত দাবি করে ইতিমধ্যে জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে হাইকোর্টে। পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানানো হয়েছে মামলায়। বিরোধীদের মতে, মামলার তদন্তকারী অফিসার বদল করে জেলা পুলিশ আসলে বার্তা দিতে চাইছে, যে ভাবে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা ঠিক ছিল না। তদন্তকারী অফিসারের কাজকর্মে তারা খুশি নয়।

তদন্তের কী গতি হবে, তা নিয়ে সংশয়ে নিহত ছাত্রের পরিবার। কৃষ্ণপ্রসাদের দাদা হরিপদ জানার আক্ষেপ, “পুলিশ মামলাটি লঘু করার চেষ্টা করছে।” টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরির দাবি, “তদন্ত ঠিক পথেই এগোচ্ছে। দোষীদের শাস্তি হবেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Investigation Sabang medinipur ananda mandal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE