ফাইল চিত্র।
‘প্রকাশযোগ্য খবর সামনে আনা সাংবাদিকের মৌলিক অধিকার। সেই সংবাদ প্রশাসনের ভাল না-ও লাগতে পারে। এক জন সাংবাদিক যে কোনও ধরনের বেআইনি কাজ নিয়ে জনগণকে সচেতন করবেন ও জনমত তৈরি করবেন, এটাই প্রত্যাশিত। বেআইনি কাজ নিয়ে ঠিক সংবাদ পরিবেশন করা হলে তা অন্যায়কারীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকেই সাহায্য করে।’
বীরভূমের এক সাংবাদিকের আগাম জামিন সংক্রান্ত পৃথক দুটি মামলায় ৩০ জুলাই এমনই পর্যবেক্ষণ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ। ওই বেঞ্চ থেকে পৃথক দু’টি মামলাতেই আগাম জামিন পেয়েছেন ওই সাংবাদিক। ওই সাংবাদিকের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় ও নাজির আহমেদ রবিবার জানান, লকডাউনে অজয় নদী থেকে অবৈধ ভাবে জেসিবি মেশিন দিয়ে বালি তোলায় স্থানীয় কয়েক জন যুক্ত এমন অভিযোগ সংক্রান্ত খবর পরিবেশন করা হয়। অভিযোগ করা হয়, নদী থেকে তোলা বালি বেআইনি ভাবে ট্রাকে চাপিয়ে পাচার করা হচ্ছে।
এই খবর পরিবেশনের জন্য স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ১ জুন ইলামবাজার থানায় ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। ব্যবসায়ীর অভিযোগ, সাংবাদিক তাঁকে ভয় দেখিয়ে তোলা আদায়ের চেষ্টা করছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন। ব্যবসায়ীকে জোর করে আটকে রাখারও অভিযোগ করা হয়। আইনজীবীরা জানান, এই মামলায় ডিভিশন
বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে, মামলার তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাংবাদিককে ফৌজদারি কার্যবিধি মেনে নোটিস পাঠানো হয়নি। যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে, তা সত্য হলে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যিনি অভিযোগ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পরের মামলা বোলপুর থানায় দায়ের হয় ২ জুন। আইনজীবীরা জানান, কয়েক জন পুলিশ কর্মী বালি বোঝাই ট্রাক থেকে ঘুষ নিচ্ছেন এমন একটি অভিযোগ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই খবর করার সময় একটি প্রিজন ভ্যানের ধাক্কায় এক পথচারী মারা যান। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়, দুর্ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতাকে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সংগঠিত করেন এবং সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেন।
আইনজীবীরা জানান, এই মামলার কেস ডায়েরি দেখে ডিভিশন বেঞ্চের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ করার জন্যই মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলাতেও সাংবাদিকের আগাম জামিন মঞ্জুর করে জেলার পুলিশ সুপারকে ডিভিশন বেঞ্চে নির্দেশ দিয়েছেন, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর এবং যে পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার তদন্ত করে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy