জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানিয়েছেন, শীঘ্রই এই ব্যবস্থা করা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলগুলিতে ভেন্ডিং মেশিন বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এর মধ্যেই।’’ প্রশাসন সূত্রে বলা হচ্ছে, এ দিন যেমন সিনেমা দেখিয়ে ছাত্রীদের সচেতন করার চেষ্টা হয়েছে, তেমনই ওই শো-তে আমন্ত্রিত ছিলেন বুনিয়াদপুরের আলো’ নামে একটি মহিলা সমবায়ের ১২ জন সদস্যও। তাঁদের তৈরি স্বল্প মূল্যের স্যানিটারি ন্যাপকিন শীঘ্রই বাজারে আসতে চলেছে।
ছাত্রীরা কিন্তু সিনেমাটি খুবই উপভোগ করেছে। শুরুতে সবটা বুঝতে না পারলেও ছবি যত এগিয়েছে, তত তারা সংক্রমণের বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে। বিকেল চারটেয় শো শেষ হয়। তার পরে তারা বালুরঘাটের ‘সত্যজিৎ’ সিনেমা হলের সামনে বেরিয়ে এসে ‘প্যাডম্যান’-এর পোস্টারের সঙ্গেই ছবি তুলতে শুরু করে।
অযোধ্যা কেডি বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা নন্দিতা দাস ছাত্রীদের সঙ্গে বসে ছবিটি দেখেন। তিনি খুশি। ছাত্রীদের হঠাৎ প্রয়োজনের কথা ভেবে স্কুলেও তাঁকে স্যানেটরি ন্যাপকিন মজুত করে রাখতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘খুবই সময় উপযোগী এই ছবি। আশা করি সিনেমাটি দেখে পড়ুয়ারা সচেতন হবে। তবে আমাদের গ্রামের স্কুলে অধিকাংশ ছাত্রীর মধ্যে স্যানেটরি প্যাড ব্যবহারের চল কম। কম মূল্যে সরকার থেকে স্কুলগুলিতে প্যাড সরবরাহ করা অত্যন্ত জরুরি।’’
আরও পড়ুন: কী জল খাব, ভেবেই অথৈ জলে গড়িয়া
কবিতীর্থ বিদ্যানিকেতনের সহ শিক্ষিকা কৃষ্ণা কর্মকার জানান, তার স্কুলের ৬০ শতাংশ ছাত্রী প্যাড ব্যবহার করে না। ছাত্রীদের পাশাপাশি প্যাডম্যানের মতো সিনেমা প্রোজেক্টর যন্ত্রের মাধ্যমে গ্রামের স্কুলে নিয়ে গিয়ে তাদের মায়েদেরও দেখানো উচিত। বালুরঘাট শহরের গার্লস হাইস্কুল কিংবা ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রীরা প্যাডম্যান দেখে খুশি। অনেক ছাত্রী জানিয়েছে, তারা স্যানিটরি ন্যাপকিন ব্যবহারে অভ্যস্ত।
কিন্তু ডাঙা অঞ্চলের রঘুনাথপুর বিএম হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুস্মিতা সমাজদার, আশুতোষ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির অনিতা মাহাতো থেকে সুমিতা বর্মনদের মতো বালুরঘাট কবিতীর্থ বিদ্যানিকেতন, চকভৃগুর নদীপাড় গার্লস হাইস্কুলের অনেক ছাত্রীর কথায়, দামী প্যাড ব্যবহার ও দোকান থেকে কেনার মতো পরিস্থিতি তাদের নেই। লজ্জা ও সঙ্কোচে তারা মুখ ফুটে প্যাডের কথা বাড়িতে বলতে পারে না। তবে প্যাডম্যান দেখে সঙ্কোচে বেড়াটা এ বার টপকাতে পারবে, আশা করছে তারা। তাদের কথায়, ‘‘হ্যাঁ, এত দিন যা পারিনি, এ বারে তা করতে পারব। কারণ করতে হবে।’’ ওই ছাত্রীরা মনে করে, আড়াই ঘণ্টার এই সিনেমা প্রত্যন্ত এলাকার বেশ কিছু ছাত্রীর কাছে তাদের ঋতুস্রাবের সময়ে অস্বস্তিকর সমস্যা তুলে ধরে সচেতনতার বার্তা দিল। এটাই বা কম কী? বাকিটা সরকার দেখুক।