E-Paper

এক বছরের কারাবাস মকুবে ১৬ বছর পার

সম্প্রতি মনিরুলের মামলায় রায় দিতে গিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাস বলেছেন, “মামলাকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।”

সব্যসাচী ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫ ০৫:৩১
কলকাতা হাই কোর্ট।

কলকাতা হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মারধরের মামলায় নিম্ন আদালতে এক বছরের কারাবাস এবং ৫০০ টাকা জরিমানা হয়েছিল মনিরুল মল্লিক নামে এক ব্যক্তির। সেই রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। শেষমেশ সেই মামলায় তাঁকে বেকসুর ঘোষণা করল কোর্ট। তবে এই এক বছরের সাজা মকুবের মামলায় কেটে গিয়েছে প্রায় ১৬ বছর! আইনজীবীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ, তিন বছরের কম কারাবাসের সাজা হলে রায় ঘোষণার পরেই উচ্চতর আদালতে আর্জি জানানোর জন্য জামিন পাওয়া যায়। কিন্তু এ কথাও সত্যি, এত বছর ধরে ‘সাজাপ্রাপ্ত’ আসামির তকমা বইতে হয়েছে ওই ব্যক্তিকে।

সম্প্রতি মনিরুলের মামলায় রায় দিতে গিয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাস বলেছেন, “মামলাকারীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।” প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকায় গোলমাল ও গুলি চালানোর ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ, মনিরুল স্থানীয় এক বাসিন্দার কাছ থেকে মাত্র ৪৫ টাকা ধার নিয়েছিলেন এবংটাকা ফেরত চাওয়ায় তিনি ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন এবং গুলি চালান। পুলিশ মনিরুলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, এবং অস্ত্র আইনে মামলা করে। ২০০৯ সালে ওই মামলার রায় ঘোষণার পরেই মনিরুল হাই কোর্টে মামলা করেন।

হাই কোর্টে মনিরুলের আইনজীবী প্রবীর মজুমদার দাবি করেন, পুলিশ খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করলেও তার কোনও প্রমাণ নিম্ন আদালতে পেশ করতে পারেনি। অভিযোগকারীর শরীরে গুলির ক্ষতের কোনও উল্লেখ করেননি তদন্তকারী অফিসার। খুনের চেষ্টার বদলে পরে চার্জশিটে মারধরের ধারা যুক্ত করে সাজা দেওয়া হয়েছিল মনিরুলকে। অভিযোগের বয়ান নিয়েও বহু প্রশ্ন আছে। রাজ্যের কৌঁসুলি অভিষেক সিংহের বক্তব্য ছিল, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে মনিরুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিক। যদিও বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায় দাসের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার সাক্ষীদের বয়ানে অসঙ্গতি আছে। পুলিশের তদন্তেও গাফিলতি ছিল। সেই গাফিলতির ব্যাখ্যাও সন্তোষজনক নয়। তাই শুধু সন্দেহের বশে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Calcutta High Court Innocent

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy